Advertisement
E-Paper

মহিলা খুনে গ্রেফতার দুই তৃণমূল কর্মী

বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় পড়ে প্রাণ গিয়েছিল এক মহিলার। বুধবার রাতে নানুরের আতকুলা গ্রামের ওই ঘটনায় খুনের অভিযোগে শাসকদলের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩২

বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় পড়ে প্রাণ গিয়েছিল এক মহিলার। বুধবার রাতে নানুরের আতকুলা গ্রামের ওই ঘটনায় খুনের অভিযোগে শাসকদলের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

ঘটনায় আরও এক বার নানুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে চলে এল বলে বিরোধীরা দাবি করলেও তৃণমূল নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। আবার পরিবার থানায় যে এফআইআর করেছে, তাতেও এমন কোনও দ্বন্দ্বের কথা লেখা হয়নি। মোটরবাইকে ছাগলকে ধাক্কা মারাকে কেন্দ্রে করে ওই খুন বলে দাবি করে নিহতের ভাগ্নে মিঠু শেখ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের মধ্যে সুকুর শেখ এবং আব্বাসউদ্দিন শেখকে রাতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দু’জন পলাতক।

পুলিশ জানায়, নিহতের নাম গোলচেহারা বিবি (৩৫)। বাড়ি আতকুলা গ্রামেই। তাঁর স্বামী কেশমত শেখ এবং সম্পর্কিত ভাই ইব্রাহিম শেখ— দু’জনেই এলাকায় প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের বর্তমান জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরার অনুগামী হিসাবে পরিচিত। অভিযোগ, থুপসরা পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজের টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সুকুর শেখ, আব্বাসউদ্দিন শেখদের বিরোধ দীর্ঘ দিনের। একসময় আব্বাসউদ্দিনরা এলাকার দাপুটে নেতা কাজল শেখের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন। বিধানসভা ভোটের আগে তাঁরাও গদাধরের গোষ্ঠীতে নাম লেখান। তার পর থেকেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইব্রাহিমরা।

বুধবার সকালে নানুরের বাসাপাড়া বাজারে ইব্রাহিমকে আব্বাসউদ্দিনরা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। তার পরে বিকাল ৫টা নাগাদ ফের বহিরাগতদের জুটিয়ে আব্বাসউদ্দিনরা ইব্রাহিমের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়। পরিবারের দাবি, সে সময় গোলচেহারা দুষ্কৃতীদের আটকানোর চেষ্টা করেন। দুষ্কৃতীরা রড দিয়ে তাঁর মাথায় সজোরে আঘাত করে। রডের ঘায়ে আহত হন ইবাহিম এবং তাঁর বোন রঙিনা বিবিও। রাতেই প্রত্যেককে বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই গোলচেহারাকে মৃত বলে জানানো হয়। পরে ইব্রাহিম এবং তাঁর বোনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার নিহতের স্বামী কেশমত শেখ বলেন, ‘‘বুধবার আচমকা ওরা বহিরাগত লোক নিয়ে চড়াও হয়। ইব্রাহিমকে মারধর শুরু করে। আমি আর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে ওরা ওঁর মাথায় রডের বাড়ি মারে।’’ তাঁর দাবি, ইব্রাহিমের সঙ্গে হামলাকারীদের কী নিয়ে বিরোধ ছিল, তা তিনি জানেন না। খুনের কারণ সম্পর্কে মুখ খুলতে চাননি নিহতের অন্যান্য পরিজনও। এ দিনই সকালে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিহতের দেহের ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। নিহতের জামাই বাবলু কাজি বলেন, ‘‘খুনের কারণ নিয়ে আমরা কিছু জানি না।’’

এ দিকে, স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেছেন, ১০০ দিনের কাজের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর বিবাদে ওই খুন বলে এলাকার মানুষ তাঁদের জানিয়েছেন। একই দাবি করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলেরই ব্লকস্তরের এক স্থানীয় নেতাও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা ধামাচাপা দিতেই নিহতের এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে দিয়ে ছাগল নিয়ে ঝামেলাকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করানো হয়েছে।’’ এ দিন বারবার চেষ্টা করেও গদাধরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘নিহত এবং অভিযুক্ত দু’পক্ষই আমাদের কর্মী হলেও ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রাম্য বিবাদের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে।’’

TMC murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy