পুজো আসন্ন। বাইরে ঢাক বাজাতে যাওয়ার আগে ঢাকিরা টিকা নিতে এলেন বাঁকুড়ার প্রতাপপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজো এসে পড়ল বলে। তৈরি ঢাকিরা। কিন্তু করোনা-টিকার দু’টি ডোজ় না মেলায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের অনেককেই। টিকা নিয়েছেন কি না, বরাত দেওয়ার আগে ঢাকিদের সেই প্রশ্ন করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। টিকা না পাওয়া ঢাকিদের আশঙ্কা, দ্রুত করোনার প্রতিষেধক না পেলে, গত বছরের মতো এ বছরও তাঁরা দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজানোর বরাত পাবেন না।
টিকা-সমস্যার কথা বলতে সম্প্রতি বাঁকুড়া ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন প্রতাপপুর ও পলাশডাঙা এলাকার ঢাকিরা। স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে শুক্রবার প্রতাপপুর সাব-সেন্টারে বিশেষ শিবির করে ঢাকি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করোনা-প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
বাঁকুড়া ২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবজ্যোতি গোস্বামী জানান, এ দিন ৯৯ জন ‘কোভিশিল্ড’-এর প্রথম ডোজ় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬০ জন ঢাকি। বাকিরা তাঁদের পরিবারের সদস্য।
দুর্গাপুজোয় অণ্ডালের খাঁদড়া গ্রামে ঢাক বাজাতে যান প্রতাপপুরের ফেলু বাদ্যকর। এলাকার অনেক ঢাকিকে সেখানে নিয়ে যান তিনি। গত বছর করোনা-পরিস্থিতির কারণে অণ্ডালে যেতে পারেননি। আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল তাঁদের।
এ বার ফের ডাক এসেছে খাঁদড়ার পুজো কমিটি থেকে। যদিও পুজো উদ্যোক্তারা ফেলুবাবুকে জানিয়েছেন, প্রতিষেধক যেন অবশ্যই নেওয়া হয়।
ওই গ্রামের ঢাকি গৌতম বাদ্যকর ও শ্যাম লোহারেরা এ বার ডাক পেয়েছেন বিহারের ডাকনা এলাকার একটি পুজো কমিটি থেকে। তাঁদেরও একই শর্ত দিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। টিকা নিয়ে সেখানে যেতে হবে।
প্রতিষেধক পেয়ে এ দিন নিশ্চিন্ত হয়েছেন ফেলুবাবু ও গৌতমবাবুরা। তাঁরা বলেন, “গত বছর করোনা-পরিস্থিতির জন্য পুজোয় বাইরে ঢাক বাজাতে যেতে পারিনি। পুজোর মরসুমে তেমন রোজগার হয়নি। এ বার বাইরে থেকে বরাত এলেই আগে জানতে চাওয়া হচ্ছে, করোনা প্রতিষেধক নিয়েছি কি না।’’ তাঁরা জানান, বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছিল। তিনি উদ্যোগী হয়ে বিশেষ শিবির করে প্রতিষেধক দেওয়ায় ব্যবস্থা করেন।
দেবজ্যোতিবাবু বলেন, “পুজোয় ঢাকিদের বাইরে যেতে হয়। ওঁদের প্রতিষেধক পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ শিবির করে ওঁদের প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।”
জেলার অন্য এলাকার ঢাকিদের কী হবে? জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক অরুণাভ মিত্র বলেন, “করোনা-প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য লোকশিল্পীদের নামের তালিকা বানিয়ে বিভিন্ন ব্লকে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। ঢাকিরাও লোকশিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন। কোনও ঢাকি প্রতিষেধক না পেলে, দফতরে যোগাযোগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy