E-Paper

কাটছে খরা, ৫৬ চিকিৎসক পাচ্ছে জেলা

জেলায় মেডিক্যাল কলেজ ও সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসকের ঘাটতিতে গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগে বারেবারেই সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১০:১০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

প্রয়োজন কম-বেশি ২৯০ জন চিকিৎসক। সেখানে ছিলেন মাত্র ৯০ জন। চিকিৎসকের সার্বিক ঘাটতি নিয়েই চলছে পুরুলিয়ার ব্লক থেকে শুরু করে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। বারবার বিভিন্ন তরফে চিকিৎসক নিয়োগের দাবি উঠেছে। অবশেষে জেলায় চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, “পুরুলিয়ায় মোট ৫৬ জন নতুন চিকিৎসক নিয়োগ করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যে ২৫ জন কাজে যোগ দিয়েছেন। আশা করছি, এ মাসের মধ্যে বাকিরাও কাজে যোগ দেবেন।” সূত্রের খবর, সব চেয়ে বেশি চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে জঙ্গলমহল এলাকা বাঘমুণ্ডিতে। এলাকার বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো বলেন, “বাঘমুণ্ডি বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।”

জেলায় মেডিক্যাল কলেজ ও সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসকের ঘাটতিতে গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগে বারেবারেই সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। বিশেষ করে সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের অভিযোগ ছিল, প্রত্যন্ত জেলা পুরুলিয়ার ব্লক ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যত জন চিকিৎসক প্রয়োজন, তার এক-তৃতীয়াংশও নেই। ফোরামের দাবি, পুরুলিয়ায় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের পদ প্রায় ২৯০টি। কিন্তু ছিলেন মাত্র ৯০ জন চিকিতসক। বেশ কিছু ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বাদ দিয়ে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকায় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন চিকিৎসককে দৈনিক দু’শোর বেশি রোগী দেখতে হচ্ছিল দাবি করে সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “পুরুলিয়ার মতো প্রান্তিক জেলায় সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার উপরেই গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এমনকি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের ঘাটতিতে গ্রামের স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছিল। বারেবারেই গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ৫৬ জন চিকিৎসক নিয়োগ হলে স্বাস্থ্য পরিষেবার কিছুটা হলেও উন্নতি হবে, মত স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্তের দাবি, জঙ্গলমহল তথা অযোধ্যা পাহাড় এলাকায় চিকিৎসকের ঘাটতিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্যা বিভিন্ন তরফে জানানো হয়েছিল। ওই এলাকা থেকে পুরুলিয়া সদরের দূরত্ব অনেকটাই বেশি হওয়ায় রোগীদের বাধ্য হয়ে ঝাড়খণ্ডের রাঁচী ও বোকারোয় চিকিৎসা করাতে যেতে হচ্ছিল। তাঁর কথায়, “এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। জেলার মধ্যে বাঘমুণ্ডি বিধানসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সব চেয়ে বেশি চিকিৎসককে নিয়োগ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”

তবে যে সব ব্লক ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের ঘাটতি সব চেয়ে বেশি, সেখানেই চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছে এ নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন করা এসইউসি। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঙ্গলাল কুমারের দাবি, বলরামপুরের বাঁশগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আড়শার কাঁটাডি, বাঘমুণ্ডির তুন্তুড়ি, মানবাজার ২ ব্লকের আঁকরো ও জামতোড়িয়া, বান্দোয়ানের লতাপাড়া ও গুড়ুরের মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের অভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা শিকেয় উঠেছিল। কোথাও ফার্মাসিস্ট কোথাও বা নার্সেরা রোগী দেখে ওষুধ দিতেন। তাঁর কথায়, “চিকিৎসকের ঘাটতি থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি যাতে এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পায়, তা নিশ্চিত করুক স্বাস্থ্য দফতর।” জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তবে দাবি, কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে বা কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন, সে সব তথ্য বিচার করেই রাজ্যের তরফে সেখানে চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

State health department

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy