Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
উদ্যোগী কলেজ পড়ুয়ারা

আদিবাসী গ্রামে বিলি ন্যাপকিন

রামপুরহাট থানার জামকাঁদর গ্রামের ছবি এমনই। সেখানকার তরুণী, মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এগোলেন বর্ধমানের কয়েক জন কলেজ পড়ুয়া।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩২
Share: Save:

রুক্ষ পাথুরে টাঁড়ে বর্ষায় ফসল ফলান তাঁরা। না হলে বন্ধুর পথ পেরিয়ে কাজে যান পাথর খাদানে। প্রতি দিনের ঘরকন্না সামলে পরবে ধামসা-মাদলের তালেও মাতেন। আদিবাসী অধ্যুষিত সেই গ্রামে মহিলাদের কেউ কেউ ছাড়িয়েছেন কলেজের গণ্ডিও। কিন্তু স্বাস্থ্য সচেতনতা তেমন ভাবে গড়ে ওঠেনি তাঁদের মধ্যে।

রামপুরহাট থানার জামকাঁদর গ্রামের ছবি এমনই। সেখানকার তরুণী, মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এগোলেন বর্ধমানের কয়েক জন কলেজ পড়ুয়া। তাঁদের অনেকেই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ছাত্র। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দল গড়ে শুক্রবার সকালে তাঁরা পৌঁছন জামকাঁদরে। বিলি করেন কয়েকশো স্যানিটারি ন্যাপকিন।

কেন এমন উদ্যোগ? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অঙ্কিতা রায় জানান, ২০১৫- ১৬ সালে ‘ন্যাশন্যাল ফিমেল হেলথ সার্ভে’-র রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ভারতের গ্রামাঞ্চলে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে এমন মহিলার সংখ্যা ৪৮.৫ শতাংশ। শহরে তা ৭৭.৫। শহর ও গ্রাম মিলিয়ে গড়ে তা হয় ৫৭.৬ শতাংশ। সেই কারণে গ্রামের মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। সে জন্যই প্রাথমিক ভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম বেছে নেওয়া হয়। সচেতনতা শিবিরের পাশাপাশি গ্রামের মহিলাদের মধ্যে তা বিনামূল্যে বিলিও করা হয়।

এ দিন সকালে জামকাঁদর গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জড়ো হন মহিলারা। তাঁদের প্রথমে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়। মেমারি কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী সুমনা সরকার জানান, জামকাঁদরের অনেক মহিলার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ঋতুকালীন সময়ে অনেকে কাজে যেতে পারেন না। স্কুলে যেতে পারে না ছাত্রীরা। কেউ কেউ অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করেন। ব্যবহার করা হয় পুকুরের জল। এ সব কারণে হরেক স্ত্রীরোগ দেখা দিতে পারে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে সে সব সমস্যা কাটানো যেতে পারে বলে সকলকে জানানো হয়। ওই কলেজ পড়ুয়ারা জানান, বর্ধমান স্টেশনে ভবঘুরেদের খাবার ও শীতবস্ত্র দেওয়া, বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি এক দিনের জন্য বাইরে বেরিয়ে সামাজিক স্বাস্থ্য সচেতন শিবিরে সামিল হয়েছেন।

শিবিরে হাজির মহিলাদের অনেকেই বলেন, ‘‘আমাদের সুস্থতার জন্য ওঁরা বর্ধমান থেকে এসেছেন। ওঁদের কথায় স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে দিন কাটানোর পথ খুঁজে পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE