Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Purulia

সঙ্গে সুদীপ, ফের জল্পনা

বুধবার সুদীপকে সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দু বিধানসভার সচিবের ঘরে গিয়ে ইস্তফার চিঠি জমা দিয়ে বেরিয়ে যান। পরে সুদীপই সেই চিঠির প্রতিলিপি সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছেন।

সুদীপ মুখোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

সুদীপ মুখোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

বিধায়ক পদ থেকে বুধবার ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার সচিবের কাছে সেই চিঠি দিতে যাওয়ার সময়ে মার্শাল ছাড়া তাঁর সঙ্গে ছিলেন শুধু পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। ওই ঘটনার পর থেকেই জেলার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে সুদীপবাবুর দাবি, বিধানসভায় তাঁকে দেখতে পেয়ে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন শুভেন্দু।

সুদীপের সঙ্গে শুভেন্দুর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার সময়ে দলের যুব সংগঠনের পুরুলিয়া জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন সুদীপ। শুভেন্দু তখন ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি। রাজ্যে পালাবদলের সময়েও সুদীপ তৃণমূলে ছিলেন। ২০১৪ সালের গোড়ায় তাঁকে জেলা যুব সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই সুদীপের সঙ্গে দলের জেলা নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়তে থাকে। কয়েক মাস পরেই তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি।

কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরেও শুভেন্দুর সঙ্গে সুদীপের সম্পর্ক ভাল ছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে সুদীপ পুরুলিয়া থেকে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হন। বিধানসভার অলিন্দে দু’জনের নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ হত। এ দিকে, গত লোকসভা ভোটে পুরুলিয়ার আসনে কংগ্রেসের হয়ে নেপাল মাহাতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দলের বিধায়ক সুদীপকে সক্রিয় ভাবে প্রচারে নামতে দেখা যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে দাবি করা হয়েছিল, সুদীপ নিজের এলাকায় প্রচারে রয়েছেন। পরে মায়ের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু দিন তাঁকে বাইরেও থাকতে হয় বলে জানানো হয়েছিল।

সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের সময়ে বেশ কিছু দলীয় কর্মসূচিতে সুদীপের অনুপস্থিতি জল্পনা বাড়িয়েছে। তবে ভোটের পরে, কংগ্রেসের কর্মসূচিতে আবার দেখা যেতে শুরু করে সুদীপকে। সম্প্রতি জয়পুরে অধীর চৌধুরীর জনসভায় ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, জয়পুরের সভার কয়েক দিন আগে পুরুলিয়ার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে একটি বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির মঞ্চে শুভেন্দুর পাশে দেখা গিয়েছিল সুদীপকে। ওই দিনই পুরুলিয়ায় ‘দাদার অনুগামী’ গৌতম রায়ের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনের মঞ্চে শুভেন্দুর পাশে দেখা গিয়েছিল সুদীপের ভাই প্রদীপকে।

বুধবার সুদীপকে সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দু বিধানসভার সচিবের ঘরে গিয়ে ইস্তফার চিঠি জমা দিয়ে বেরিয়ে যান। পরে সুদীপই সেই চিঠির প্রতিলিপি সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে তাঁকে নিয়ে শুরু হওয়া জল্পনা উড়িয়ে সুদীপ বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে শুভেন্দুদার অনেক দিনের সম্পর্ক। সম্পর্কটা ব্যক্তিগত। বিধানসভার অলিন্দে মুখোমুখি দেখা হতেই আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন। বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে বলে গেলেন, কেউ জানতে চাইলে জানিয়ে দিতে।’’

সূত্রের দাবি, এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে সুদীপকে ফোন করেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁরাও বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদীপের অবস্থান জানতে চেয়েই যোগাযোগ করেছিলেন। দু’জনকেই একই কথা বলেছেন সুদীপ। বৃহস্পতিবার নেপালবাবু বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কাল সুদীপের কথা হয়েছে। আমাকে ও জানিয়েছে, বিধানসভায় দেখা হতেই শুভেন্দু ওকে নিয়ে সচিবের ঘরে ইস্তফা জমা দিতে গিয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia MLA Congress Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE