নোট বাতিল ও সাংসদদের গ্রেফতারির প্রতিবাদ আরও জোরাল করতেই মহকুমাস্তরে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেলার মধ্যে প্রথম ঝালদায় সোমবার তৃণমূলের সেই কর্মসূচি ভিড়ের অভাবে প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ল। এরপর সেই ঝালদাতেই বুধবার ফের একই কর্মসূচির দিন ঠিক করল তৃণমূল।
এ দিন ঝালদার বীরসা মোড়ে দিনভর অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করার কথা কয়েকদিন আগেই ঘোষণা করেছিল দল। সেই মতো, এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, কোর কমিটির সদস্য নবেন্দু মাহালি, জেলা যুব সভাপতি গৌতম রায়, জেলা টিএমসিপির সভাপতি নিরঞ্জন মাহাতো-সহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ঝালদায় পৌঁছন। ছিলেন স্থানীয় নেতা সমীর মাহাতোও। কিন্তু বেলা বাড়লেও অবস্থান মঞ্চের বেশির ভাগ জায়গাই ছিল ফাঁকা। এ রকম সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতারা অনেকেই অস্বস্তিতেও পড়েন।
বস্তুত ঝালদা কংগ্রেসের সদস্যদের দলবদলের পরে পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের হাতে চলে গেলেও এলাকায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কারও অজানা নয়। এ দিনের কর্মসূচি ব্যর্থতার পিছনেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই মূল কারণ বলে দলের অনেকে মনে করছেন। কর্মসূচির শেষে ভিড় কেন কম হল, তা নিয়ে নবেন্দুবাবু ও আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঝালদার নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। দল সূত্রের খবর, এক নেতা সেখানে বলেই ফেলেন, ফরওয়ার্ড ব্লক এ দিন এলাকায় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে। সেই মিছিলে যদি লোক থাকে, এই কর্মসূচিতে কেন থাকবে না? কার্যত এ রকম ফাঁকা কর্মসূচিকে ঘিরে কংগ্রেস জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর গড়ে অন্যরকম রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছতে পারে, এ কথা মাথায় রেখে ৪৮ ঘণ্টা পরে ফের সেই একই জায়গায় একই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হল।
বৈঠকের পরে নবেন্দুবাবু স্বীকার করেন, ‘‘আসলে জেলার বৈঠকের পরে ব্লকে বা অঞ্চলে এই কর্মসূচি সংগঠিত করার জন্য সে ভাবে প্রচারই করা হয়নি। এই কর্মসূচির গুরুত্ব কতটা কর্মীদের কাছে পরিষ্কার ভাবে সেই বার্তাও পৌঁছয়নি। স্থানীয় নেতৃত্বের ঘাটতি রয়েছে। তাই সে ভাবে জমায়েত হয়নি। দলে মতপার্থক্য যাই থাক, কর্মসূচি সফল করতেই হবে।’’
দলের ঝালদা ১ ব্লক সভাপতি দীনদয়াল মাহাতো বলেন, ‘‘প্রচার নিয়ে ঘাটতি ছিলই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বুধবার ফের এই কর্মসূচি পালন করাব।’’ দলের ঝালদা শহর সভাপতি দেবাশিস সেনের পাল্টা দাবি, ‘‘ব্লক নেতৃত্বই তো কর্মসূচির বিষয়টি পরিষ্কার করে জানায়নি।’’