উৎসবের খাদ্য তালিকায় কমছে রকমারি ডালশস্যের পদ।
শনিবার ‘ডালে স্বনির্ভরতা-চ্যালেঞ্জ ও এগোনোর দিশা’ শীর্ষক দু’ দিনের একটি জাতীয় সম্মেলনে শান্তিনিকেতনে এসে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সুতনু ঘোষ দাবি করলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে উৎসব অনুষ্ঠানে, ডাল জাতীয় খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। পুজোর মরসুমে কলকাতায় ছোলার ডালের ধোকার অভাব দেখা যায়। তার জায়গা নিয়েছে পনিরের টুকরো।’’ ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তা বিশ্বভারতীর পল্লি শিক্ষা ভবন এবং বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
দু’দিনের এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক, কৃষি বিজ্ঞানী, গবেষক ও পড়ুয়ারা। ছিলেন কৃষি আধিকারিক এবং কৃষকেরাও। আহার্য হিসেবে বিভিন রকমের ডালের উপকারিতা, স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা সাম্প্রতিক কালের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে খাদ্য এবং কৃষি সম্পর্কিত রাষ্ট্রসংঘের সংগঠন (এএফও)। দেশে ডাল শস্যের উৎপাদন কতটা জরুরী— সে দিকে আলোকপাত করেন বক্তারা।
এ দিন সুতনুবাবু বলেন, ‘‘বাঙালিরা ডাল বেশি খায়। কিন্তু বাংলায় ডালের তেমন হারে উৎপাদন নেই। ডাল চাষে আগ্রহ বাড়াতে হবে। আমরা সব রকম সাহায্য করব।’’
ডালের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলকে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানান বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত। সরকারি সহায়তা, লাভজনক ফসল হিসেবে কৃষিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, চাহিদা বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা। প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদা বৃদ্ধির জেরে আগামি দিনে ডালের নির্ভরশীলতা, উন্নত মানের বীজ নিয়ে কথা বলেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডি ডি পাত্র।
ডালের উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন জেনোমিক্সের অধিকর্তা রাজীব কুমার ভার্সনে।
তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে আফ্রিকার ২৮ শতাংশ শিশুদের তুলনায় ভারতের শিশুদের অপুষ্টির হার ৪২ শতাংশের কথা বলেন। ডাল চাষে এলাকা বৃদ্ধি, উন্নত প্রযুক্তির এবং উন্নত মানের বীজের ব্যবহারের কথা জানান আই আই পি আর কানপুরের অধিকর্তা এন পি সিংহ। দেশের অর্থনীতিতে কৃষি এবং ডাল চাষের গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে ‘তিন ফসলি জমিতে ভারী কারখানা করা সঠিক পদক্ষেপ নয়’, বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ছিলেন সদ্য প্রাক্তন সভাপতি অম্বরিশ দাসগুপ্ত এবং শ্রীনিকেতনের অধিকর্তা সবুজকলি সেন, পল্লি শিক্ষা ভবনের অধ্যক্ষ সার্থক চৌধুরী, আয়োজকদের পক্ষে গৌতম কুমার ঘোষ প্রমুখ।