বুধবার রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে এই ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে জেলাজুড়ে।
তৃণমূলপন্থী কর্মচারী সংগঠন এই ঘোষণার সমর্থন জানিয়েছে, অন্য দিকে জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটি এই বৃদ্ধিকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়েছে। যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারী এক শিক্ষকের কটাক্ষ, “নাকের বদলে নরুণ দিয়েছে। এর কোনও মানে হয় না। আমাদের অধিকার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে!” তবে রাজনৈতিক মতামতের পাশাপাশি জেলার সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ আরও কিছুটা মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির আশা করেছিলেন বলেই জানাচ্ছেন। তবে বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির বাজারে রাজ্য সরকারের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণায় খুশি অনেকেই।
রাজ্য বাজেট ঘোষণার আগে পর্যন্ত রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মহার্ঘ ভাতার ফারাক ছিল ৩৯ শতাংশ। এই ঘোষণার পরে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ ১৪ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে উঠে এল। ফলে ফারাক ৩৫ শতাংশ নেমে এসেছে। মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি ঘোষণা হতেই এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তৃণমূলপন্থী রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সভাপতি চিত্ত অধিকারী। তিনি বলেন, “প্রচুর কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও নানা সামাজিক প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বাংলার বাড়ি বা একশো দিনের কাজের টাকার বকেয়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এর পরেও সরকারি কর্মীদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির যে ঘোষণা করেছেন তাতে আমরা আপ্লুত।”
এদিকে রাজ্য কো-অর্ডিনেশনের জেলা কমিটির সম্পাদক সৌমেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কর্মচারীদের চাহিদা ছিল কেন্দ্রের সমহারে মহার্ঘ ভাতা প্রদান। সেখানে ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান আগুনে আরও ঘি ঢালবে। এতে কর্মচারীদের ক্ষোভ তীব্রতর হবে এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন হবে আরও জোরদার।”
বীরভূমে জেলা কালেক্টরেটের কর্মী আশিস দাস বলেন, “এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কিছুই নেই। আমরা শুনছিলাম, ১০-১২ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা বাড়বে, সেখানে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি কার্যত কিছুই নয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যে পরিস্থিতি, তাতে এই বৃদ্ধিতে বিশেষ কোনও সুরাহা হবে বলেও মনে হচ্ছে না।”
তবে এই বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছেন সিউড়ি পাবলিক অ্যান্ড চন্দ্রগতি মুস্তাফি মেমোরিয়াল হাই স্কুলের শিক্ষক সন্দীপন রায়। তিনি বলেন, “৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বেড়েছে, তাতে আমরা খুশি। তবে আরও একটু বাড়লে বেশি খুশি হতাম। বাজারের জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই বেড়েছে, তাই বেতন
কিছুটা বাড়ায় অবশ্যই ভাল লেগেছে, কিন্তু প্রত্যাশা বেশি ছিল।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)