Advertisement
E-Paper

বৃদ্ধাবাসেও হাজির ওঝা

প্রহৃত দুই প্রৌঢ়াকে বৃদ্ধাবাসে রেখেও স্বস্তি মিলছে না। সমস্যা সেই কুসংস্কারকে ঘিরেই।বুধবার ওই বৃদ্ধাবাস লাগোয়া গ্রামবাসী সেখানে গিয়ে পুলিশের সামনেই বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রৌঢ়াদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি তুলেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ১৫:৩০

প্রহৃত দুই প্রৌঢ়াকে বৃদ্ধাবাসে রেখেও স্বস্তি মিলছে না। সমস্যা সেই কুসংস্কারকে ঘিরেই।

বুধবার ওই বৃদ্ধাবাস লাগোয়া গ্রামবাসী সেখানে গিয়ে পুলিশের সামনেই বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রৌঢ়াদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি তুলেছিলেন। বৃহস্পতিবারও পরিস্থিতি বদলায়নি। পুলিশ তুলে নেওয়ার পরে এ দিন আবার বৃদ্ধাবাসের কাছে গিয়ে এক ওঝাকে মন্ত্র আওরাতে দেখা যায়। বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁকে তাড়িয়ে দেন। পরিস্থিতি বুঝে এ বার ওই প্রৌঢ়াদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। কিন্তু আদ্রার গোঁসাইডাঙায় প্রৌঢ়াদের যেখানে বাড়ি, সেখানে কেন পুলিশ ও প্রশাসন মানুষজনের মন থেকে কুসংসংস্কার দূর করতে বোঝাতে যাচ্ছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে?

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কুসংস্কার মুক্ত করার জন্য ওই গ্রামে অবশ্যই সচেতনতার শিবির হবে। কিন্তু এখনও ওই গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ক’টা দিন যাক, তারপরে বোঝানো শুরু হবে।’’

আদ্রার গোঁসাইডাঙা গ্রামের বাসিন্দা দুই প্রৌঢ়াকে মঙ্গলবার ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বৌমা, ছেলে-সহ গ্রামের কিছু বাসিন্দার বিরুদ্ধে। তাদের দাবি ছিল, ওই দম্পতির আড়াই বছরের মৃত মেয়েকে সমাধি থেকে তুলে বাঁচিয়ে তুলতে হবে। পুলিশ গিয়ে ওই দুই প্রৌঢ়া ও একজনের স্বামীকে উদ্ধার করে একটি বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই দেয়। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের পরে মর্গে রাখা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয় মৃত শিশুর মা-সহ সাত জন। তবে বাবা পালিয়েছে। পুলিশও হেনস্থা হয়।

বৃদ্ধাবাসের কর্মকর্তা নবকুমার দাস জানান, এ দিন পুলিশ চলে যেতেই দলেদলে লোকজন বৃদ্ধাবাসে ভিড় জমাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, ওই প্রৌঢ়াদের এখানে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘সকালে গোঁসাইডাঙা থেকে এক ওঝা বৃদ্ধাবাসে হাজির হয়ে প্রৌঢ়াদের ঘরের বাইরের জানলা থেকে মন্ত্র পড়ে পুজো শুরু করে দিয়েছিল। খবর পেয়ে কর্মীরা তাঁকে তাড়িয়েছেন।” এ দিন সকালে বৃদ্ধাবাসে আসেন বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চের সদস্যেরা। তাঁরা লাগোয়া গ্রামে দিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করার চেষ্টা চালান। কিন্তু দুপুরে ফের একদল গ্রামবাসী বৃদ্ধাবাসে হাজির হয়ে ওই তিনজনকে সরানোর দাবি জানান।

প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কুংস্কার এতটাই গভীরে যে ওই প্রৌঢ়াদের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের ভাবতে হচ্ছে। এই অবস্থায় জেলার বাইরে কোনও বৃদ্ধাবাস বা হোমে তিন জনকে রাখার কথা ভাবছে প্রশাসন ও জেলা সমাজকল্যাণ দফতর। এ দিন বিষয়টি নিয়ে জেলা সমাজকল্যাণ দফতর রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কয়েকটি হোমের কথাও ভাবা হয়েছে। জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার পরে আশপাশের কোনও জেলার একটি হোমে ওই দুই প্রৌঢ়াকে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

Shaman Old age home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy