Advertisement
E-Paper

বালির গাড়ি চলুক স্কুল সময়ের বাইরে

স্কুলের পাশ দিয়ে বালি ভর্তি লরি চলাচলের প্রতিবাদে সোমবার ক্লাস ছেড়ে প্রতিবাদে নেমেছিল সিউড়ির খটঙ্গা পঞ্চায়েতের লাঙুলিয়া হাইস্কুলের পড়ুয়ারা।দিন তিনেক পার হতে না হতেই ভিন্ন সুর দেখা গেল ওই স্কুলেরই পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৯
সিউড়িতে ভূমি দফতরের অফিস থেকে বেরোচ্ছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

সিউড়িতে ভূমি দফতরের অফিস থেকে বেরোচ্ছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের পাশ দিয়ে বালি ভর্তি লরি চলাচলের প্রতিবাদে সোমবার ক্লাস ছেড়ে প্রতিবাদে নেমেছিল সিউড়ির খটঙ্গা পঞ্চায়েতের লাঙুলিয়া হাইস্কুলের পড়ুয়ারা।

দিন তিনেক পার হতে না হতেই ভিন্ন সুর দেখা গেল ওই স্কুলেরই পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে এসে তারা জানিয়েছে, উন্নয়নের স্বার্থে স্কুল সময়ের বাইরে অন্য সময় ট্রাক গেলে তাদের কোনও আপত্তি নেই। যার পরে এলাকাবাসী এবং প্রশাসনের কর্তারা আড়ালে বলছেন, বালিঘাট নিয়ে সংঘাতের মধ্যে অকারণ পড়ুয়াদের জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে নদীবক্ষ থেকে বালি তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে অনেক আগে। বর্তমানে সরকারি শর্ত পূরণ করে মোটা টাকার বিনিময়ে ই-অকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত লিজপ্রাপ্তেরাই বালি তোলার অধিকারী। প্রশাসন সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে লাঙুলিয়ায় মযূরাক্ষী নদী থেকে বালি তোলা হচ্ছিল। নদীর ধার ঘেঁষে থাকা লাঙুলিয়া হাইস্কুলের ঠিক পাশের অপ্রশস্ত রাস্তা ধরে বালির গাড়ি যাতায়াত করা নিয়েই বিরোধ তৈরি হয়েছে।

এ ভাবে ভারী ট্রাক যাতায়াত করলে স্কুলের ক্ষতি হবে, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, দূষণ ছড়াবে— এমন নানা কারণ দেখিয়ে আপত্তি তুলেছিল স্কুলই। এলাকাবাসীও সঙ্গে ছিল। প্রশাসন নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে ডেকে স্কুলের সময় বালির ট্রাকের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত করে দেয়। তবু অসন্তোষ মেটেনি। গত সোমবার ওই স্কুলের কয়েকশো পড়ুয়া প্রতিবাদে নামে। তাদের দাবি ছিল, কোনও ভাবেই স্কুলের পাশ দিয়ে বালির ট্রাক যাবে না। অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করুক। শিক্ষক, অভিভাবকেরা ওই যান চলাচল রুখতে পারেননি, তাই বাধ্য হয়ে তারা পথে নেমেছে— এমনটাই দাবি ওই পড়ুয়াদের যুক্তি।

প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, রাজ্য সরকারের ‘ডিরেক্টোরেট অফ মাইনর মিনারেলস কমার্সও অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ডিপার্টমেন্টে’র নির্দেশে ই-অকশান হওয়ার পর থেকে বালি তোলার রাজস্ব বাবদ অনেক বেশি আয় হচ্ছে। এত দিন এক শ্রেণির লোক নদীবক্ষ থেকে বালি তুললেও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালি কারবার করেছে। নদীর ধার ঘেঁষা গ্রামের মানুষ শ্রমের বিনিময়ে টাকা মিলবে— এই চুক্তিতে বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ই-অকশানে ধাক্কা খেয়েছে দু’পক্ষই। অভিযোগ, অন্দোলনে তাই পড়ুয়াদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ দিকে, ঘটনার কথা শুনে গত সোমবারই অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নীলকমল বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, যিনি লিজ পেয়েছেন, তিনি বালি তুলবেনই। গ্রামবাসীদের কোনও অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু কোনও ভাবেই বালিভর্তি ট্রাকের চলাচল বন্ধ করা যাবে না বলে নীলকমলবাবু পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন। এ কথা বললেও সে দিন থেকেই ওই বালিঘাট থেকে দিন কয়েকের জন্য বালি তোলা বন্ধ করতে বলেন তিনি।

এর পরেই এ দিন স্কুলপড়ুয়াদের একাংশ জেলা সদর সিউড়িতে সংশ্লিষ্ট দফতরে আসে। ক্লাস ছেড়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে আসা নার্গিস খাতুন, রশনি খাতুন, ইসমা খাতুনদের দাবি, ‘‘সে দিন আমরা আন্দোলন করেছিলাম গ্রামের কিছু লোকের কথায়। স্কুলের সময়ের পর ট্রাক চললে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। সেটাই জানাতে এসেছি।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্তোষকুমার ভাণ্ডারী বলছেন, ‘‘যেটুকু জানি, পড়ুয়াদের বড় অংশ এখনও তাদের আগের দাবিতে অনড়। প্রশাসন যা হোক, কিছু একটা করুক। তা ছাড়া পড়াশোনাও ব্যহত হচ্ছে।’’

Students Sand Truck
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy