Advertisement
E-Paper

স্কুলে স্কুলে ক্ষোভ চলছে

প্রশাসন বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছেন স্থায়ী চাকরি নয়। একশো দিনের অন্য আর পাঁচটা কাজের থেকে এখানে কোনও তফাৎ নেই। কিন্তু কে তা কানে তুলছে? একশো দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ দেওয়ার ঘটনার জেরে তৃতীয় দিনেও বিক্ষোভ অব্যাহত রইল পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন স্কুল ও পঞ্চায়েত এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০২:৫৯
তালা: পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ দিন ধরে বন্ধ। বাইরে ঝোলানো হয়েছে পোস্টার। ছবি: সুজিত মাহাতো

তালা: পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ দিন ধরে বন্ধ। বাইরে ঝোলানো হয়েছে পোস্টার। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রশাসন বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছেন স্থায়ী চাকরি নয়। একশো দিনের অন্য আর পাঁচটা কাজের থেকে এখানে কোনও তফাৎ নেই। কিন্তু কে তা কানে তুলছে? একশো দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ দেওয়ার ঘটনার জেরে তৃতীয় দিনেও বিক্ষোভ অব্যাহত রইল পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন স্কুল ও পঞ্চায়েত এলাকায়। বৃহস্পতিবার স্কুলে গোলমালে পড়াশোনা সব থেকে বেশি ব্যাহত হয় বরাবাজার থানা এলাকায়।

বরাবাজারের পড়াশা প্রাথমিক স্কুলের সামনে বরাবাজার-বলরামপুর রাস্তায় স্বনির্ভর দলের মহিলারা বিক্ষোভ দেখানোয় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়ে যাত্রীদের অনেকে গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে রওনা দেন। স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা পুতুল মাহাতো, অনিমা মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের রান্না-সহ নানা কাজ করে আসছি। স্কুলে নতুন করে কাউকে নিয়োগ করতে দেব না।’’ ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক নির্মল মাহাতো জানান, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাধায় স্কুলে তাঁরা ঢুকতে পারেননি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবাজারের ভাগাবাঁধ পঞ্চায়েতের আটটি আটটি স্কুল, তুমড়াশোল পঞ্চায়েতের পাঁচটি স্কুল, বাঁশবেড়া পঞ্চায়েতের ছ’টি স্কুল ও শুকুরহুটু পঞ্চায়েতের চারটি স্কুলে বিক্ষোভের জেরে এ দিন পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। অনেক বেলা পর্যন্ত কয়েকটি স্কুলে তালা ঝুলতে দেখা গিয়েছে।

মহকুমাশাসক (মানবাজার) সঞ্জয় পাল বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, স্কুল পরিদর্শক ও শিক্ষকদের একাংশকে নিয়ে এ দিন বৈঠক করেছি। এটা চাকরি নয়, এই কথাটা সবাইকে বোঝাতে হবে।’’ শিক্ষকদের বলেছি, গোলমাল নজরে এলেই স্থানীয় প্রশাসনকে যেন তাঁরা অবহিত করেন।’’

জেলার অন্যত্রও একই অবস্থা। পুরুলিয়া ১ ব্লকের ১৮টি, পুরুলিয়া ২ ব্লকের তিনটি, ঝালদা ২ ব্লকের আটটি ও কাশীপুর ব্লকের একটি স্কুলে এ দিন বিক্ষুব্ধেরা তালা ঝোলান। তালা পড়ে পুরুলিয়া ২ ব্লকের ভাঙড়া পঞ্চায়েতে। পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালা বুধবারও খোলা হয়নি। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি হেমন্ত রজক বলেন, ‘‘স্কুলে পর স্কুলে তালা পড়ায় লেখাপড়া যে নষ্ট হচ্ছে, তা সবাইকে বুঝতে হবে।’’ তৃণমূল শিক্ষা সেলের (প্রাথমিক) নেতা বিকাশ মাহাতোর মতে, ‘‘এই কাজ যে একশো দিনের অন্য কাজের মতোই, আগেভাগে তা প্রচার করে কাজ শুরু করা হলে বিক্ষোভ এই চেহারা নিত না।’’

পুরুলিয়া ১ ব্লকের সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতে মঙ্গলবার থেকেই তালা ঝুলছে। এ দিনও কয়েকটি গ্রামের মহিলারা সেখানে গিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান কী ভাবে কাজের জন্য লোক বাছাই করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে বিক্ষোভ দেখান। যুগ্ম বিডিও এবং পুলিশ গিয়ে ক্ষোভের মুখে ফেরত আসেন। বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের অচলাবস্থা কাটাতে পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্য ও বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’ পুরুলিয়া ১ ব্লকের পুরুলিয়া-মানবাজার রাস্তায় ভাণ্ডারপুয়াড়া মোড়ে অবরোধ চলে। বিডিও তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন।

এ নিয়ে রাজনীতিও বজায় রয়েছে। বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘স্বনির্ভর দলগুলিকে উস্কানি দিয়ে বিজেপি অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছে। আমরা দলীয় ভাবে খোঁজ নিচ্ছি।’’ বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমরা স্কুলে তালা দেওয়া সমর্থন করি না। কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কাজ দেওয়ার নামে স্বজনপোষণ করছেন। আমরা প্রতিবাদ করছি।’’

School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy