রুদ্ধ পথ। শনিবার কুতুবপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও এখনও রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। সেই অভিযোগে একজোট হয়ে রাস্তা অবরোধে সামিল হলেন তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। শনিবার সকালে দুনিগ্রাম–চাঁদপাড়া রাস্তায় রামপুরহাট থানার কুতুবপুর মোড়ের ঘটনা।
খবর পেয়ে অবরোধ তুলতে যান রামপুরহাট ১ যুগ্ম বিডিও সুবীরকুমার রায়। তিনি মঙ্গলবার আন্দোনলকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অবরোধ উঠে যায়। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘রাস্তাটি কোন প্রকল্পে সংস্কার করা হবে, তা সোমবার অফিসে গিয়ে বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারব।’’
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়া মোড় থেকে দুনিগ্রাম–চাঁদপাড়া যাওয়ার ওই রাস্তায় অবরোধে সামিল হয়েছেন কুতুবপুর, শেরপুর ও বামদেবপুরের শতাধিক বাসিন্দা। রাস্তার উপর গাছের ডাল, বাঁশের ছিটে বেড়া ফেলে সকাল ১০টা থেকে এলাকাবাসী অবরোধে সামিল হয়েছেন। অবরোধের জেরে রাস্তায় দুনিগ্রাম ও চাঁদপাড়া রুটের বাস চলাচল বন্ধ। টোটো ও অন্যান্য ছোট যানবাহন চলাচলও বন্ধ। শেরপুরের বাসিন্দা হাজি আব্দুল খালেক, মহম্মদ শামসুজ্জোহা, কুতুবপুরের সালামত আলি, বামদেবপুরের নিতাই মালদের ক্ষোভ, ‘‘কুতুবপুর মোড় থেকে বামদেবপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য। পনেরো বছর ধরে রাস্তা সংস্কারের নামে একাধিক বার মাপজোক হয়েছে। কিন্তু সংস্কার হয়নি। এর ফলে রাস্তার মোরাম উঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। রাস্তার উপর তিনটি কালভার্টও ভেঙে পড়েছে।’’ রাস্তার বেহাল দশার জেরে বাসিন্দাদের রামপুরহাটে বাজার করা থেকে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের, অসুস্থ রোগীদের রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
অবরোধকারীদের দাবি, গত বিধানসভা ভোটের আগে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকায় এসে রাস্তাটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। অথচ এখনও পর্যন্ত রাস্তাটি কোন প্রকল্পে সংস্কার করা হবে, তা-ই জানেন না প্রশাসনের কর্তারা। অন্ধকারে রয়েছেন এলাকার মানুষও। এ দিনের অবরোধে সামিল বেশ কিছু বাসিন্দা নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করে বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য একাধিক বার মন্ত্রীকে বলা হয়েছিল। মন্ত্রীর অফিসে গিয়ে দেখা করেও সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ফল মেলেনি।’’
এ দিকে, স্থানীয় দখলবাটি পঞ্চায়েতের শেরপুর গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের মহম্মদ নুরুল ইসলামের দাবি, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী রাস্তাটি দৈর্ঘ্যে ছোট হওয়ায় তা আটকে যায়। ‘‘পরে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা রাস্তাটি সংস্কারের কাজটি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। তবে, দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন। তা না হলে এলাকাবাসীর কাছে কৈফিয়ত দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে,’’— বলছেন নুরুল ইসলাম।
অভিযোগ উড়িয়ে আশিসবাবুর দাবি, ‘‘রাস্তাটি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পে সংস্কারের অনুমোদন হয়ে আছে। এখন প্রসেসের মধ্যে আছে। তার পরেও কিছু লোক উস্কানি দিয়ে এই সমস্ত অবরোধ করিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy