বিক্ষোভে ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।
একটি নলকূপ তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা পুরভোটের মুখে পুরুলিয়া শহরের জল-সঙ্কটের ছবিটা আরও বেআব্রু করে দিল। জলস্তর নেমে যাবে এই আশঙ্কায় একটি কলেজে গভীর নলকূপ বসানোর কাজ আটকে দিলেন কিছু বাসিন্দা। এর প্রতিবাদে শেষে জেলাশাসকের দফতরে অবস্থানে বসলেন ওই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা।
ফি বছর পুরুলিয়ার মানুষ জলের সমস্যায় ভোগেন। প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও সমস্যা যে মেটেনি পুরভোটের মুখে পুরুলিয়া শিক্ষক শিক্ষণ কলেজে নলকূপ বসানোর কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনা ফের তা প্রমাণ করে দিল। জল সঙ্কট দেখা দেওয়ায় বুধবার গভীর নলকূপ বসানোর জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল পুরুলিয়া শিক্ষক শিক্ষণ কলেজ চত্বরে। বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ওই কাজ হচ্ছিল। অভিযোগ, সে দিন দুপুরের দিকে স্থানীয় বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়ে কিছু লোকজন কলেজ চত্বরে ঢুকে নলকূপ বসানোর কাজে বাধা দেন। তাঁরা দাবি করেন, এমনিতেই গ্রীষ্মের আগেই এলাকায় জলস্তর একেবারে নেমে গিয়েছে। তারপর যদি এখানে গভীর নলকূপ বসানো হয়, তাহলে এলাকায় জলস্তর আরও নেমে যাবে। তাতে এলাকায় জলকষ্ট আরও বাড়বে। এই যুক্তিতে তাঁরা এই কাজ বন্ধ করে দেন। কলেজের অধ্যক্ষ উজ্জ্বলকুমার পান্ডা জানান, গতবার ভাল বৃষ্টি না হওয়ায় এমনিতেই জলের সঙ্কট চলছিল। কয়েকদিন থেকে কলেজে জলের সঙ্কট ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসের কুয়োর জলও শুকিয়ে গিয়েছে। দু’টি নলকূপও থাকলেও জল পড়ছে নামমাত্র। পুরসভার জলের লাইনেও সপ্তাহ খানেক ধরে জল আসছে না বলে তাঁর অভিযোগ।
অধ্যক্ষ জানান, কিছু দিন আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়ে দু’টি নলকূপ বসানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ২০০ ফুটের বেশি খুঁড়েও জল পাওয়া যায়নি। শেষে বিধায়কের এলাকা উন্নয়নের তহবিল থেকে কলেজ চত্বরে গভীর নলকূপ বসানোর কাজ শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, “মাটিতে গর্ত করার সময় স্থানীয় বাসিন্দার পরিচয় দিয়ে কিছু লোক প্রথমে আপত্তি জানান। পরে তাঁরা জোর করে মাটি খোঁড়ার কাজ বন্ধ করে দেন। আমরা ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েছি।” তাঁর আশঙ্কা, সমস্যা না মিটলে আবাসিক পড়িয়ারা পড়াশোনা করতে পারবেন না।
এ দিন জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন পড়ুয়াদের মধ্যে সৌমাল্য মাজি, মানস মণ্ডল, গোপীনাথ মণ্ডল, ধীমান কর প্রমুখরা। তাঁদের কথায়, “স্নান করতে হচ্ছে এক বালতি জলে। পানীয় জল মিলছে না। জল না পেলে আমরা থাকব কী ভাবে? সে কথাই জেলাশাসককে জানিয়েছি।” জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “ওই কলেজে জলের সমস্যার কথা শুনলাম। পুরসভার জল কেন সেখানে পৌঁছছে না, তা দেখতে বলা হয়েছে। ওই গভীর নলকূপের জন্য এলাকায় জলস্তরের সমস্যা হবে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy