E-Paper

ক্ষমা চেয়ে ভোট প্রচারে নামেন চা-দোকানি রঞ্জিত 

লোকপাড়া মোড়ে রঞ্জিতের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেই দোকান লাগোয়া একটি ফাস্টফুডের দোকানও রয়েছে তাঁর। সেটি অবশ্য তার দু’ছেলে চালান। কিন্তু তাঁরা চা তৈরির সড়গড় নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৬:৪০
An image of a tea shop

চা দিচ্ছেন রঞ্জিত কোনাই। —নিজস্ব চিত্র।

অধিকাংশ প্রার্থীই যেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাতজোড় করে ভোট ভিক্ষা করছেন, সেখানে ভোটের প্রচার শুরু করার আগেই হাতজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া গ্রামের রঞ্জিত কোনাই। কারণ, তাঁকে চায়ের দোকান বন্ধ করেই প্রচারে নামতে হয়। ফলে, বাঁধা ক্রেতাদের ভোটের সময়ে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে তাঁকে। এ বার ঢেকা পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর সংসদ থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন রঞ্জিত।

লোকপাড়া মোড়ে রঞ্জিতের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেই দোকান লাগোয়া একটি ফাস্টফুডের দোকানও রয়েছে তাঁর। সেটি অবশ্য তার দু’ছেলে চালান। কিন্তু তাঁরা চা তৈরির সড়গড় নন। চা তৈরিতে সুনাম থাকায় রঞ্জিতের বেশ কয়েক জন বাঁধা ক্রেতাও রয়েছে। মোড়ে অন্য দোকান থাকলেও এই সব ক্রেতারা রঞ্জিতের তৈরি চা খেতেই পছন্দ করেন। এঁদের নিয়েই খুব মুশকিলে পড়েছেন রঞ্জিত।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকে এক বেলার পরে দোকান বন্ধ করে নেতাদের সঙ্গে প্রচারে চলে যাচ্ছেন রঞ্জিত। পরের দিন দোকান খুলতেই ক্রেতাদের থেকে অনুযোগ শুনতে হচ্ছে তাঁকে। দীর্ঘদিনের ক্রেতা সরোজ পাল, সানারুল শেখেরা বলেন, ‘‘রঞ্জিতের তৈরি চা না হলে আমাদের পোষায় না। আমরা ওর দীর্ঘদিনের বাঁধা খদ্দের। হঠাৎ অন্য দোকানে চা খেতে গেলে ঠারেঠোরে বাঁকা কথা শোনায়।’’ সমস্যাটা রঞ্জিতও আন্দাজ করেন। তাই দোকান বন্ধ করার আগে হাত জোড় করে তাঁদের মার্জনা চেয়ে নেন। তবে ভোটে জেতার ব্যাপারে অবশ্য আশাবাদী রঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের পর দু’ছেলেকে চা তৈরিতে তালিম দিয়ে নেব। যে দিন আমি থাকব না, সে দিন তাঁরা পালাক্রমে চায়ের দোকান সামলাবে।’’

রঞ্জিতকে অবশ্য ত্রিমুখী লড়াইয়ের সামনে পড়েছে। সিপিএম উল্লাস দলুইয়ের পাশাপাশি রঞ্জিতের লড়াই বিজেপি প্রার্থী নন্দদুলাল কোনাইয়ের সঙ্গেও। নন্দদুলাল সম্পর্কে উল্লাসের ভাইপো। শাসকদলের নেতারা অবশ্য বিরোধীদের গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের ঢেকা অঞ্চল কমিটির সভাপতি চন্দ্রনীল ঘোষ বলেন, ‘‘উন্নয়নের পাশাপাশি জনপ্রিয়তার নিরিখে আমাদের প্রার্থী অনেক এগিয়ে। সে হিসেবে তাঁর জয় সুনিশ্চিত।’’

শাসকদলের দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে সিপিএমের ময়ূরেশ্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত ভল্লা এবং বিজেপির ময়ূরেশ্বর মণ্ডল কমিটির সদস্য সদানন্দ মণ্ডল এক সুরে বলেন, ‘‘ব্যবসায়িক জনপ্রিয়তা ভোটে প্রতিফলিত হয় না। শাসকদলের দুর্নীতিতে মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে বিপক্ষে রায় দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC Tea Seller

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy