প্রাক্তন উপাচার্য রজতকান্ত রায়ের প্রয়াণে শোক বিশ্বভারতীতে। বুধবার বিকালে কলকাতায় প্রয়াত হন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ রজতকান্ত। তাঁর প্রয়াণে অধ্যাপক, কর্মী থেকে শুরু করে শোকাহত বিশ্বভারতী পরিবার।
২০০৬ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে যোগ দেন রজতকান্ত। এর পরে পাঁচ বছর বিশ্বভারতীর উপাচার্য ছিলেন তিনি। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, তাঁর সময়েই মূলত বিশ্বভারতীর স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও ঐতিহাসিক বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। বিশ্বভারতীর নানা আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। একবার কর্মীদের নাগাড়ে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পাল্টা ছাতিমতলায় গীতবিতান হাতে নিয়ে বসে পড়েছিলেন রজতকান্ত। আবার বিভিন্ন সময়ে সমস্যার সমাধান করেছেন সহজ সরল ভাবে।
২০০৮ সালে বিশ্বভারতীর তৎকালীন আচার্য তথা প্রয়াত ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এসেছিলেন বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। ওই অনুষ্ঠানে রজতকান্তের প্রশংসনীয় ভূমিকা নিয়ে আজও চর্চা হয় বিশ্বভারতীতে। রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি এক জন অগ্রগণ্য ইতিহাসবিদ ছিলেন। শান্তিনিকেতন আশ্রমের যে একটি আধ্যাত্মিক ভিত্তি রয়েছে, তা তিনি বিশ্বাস করতেন। আশ্রমের ঐতিহাসিক ভবনগুলি সংরক্ষণের ব্যাপারে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।” বিশ্বভারতীর প্রাক্তন শিক্ষক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “রজতকান্ত রায় অতি সাধারণ জীবন যাপন করতেন। বিশ্বভারতীর উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু কাজ করে গিয়েছেন। ওঁর মতো মানুষের প্রয়াণে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।”
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপিকা সবুজকলি সেনের কথায়, ‘‘ওঁর মতো মানুষের চলে যাওয়ায় আমিই মর্মাহত। ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে শূন্যতার সৃষ্টি হবে।” বিশ্বভারতীর ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক তথা ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, “রজতকান্ত রায় আমার মাস্টারমশাই ছিলেন। বহু গুণী মানুষের সান্নিধ্য আমি পেয়েছি। কিন্তু, উনি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মাস্টারমশাই। তাঁর চলে যাওয়া খুবই দুঃখের।’’ তিনি জানান, বিশ্বভারতীর তরফে রবীন্দ্র-সপ্তাহের পরে রজতকান্তের স্মৃতির উদ্দেশে বিশেষ উপাসনা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)