Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

‘দুই ভাই একসঙ্গে ছাড়ব’, নুরুলের ইস্তফা আটকে নিজের পদত্যাগেরও সময় জানিয়ে দিলেন অনুব্রত!

জেলা তৃণমূলে ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা’ বলে পরিচিত অনুব্রত আগে যেমন ঝাঁঝালো এবং বিতর্কিত মন্তব্য করতেন, এখন তাঁর কোনও বক্তব্যেই সেই ছোঁয়া পাওয়া যাচ্ছে না।

সিউড়ির সভায় অনুব্রত মণ্ডল।

সিউড়ির সভায় অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৩৪
Share: Save:

তিহাড় জেল থেকে জামিনে মুক্তির পর অনুব্রত মণ্ডল নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনিই বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি। সোমবার সিউড়ির সভা থেকে আর কত দিন ওই পদে থাকবেন সেটাও আগেভাগে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কেষ্ট। সিউড়ি-২ ব্লক সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়েছেন নুরুল ইসলাম। তাঁকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে অনুব্রত জানালেন, চতুর্থ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলে তাঁরা দু’জনেই দলের পদ ছেড়ে দেবেন।

সোমবার সিউড়ির পুরন্দরপুর এলাকার বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন অনুব্রত। ওই এলাকার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরুল পদ ছাড়ার জন্য আবেদন করেছেন। নুরুল জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষও। তাঁকে ইস্তফা দিতে বাধা দিয়ে অনুব্রত জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে তিনিও বীরভূমের জেলা সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। বস্তুত, সিউড়ি-২ ব্লক থেকে সাধারণত নিজের সমস্ত রাজনৈতিক যাত্রা বা সভা শুরু করেন অনুব্রত। এ বারই সেই ‘রীতি’ প্রথম বার ভেঙেছেন তিনি। তিহাড় জেল থেকে ফেরার পর কেষ্ট প্রথম সভা করেন মুরারইয়ে। সিউড়ি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল বরাবরই কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। দু’জনের রাজনৈতিক জীবন শুরু একসঙ্গে। কিন্তু সম্প্রতি নুরুল ব্লক সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়ে চিঠি দেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। সোমবার এ নিয়ে কেষ্ট বলেন, ‘‘বন্ধু নুরুল, ২০২৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে জেলা সভাপতি পদ থেকে আমি সরে দাঁড়াব। তখন তুমিও ব্লক সভাপতি পদ ছেড়ে দিয়ো।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নুরুল খুব ভাল ছেলে। আমরা একসঙ্গে রাজনীতিতে পথ চলা শুরু করেছি এবং একসঙ্গে কাজ করেছি। আমি নুরুলকে বলব, এখনই পদ-না ছাড়ার কথা। আর এক বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়ার পর ছাড়তে হলে, একসঙ্গে দাদা-ভাই মিলে (পদ) ছাড়ব।’’

জেলা তৃণমূলে ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা’ বলে পরিচিত অনুব্রত আগে যেমন ঝাঁঝালো এবং বিতর্কিত মন্তব্য করতেন, এখন তাঁর কোনও বক্তব্যেই সেই ছোঁয়া পাওয়া যাচ্ছে না। অনুব্রতের পাশে যে নেতা-কর্মীদের ছায়াসঙ্গীর মতো দেখা যেত, তাঁদের অনেককেও এখন কেষ্টর আশপাশে দেখা যায় না। যে কোর কমিটি নিয়ে কেষ্টর সঙ্গে দ্বন্দ্বের আবহ তৈরি হয়েছিল, সেই কমিটিরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। কিছু দিন আগেই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বয়স অনেক হল। চলুন এ বার থেকে বীরভূম জেলায় নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করি। আমরা সবাইকে নিয়ে চলব। কোনও ভেদাভেদ রাখব না। আমাদের আর কিছু পাওয়ার নেই। আমরা মানুষের সেবা করব। বীরভূমকে আরও সাজিয়ে তুলব। সে ক্ষেত্রে আমি ভুল করলে আপনারা ধরিয়ে দেবেন। আমি কর্মী হয়ে থাকতে চাই। আপনাদের মতো দলের কাজ করব। মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক হতে চাই না।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমি কোনও অন্যায় করব না, কাউকে করতেও দেব না। অন্যায় করলে কোনও কিছু ভাল হয় না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal TMC Birbhum nurul islam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE