Advertisement
E-Paper

কুলিয়াকে চেনাল নাবিনা

অভাব-অনটনকে জয় করে, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের প্রথম একশো জনের তালিকায় নিজের নাম তুলে নিল বীরভূমের নাবিনা খাতুন। ছোট বেলা থেকেই ক্লাসে প্রথম স্থান ধরে রাখা নাবিনার এই সাফল্যে শুধু তাঁর বিদ্যালয় বা গ্রামই নয়, আশেপাশের এলাকায় সাড়া ফেলেছে এই কৃতিত্ব।

মহেন্দ্র জেনা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০০:৫০
নাবিনা খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।

নাবিনা খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।

অভাব-অনটনকে জয় করে, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের প্রথম একশো জনের তালিকায় নিজের নাম তুলে নিল বীরভূমের নাবিনা খাতুন। ছোট বেলা থেকেই ক্লাসে প্রথম স্থান ধরে রাখা নাবিনার এই সাফল্যে শুধু তাঁর বিদ্যালয় বা গ্রামই নয়, আশেপাশের এলাকায় সাড়া ফেলেছে এই কৃতিত্ব। বীরভূমের নানুর থানার নওদা পালুন্দি হাই মাদ্রাসার মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রী নাবিনার এই সাফল্যে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য নজির সৃষ্টি করবে এবং আগামী দিনে কৃতী ছাত্রীর পথ পড়ুয়ারা অনুসরণ করবে বলে দাবি প্রধান শিক্ষক সজল কান্তি ঘোষের।

ফলাফলের হিসাবে দেখা গিয়েছে নাবিনা মোট ৮০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৭০৯। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের একশো জনের মেধা তালিকায় নাবিনার নাম ষোলতম স্থানে রয়েছে। সজলবাবুর কথায়, ‘‘এহেন প্রত্যন্ত এলাকা এবং বিশেষ করে আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এই সমাজে তাঁর কৃতিত্ব এবং সাফল্য বিশেষ প্রশংসার।’’

নাবিনা যে মাদ্রাসাটিতে পড়ে, সেটি বীরভূমের নানুর থানার জলুন্দি পঞ্চায়েতের ছোট গ্রাম কুলিয়া থেকেও দূরে। কুলিয়া গ্রাম থেকে মিনিট পনেরর দূরত্বে এই নওদা পালুন্দি হাই মাদ্রাসা। এবার এই মাদ্রাসা থেকে মোট ৫৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

কী বলছেন নাবিনা?

তিনি বলেন, ‘‘কোনও কোনও বিষয়ে আরও কিছু নম্বর আসা উচিত ছিল। হয়ত কোনও কারণে আসেনি, তাই এই নম্বর। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে জয়েন্ট দিয়ে ডাক্তারি পড়তে চাই। তবে শিক্ষকতাকেও পেশা করার ইচ্ছে আছে।’’

জানা যায় বাবা, মা, দাদু, ঠাকুমা, কাকা, কাকিমা-সহ ভাই বোনদের নিয়ে নাবিনার যৌথ পরিবার। সেই অর্থে বলতে গেলে, তাঁদের পরিবারের কেউ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোয়নি। কিন্তু বাচ্চাদের পঠন-পাঠন নিয়ে কোনও রকমের ‘কম্প্রোমাইজ’ তাঁরা করতে চান না। সামান্য জমিতে চাষ বাস ছাড়া পরিবারে বিড়ি বাঁধাইয়ের কাজ করেন সকলে।

এ দিন নাবিনার বাবা শেখ নাজির হোসেন, মা পাকিবা বিবি জানান, মেয়ে ছোট বেলা থেকে পড়াশোনায় ভাল। তাই তাঁকে কোনও রকমের অভাবের কথা বুঝতে দিই না। কোনও কোনও সময়ে রান্নার কাজে অথবা অন্য কোন পরিবারের কাজ করতে চাইলেও তাঁকে বারণ করেছি। এমনকী নাবিনার কাকু শেখ মেহেদি হোসেন কাকিমা মনিজা বিবিরাও চোখে চোখে রাখত যাতে তাঁর পঠন-পাঠনে কোনও রকমের বিঘ্ন না হয়।

বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন বাদে বাকি সময়ে, নাবিনার পড়ার সঙ্গী বলতে তাঁর ঠাকুমা আসরাফুন্নেসা বিবি। নাবিনা বলেন, ‘‘ভোরের বেলা ঘুম থেকে তুলে পড়া শেষ করা পর্যন্ত সমানে থাকে। আর দাদু শেখ সবুর, কিছুতেই টিভিতে কার্টুন শো দেখতে দেবে না। মাধ্যমিকে ভাল ফল হলে, কার্টুন দেখার কথা বলেছিলেন। এখন দেখব!’’

Madhyamik Village girl Mahendra Jena birbhum Nabina khatun
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy