সোনামুখীর গ্রামে শিক্ষকেরা। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
অনলাইনে পড়াশোনার পাঠ আপাতত চুকেছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুলের দরজা খুলেছে। তবে, উপস্থিতির হার বেশ কম বলে দাবি। উপায় না দেখে শিক্ষকেহরাই হাজির হলেন পড়ুয়াদের বাড়িতে। সোমবার বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের ইছারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললেন। ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুলে যায়, জানালেন সে অনুরোধও।
এ দিন শিক্ষকদের একটি দল স্কুল লাগোয়া গ্রাম আমচূড়া, জামডোবা, কলাবেড়িয়া, সুকুমারপল্লিতে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি ঘোরেন। ইছারিয়ার বাসিন্দা দশম শ্রেণির অর্পিতা লোহারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাবা-মা মাঠে কাজে গিয়েছেন। বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকায় তার স্কুলে যাওয়া হয়নি। স্থানীয় সুকুমারপল্লির বাসিন্দা দেবী বাউড়ি বলে, “চাষের সময়ে মাঠে কাজ না করলে বছরভর চলবে কী করে? পরিবারের সঙ্গে মাঠে কাজে যেতেই হয়।” তবে কাজ শেষ হলেই ফের স্কুলে যাবে বলে জানায় সে।
গৌতম বেওড়া, কুচিল দত্তের মতো অভিভাবকদের দাবি, চাষের সময় এমনিতেই বাড়ির ছেলেমেয়েরা মাঠে কাজে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন স্কুল থেকে দূরে থাকায় স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছাটাও অনেকের চলে গিয়েছে। তবে কাজকর্ম শেষ হলে তাদের স্কুলে পাঠাবেন।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাপসকুমার চৌধুরী বলেন, “দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ পড়াশোনা থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছে। স্কুলছুটের আশঙ্কা বাড়ছিল। এ দিনও দেখা গেল, পড়ুয়াদের
অনেকে চাষের কাজে নেমে পড়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম। পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনতে আমাদের এ ভাবে চেষ্টা করতে হবে।”
ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে শিক্ষকদের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন সোনামুখীর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পার্থসারথি মণ্ডল। তাঁর কথায়, “চাষের কাজে অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত থাকে। তা ছাড়া, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসার প্রবণতা কমেছে। এ পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ ফের তাদের স্কুলমুখী করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy