Advertisement
E-Paper

দোকান দখল নিয়ে অশান্ত বাঁকুড়া

একটি দোকান বেদখল করার অভিযোগকে ঘিরে দফায় দফায় গোলমাল ছড়াল বাঁকুড়া স্টেশন এলাকায়। রবিবার ওই ঘটনায় চা দোকানির সঙ্গীদের সঙ্গে ছোট ভাড়াগাড়ির চালকদের মধ্যে তুমুল মারপিট বাধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৭:১৫
বাঁকুড়া স্টেশন এলাকায় ভাঙল কয়েকটি গাড়ির কাচ, রোষের আগুনে পুড়ল পুলিশের মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া স্টেশন এলাকায় ভাঙল কয়েকটি গাড়ির কাচ, রোষের আগুনে পুড়ল পুলিশের মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র

একটি দোকান বেদখল করার অভিযোগকে ঘিরে দফায় দফায় গোলমাল ছড়াল বাঁকুড়া স্টেশন এলাকায়। রবিবার ওই ঘটনায় চা দোকানির সঙ্গীদের সঙ্গে ছোট ভাড়াগাড়ির চালকদের মধ্যে তুমুল মারপিট বাধে। ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি গাড়ির কাচ। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় এক পুলিশ কর্মীর মোটরবাইকে। পুলিশ গিয়ে মৃদু লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনার জেরে বাঁকুড়া স্টেশন রোডে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। ওই ওই চা দোকানি-সহ চারজনকে আটক করে।

বাঁকুড়া স্টেশন এলাকায় একটি চায়ের দোকান রয়েছে সুখদেব সিং-এর। শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত কয়েক মাস ধরে তিনি দোকান খুলতে পারেননি। অভিযোগ সেই সুযোগে ওই দোকানেই অফিস খুলে বসেছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন প্রভাবিত বাঁকুড়া টাউন সার্ভিস স্মল কমার্সিয়াল মোটর ভেহিক্যাল ওয়ার্কাস ইউনিয়ন। ওই চা দোকানির দাবি, ‘‘শনিবার বিকেলে গিয়ে দেখি দোকান দখল করে ভাড়াগাড়ি সংগঠনের লোকজন অফিস খুলে বসেছে। তাঁদের খালি করে দিতে বললেও সরতে চায়নি। কয়েকজন আরপিএফ কর্মীকে জানালে তারা এসে ওদের সরে যেতে বলে।’’

সে দিন কোনও গোলমাল হয়নি। তবে রবিবার দুপুরে গোলমাল পাকায়। দোকান খোলার আগে আত্মীয়দের নিয়ে প্রয়োজনীয় মেরামতি করছিলেন সুখদেব। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সেই সময় ছোট ভাড়াগাড়ি সংগঠনের কয়েকজন আমাদের উল্টোপাল্টা কথা বলতে শুরু করে। তা নিয়েই বচসা হয়। ওরা আমাদের মারধর করে।’’ যদিও ভাড়াগাড়ির চালকদের দাবি, বিনা প্ররোচনায় ওই দোকানির আত্মীয়েরাই তাঁদের উপর চড়াও হয়। সেই সময় ওরা রাস্তায় থাকা সারি সারি থাকা ভাড়াগাড়ি লক্ষ করে ঠান্ডাপানীয়ের বোতল ছুড়তে থাকে। এতে অন্তত ১৩টি গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কিন্তু তাতেও অশান্তি থামেনি। পুলিশ চলে যেতেই বিকেলে বাঁকুড়া স্টেশন থেকে কয়েকশো মিটার দূরে স্টেশন মোড় এলাকায় এক ছোট ভাড়াগাড়ির চালককে একলা একটি পানের দোকানে দেখতে পেয়ে সুখদেবের আত্মীয়েরা তেড়ে যায় বলে অভিযোগ। দৌড়ে পালায় ওই গাড়ির চালক। তবে ওই দোকানের সামনে থাকা একটি মোটরবাইক ওই গাড়ি চালকের ভেবে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাচক্রে ওই মোটরবাইকটি ছিল এক পুলিশ কর্মীর। তিনি পান গুমটির সামনে মোটরবাইকটি রেখে অন্যত্র গিয়েছিলেন। মোটরবাইকে আগুন লাগানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফের বাঁকুড়া থানার পুলিশ এসে উপস্থিত হয় স্টেশন এলাকায়। ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সবরি রাজকুমার কে। ব্যবসায়ী সুখদেববাবু-সহ তাঁর তিন আত্মীয়কে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতাকে সরাতে পুলিশ মৃদু লাঠি চালায়। যদিও পুলিশ লাঠি চালানোর অভিযোগ স্বীকার করেনি।

ব্যবসায়ী সুখদেববাবুর দাবি, “ওরা আমার দোকান দখল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে বিফল হয়েই আমার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মারপিট করে। এলাকায় উত্তেজনা ওরাই ছড়িয়েছে।”

যদিও বাঁকুড়া টাউন সার্ভিস স্মল কমার্সিয়াল মোটর ভেহিক্যাল ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সম্পাদক আকবর দালালের পাল্টা দাবি, ‘‘ওই দোকানটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে দেখে ছোট ভাড়াগাড়ির চালকেরা আড্ডা দিতেন। ওই দোকান দখল করে ইউনিয়ন অফিস বানানোর অভিযোগ মিথ্যা।’’ তিনি জানান, আরপিএফ কর্মীরা সরে যেতে বলার পরে আমাদের সদস্যেরা আর ওই দোকানে আর যাননি। বিষয়টি মিটে গিয়েছিল। তাঁ অভিযোগ, ‘‘তারপরেও গুন্ডা দিয়ে ছোট গাড়ির চালকদের উপরে হামলা চালিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।”

Shop possession unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy