শিক্ষকের মারে অসুস্থ হয়ে এক স্কুলছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল।
মঙ্গলবার সকালে সিউড়ি ১ ব্লকের আলুন্দা পঞ্চায়েতের ইটাগড়িয়া হাজি মমতাজ হাইস্কুলের ঘটনা। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এ দিনই স্কুলে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান নিগৃহীত ছাত্রের পরিবার ও পড়শিরা। বিক্ষোভ সামলাতে ঘটনাস্থলে আসতে হয় পুলিশকে। তবে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা থাকায় শিক্ষক এবং পুলিশের মধ্যস্থতায় বিক্ষোভ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। যদিও ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি ছাত্রের পরিবার।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বর্তমানে ওই স্কুলের প্রায় সাড়ে চারশো ছাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছে। শনিবারও পরীক্ষা ছিল। স্কুল থেকে বেরোনোর সময় প্রবল হৈচৈ করায় দশম শ্রেণির ছাত্র তথা ইটাগড়িয়ার বাসিন্দা আশরাফুল শেখকে স্কুলের এক সহ-শিক্ষক বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রের বাবা সালাউদ্দিন শেখ এবং মা শামসুন্নিহা বিবির দাবি, ‘‘হৈচৈয়ের ঘটনায় আদৌ যুক্ত ছিল না আমাদের ছেলে। অথচ আসল দোষীদের ছেড়ে আমাদের নিরীহ ছেলেটাকেই মারতে থাকেন ওই শিক্ষক।’’
একই দাবি অসুস্থ ছাত্রটিরও। শনিবার মার খেয়ে দুপুরেই দশম শ্রেণির ওই ছাত্রটিকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ দিন ছাড়া পেয়ে আশরাফুলের দাবি, ‘‘আমি বলেছিলাম, আমি হৈচৈ করিনি। কিন্তু স্যার শোনেননি। মারতে থাকেন। কানে, ঘাড়ে আঘাত লাগে। স্কুল থেকে ফেরার পথেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।’’ গত দু’দিন স্কুল ছুটি থাকায় এ দিনই স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান সকলে। ওই ছাত্রের অভভাবকদের কথায়, ‘‘এ দিনও আমার ছেলের টেস্ট পরীক্ষা ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে পরীক্ষা দিতে পারল না। তার কী হবে? আমরা অভিযু্ক্ত শিক্ষকের শাস্তি চাই।’’
অভিযুক্ত শিক্ষক অবশ্য এ দিন স্কুলে আসেননি। তবে, ফোনে যোগাযোগ করা হলে ওই ছাত্রকে ‘নিরীহ’ বলতে রাজি হননি তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘সে দিন টেস্ট চালকালীন চরম গোলমাল করছিল কিছু ছেলে। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে ওরা গালিগালাজ শুরু করে। পরীক্ষা শেষে যখন সিঁড়ি দিয়ে নামছে ওরা, তখনও আমাকে লক্ষ করে অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল। সেই দলে ওই ছাত্রটিও ছিল। তাই বাধ্য হয়েই গায়ে হাত তুলতে হয়েছে। তবে তা কখনই মারাত্মক নয়।’’
স্কুলে একটা গোলমাল হয়েছে বলে মেনেছেন প্রধান শিক্ষক এক্রামুল হক। তবে, তাঁর বক্তব্য, ‘‘হ্যা, একটা ঘটনা ঘটেছে। ছেলেরা দুষ্টুমি করেছিল। শিক্ষক শাসন করেছেন। সমাধানের চেষ্টা করব।’’