Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
পঞ্চায়েতের রায় বেরোতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলে

বোমাবাজি, লুটপাটে উত্তপ্ত নানুর

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার মিছিলে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী বিরোধ মাথাচাড়া দেয়। সুপ্রিম কোর্টের পঞ্চায়েত মামলার রায়ের দলের প্রার্থীদের স্বস্তি মেলার খবরের পরে স্থানীয় দাঁতিনা গ্রাম থেকে বেলুটি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই মিছিলে গ্রামবাসীতে নিজ নিজ পক্ষের হয়ে যোগ দেওয়ার জন্য উভয় গোষ্ঠীর লোকেরা চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ।

নানুেরর চণ্ডীপুরে ভাঙা ঘরের সামনে। শনিবার। ছবি: কল্যাণ আচার্য

নানুেরর চণ্ডীপুরে ভাঙা ঘরের সামনে। শনিবার। ছবি: কল্যাণ আচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৪
Share: Save:

পঞ্চায়েত মামলার রায় বেরোতেই আয়োজন করা হয়েছিল মিছিলের। তা শেষ হতেই বোমাবাজি হল নানুরের চণ্ডীপুর গ্রামে। একটি বাড়িতে আগুন লাগানো, বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুঠপাটের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বেই ওই বোমাবাজি বলে বাসিন্দাদের দাবি। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানেননি। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার মিছিলে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী বিরোধ মাথাচাড়া দেয়। সুপ্রিম কোর্টের পঞ্চায়েত মামলার রায়ের দলের প্রার্থীদের স্বস্তি মেলার খবরের পরে স্থানীয় দাঁতিনা গ্রাম থেকে বেলুটি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই মিছিলে গ্রামবাসীতে নিজ নিজ পক্ষের হয়ে যোগ দেওয়ার জন্য উভয় গোষ্ঠীর লোকেরা চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ। তার জেরে সন্ধ্যা ছ’টা থেকে গ্রামে উভয়পক্ষের ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। সুব্রতবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত একজনের বাড়িতে আগুন লাগানো এবং কয়েক’টি বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুঠপাটের অভিযোগ ওঠে।

দু’পক্ষই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে নারাজ। সুব্রত ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘ওই সব ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্পর্ক নেই। দুষ্কৃতীদের কাজ।’’ দ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গদাধর হাজরাও।

তাঁর দাবি, ‘‘ও সব গ্রামের গোলমাল।’’ পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশ টহল চলছে।

পুলিশ এবং স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, ওই গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদ দীর্ঘ দিনের। ওই বিবাদের জেরে গোলাগুলির লড়াই লেগেই রয়েছে। এক সময় ওই বিবাদ ছিল দলের প্রাক্তন যুব নেতা কাজল শেখের অনুগামীদের সঙ্গে দলের বর্তমান জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরার অনুগামীদের। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কাজল রাজনীতির ময়দানে তেমন সক্রিয় নন বলেই অনেকের দাবি। ওই সূত্র জানাচ্ছে, তাঁর অনুগামীদের অনেকেই এখন ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের গোষ্ঠীর। ‘আদি তৃণমূল’ হিসেবে পরিচিত কর্মী-সমর্থকদের ওই অংশটি সুব্রত-শিবিরে সক্রিয় বলেও দাবি।

অন্য দিকে, সিপিএম তথা বামপন্থীদের একটা অংশ জায়গা করে নিয়েছেন গদাধর হাজরার গোষ্ঠীতে। অভিযোগ, বছর আটেক আগে ওই গ্রামেরই শেখ ইলিয়াস নামে এক তৃণমূল কর্মী খুনে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন সিপিএম কর্মী নেতা হয়ে ওঠেন গদাধর হাজরার গোষ্ঠীতে। সেই থেকে এলাকা দখল তথা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের খবরদারি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। বছরখানেক আগেও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মিছিলে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। গদাধর হাজরার এক অনুগামীর খড়ের পালুই পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE