Advertisement
E-Paper

চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, সৌমিত্র খাঁ-র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

বড়জোড়া থানায় বৃহস্পতিবার রাতে ওই অভিযোগ করেন বড়জোড়ারই বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৪
সৌমিত্র খাঁ। ফাইল চিত্র।

সৌমিত্র খাঁ। ফাইল চিত্র।

তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ করলেন তাঁরই এক আত্মীয়। বড়জোড়া থানায় বৃহস্পতিবার রাতে ওই অভিযোগ করেন বড়জোড়ারই বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল। বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও শুক্রবার বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সৌমিত্র অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, সৌমিত্রর মামাতো ভাই প্রশান্ত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, ২০১৭ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তৃতীয় শ্রেণির কর্মীর চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর কাছ থেকে সৌমিত্র ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তাঁকে কিছু নকল নথিও দেখানো হয়। পরে চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে, সাংসদ তাঁকে হুমকি দেন বলে প্রশান্তর অভিযোগ।

তাঁর দাবি, শুধু তাঁর কাছেই নয়, চাকরি দেওয়ার নামে সৌমিত্র আরও অনেকের কাছ থেকে একই ভাবে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন। এত দিন পরে তিনি কেন অভিযোগ করলেন, তা জানতে চেয়ে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এর জবাব দেননি।

আরও পড়ুন: বিজেপির বিরুদ্ধে চড়া সুর মানসের

সৌমিত্র অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ দিন দিল্লি থেকেই তিনি ফোনে দাবি করেন, ‘‘আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েই বলেছিলাম, এত দিন আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। এ বার পুলিশ অভিযোগ সাজাবে। সেটাই শুরু হয়েছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছু নয়।’’ বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘তৃণমূল পুলিশকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ-র পাল্টা দাবি, ‘‘সৌমিত্রর বিরুদ্ধে আগেই আমরা মৌখিক ভাবে নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছিলাম। তাঁকে সর্তকও করা হয়। এ বার সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ হল।’’

সৌমিত্রর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের দূরত্ব মাসখানেক ধরেই বাড়ছিল। কয়েক সপ্তাহ আগে ফেসবুকে সৌমিত্র পোস্ট করেন— ‘তৈলমর্দনই দলের অস্তিত্ব রক্ষার বড় পন্থা’। তারপরেই মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন— বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুকোমলকান্তি দাস তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছেন। তাঁর অফিসের আপ্ত সহায়ককে গুম করার চেষ্টা চলছে। পরের দিন বুধবার তৃণমূল সৌমিত্রকে বহিষ্কার করে। তিনি দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন।

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দেখা করতে যান সৌমিত্র। সে দিন তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘আমার বাড়িতে পুলিশ হামলা চালাতে পারে বলে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বাড়িতে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছি।’’ যদিও সাংসদের অভিযোগ মানতে চাননি বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার।

এ দিকে, বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও অনুপম হাজরার ছবিতে মালা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাইপুরের সবুজ বাজারে হরিনাম সংকীর্তন করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ, সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু প্রমুখ। ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার সিংহের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে কিছু ধান্দাবাজ ছিল। বহিষ্কারের মাধ্যমে দলে শুদ্ধকরণ করা হল।’’

Crime Fraud Job Saumitra Khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy