Advertisement
E-Paper

রাস্তায় গুঁড়ি ফেলে অপেক্ষা ‘দূতের’ জন্য

শনিবারও ওই কর্মসূচিতে গিয়ে বোলপুরের একটি গ্রামে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল নানুরের বিধায়ককে। এ দিন কীর্ণাহার ২ পঞ্চায়েত কর্মসূচি ছিল বিধানচন্দ্রের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৪
গাছ ফেলে পথ অবরোধ। নিজস্ব িচত্র

গাছ ফেলে পথ অবরোধ। নিজস্ব িচত্র

ফের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’কর্মসূচিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়কেরা। রবিবার সকালে কীর্ণাহারে এই অভিজ্ঞতা হয় নানুরের বিধঘায়ক বিধানচন্দ্র মাঝির। আর বিকেলে দুবরাজপুরের আলিপুরে পানীয় জল নিয়ে এলাকার মানুষ বিক্ষোভ দেখান সিউড়ির বিধায়ক তথা জেলা সভাধিপতি বিকাশ রাচৌধুরীর সামনে। গাছের গুঁড়ি রাস্তা ফেলে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন গ্রামবাসীরা। সাত দিনের মধ্যে ওই এলাকায় সাবমার্সিবল বসিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে, বিধায়ক এই প্রতিশ্রুতি দিলে শান্ত হন এলাকাবাসী।

শনিবারও ওই কর্মসূচিতে গিয়ে বোলপুরের একটি গ্রামে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল নানুরের বিধায়ককে। এ দিন কীর্ণাহার ২ পঞ্চায়েত কর্মসূচি ছিল বিধানচন্দ্রের। বিধায়কের সঙ্গে ছিলেন এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা, ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য, অঞ্চল সভাপতি শেখ আলামিন প্রমুখ। প্রথমে তাঁরা জয়ন্তপুর কলোনিতে যান। সেখানে বেশ কিছু গ্রামবাসী আবাস যোজনার অনুদান, বার্ধক্যভাতা পাননি বলে অভিযোগ জানান। নিকাশিনালা নিয়েও ক্ষোভ শোনা যায়। ৭০ বছরের অমল বন্দ্যোপাধ্যায়, ৭১ বছরের দিবাকর দাস , ৬৫ বছরের সুমিত্রা কর্মকারেরা বিধায়ককে বলেন, ‘‘আমরা আজও ভগ্নপ্রায় বাড়িতে বাস করি। কিন্তু বাড়ি পাইনি। বার্ধক্যভাতাও পাইনি।’’

দিঘলডাঙা কলোনির সোমা চক্রবর্তী অভিযোগ করে , ২১ বছর ধরে বিধবাভাতা জন্য আবেদন করে আছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সাথী দত্ত, কৃষ্ণ দাসরা পরে বলেন, ‘‘এর আগে এলাকায় বিধায়ককে দেখা যায়নি।’’ বিধায়ক অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, আবাস যোজনা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত ১৭টি বিষয়কে মাথায় রেখে সমীক্ষার ভিত্তিতে অনুদান বরাদ্দ হয়। তাই দুঃস্থদের নাম বাদ পড়তে পারে। বিধায়ক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের আবেদনপত্র দিতে বলেছি। বাড়ির অনুদানের পাশাপাশি বার্ধক্য এবং বিধবাভাতার বিষয় নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’

নানুরে তেমন কিছু না-ঘটলেও দুবরাজপুরে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন চিনপাই গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকায় ‘দিদির দূত’ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিকাশ। দুপুরে এক কর্মীর বাড়িতে খাওয়া দাওয়া সেরে বিকেলে জনসংযোগ সভায় যোগ দিতে এলেমা যাওয়ার যাওয়ার কথা ছিল বিকাশের। তার আগেই ওই রাস্তায় আলিপুর মোড়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিধায়কের অপেক্ষায় ছিলেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি ছিল, এলাকার জল-যন্ত্রণার অবাসান না ঘটিয়ে বিধায়ক এলাকায় ঢুকতে পারবেন না। টানা দশ মিনিট বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ চলতে থাকে। কিছুটা বিব্রত হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে জনরোষ সামলে বিকাশ দ্রুত ওই গ্রামে ভূগর্ভস্থ জল তুলে পরিস্রুত পানীয় জলের জোগানোর প্রতিশ্রুতি দেন। সমস্যা সমাধানে এলাকা থেকেই কথা বলেন জেলাশাসকের সঙ্গে। তার পরে বিক্ষোভ থামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, কমবেশি শপাঁচেক বাসিন্দার বাস আলিপুর গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা সাগর চৌধুরী, মেহেদি হাসান চোধুরী, ডালিম মণ্ডলেরা জানান, গ্রামে গভীর নলকূপ থাকলেও একটির জলও পানের যোগ্য নয়। আশপাশের তাপাসপুর, এলেমা গ্রাম, আল আমিন মিশন , এমনকি চিনপাই থেকেও কষ্ট করে পানীয় জল বয়ে আনতে হয়। জিকরিয়া মণ্ডল, কবিরুল ইসলাম চৌধুরীদের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিনের সমস্যা যাতে মেটে, তার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত-প্রশাসনকে বহুবার জানানো হয়েছে। বিকাশ রায়চৌধুরী যখন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন, তখনও ভোটের প্রচারে তাঁর কাছে নীয় জলের সঙ্কট মেটানোর আর্জি জানানো হয়েছিল।’’ গ্রামবাসীদের দাবি, তিনি সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রতি দিলেও কাজের কাজ না-হওয়ায় প্রতিবাদের এই রাস্তা বাছতে হয়েছে তাঁদের।

বিকাশ বলেন, ‘‘ওই গ্রামে জলের সমস্যা রয়েছে জেনে একটি সাবমার্সিবল বসানো হয়েছিল। কিন্তু, সেটির জল খারাপ। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা হবে। আমি সভাধিপতিও। একটা সাবমার্সিবল বসানোর জন্য আমাকে খুব বেশি ভাবতে হবে না। তবে যাঁরা দাবি করছেন, পাঁচ বছর ধরে সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়েছেন, তাঁরা ঠিক বলছেন না।’’

আবাস যোজনা নিয়েও এ দিন একগুচ্ছ আর্জি শুনেছেন বিকাশ। কেউ বলেছেন দলের কর্মী হয়েও মাটির বাড়িতে বাস করছেন। কারওলদাবি, কয়েক বছর আগে আবাস যোজনার ঘর পেলেও শেষ কিস্তির টাকা পানানি। আর্জি ছিল নিকাশি নিয়েও। এ দিন চিনপাই উপস্থাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে বিধায়ক শোনেন, ব্লাড প্রেশার ও সুগারের ওষুধ অনিয়মিত। আবাস নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে না-পারলেও বাকি সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন সভাধিপতি।

Didir Suraksha Kavach kirnahar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy