রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ত্রিপুরার রাজকুমার রাধিকাকিশোর মানিক্য। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
প্রস্তাব এসেছিল। অবশেষে তা বাস্তবায়িত হওয়ার পথে। ত্রিপুরার রাজবংশের সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের যোগাযোগের ইতিহাস বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের গ্যালারিতে স্থান পেতে চলেছে। রবীন্দ্রভবন কর্তৃপক্ষের আশা, অনেকে এই গ্যালারিটি দেখতে আসবেন।
কলকাতার ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে ত্রিপুরার মানিক্য রাজবংশের ‘নিবিড়’ সম্পর্ক ছিল। সে সম্পর্ক স্মরণে রাখতে শান্তিনিকেতনে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার জন্য গত বছরের অক্টোবরে বিশ্বভারতীর আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেন ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহাকে চিঠি লিখেছিলেন ‘খোয়াই সাহিত্য সংস্কৃতি সমিতি’র সম্পাদক তথা বিশ্বভারতী প্রাক্তন শিক্ষক কিশোর ভট্টাচার্য।
সেখানে দাবি করা হয়েছিল, এই সংগ্রহশালাটি গড়ে উঠলে পর্যটকেরা যেমন আকর্ষিত হবেন, তেমনই গবেষকেরা নানা ভাবে উপকৃত হবেন। কারণ, ইতিহাস বলছে, রাজা বীরচন্দ্র মানিক্যের আগেই ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে ত্রিপুরার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে ত্রিপুরার মানিক্য রাজবংশের সম্পর্ক বীরচন্দ্রের আমলে বিকশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে মানিক্য বংশের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়। বীরচন্দ্র তাঁর সচিবকে পাঠিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ করার জন্য। শান্তিনিকেতন আশ্রম গড়ে তুলতে ও পরে নানা কাজে ত্রিপুরার রাজ পরিবার আর্থিক সাহায্য করেছে। ত্রিপুরা এবং ত্রিপুরার রাজ পরিবার রবীন্দ্রনাথের ‘রাজর্ষি’ উপন্যাস ‘বিসর্জন’ নাটকের পটভূমি হিসেবে উঠে এসেছে। ত্রিপুরার শেষ রাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য রবীন্দ্রনাথকে ‘ভারত ভাস্কর’ উপাধি দিয়েছিলেন।
এ ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সংগ্রহালয় গড়ে তুলতে চিঠি লিখেছিলেন কিশোর। তিনি বলেছিলেন, “আমরা চাই ত্রিপুরার সঙ্গে বিশ্বভারতীর সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে তুলতে বিশ্বভারতীতে এ ধরনের একটি সংগ্রহশালা গড়ে উঠুক।”
রবীন্দ্রভবন সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে আলাদা সংগ্রহশালা করার মত জায়গা না-থাকায় রবীন্দ্রভবন গ্যালারিতেই একটি প্যানেল তৈরি করে সেখানেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ত্রিপুরার যোগসূত্রের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। রবীন্দ্রনাথের ত্রিপুরা যাত্রার সময়ের নানা ছবি, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ত্রিপুরার মানিক্য রাজবংশের বেশ কিছু টেলিগ্রাম ও চিঠির কপি এই গ্যালারিতে স্থান পাবে।
এ দিন কিশোর বলেন, ‘‘এত দিন পরে রবীন্দ্রভবনে ত্রিপুরা ও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যে বিশেষ তথ্যাবলি রাখা হচ্ছে তাঁর জন্য আমরা বিশেষ ভাবে বিশ্বভারতীর কাছে কৃতজ্ঞ। এতে আগামিদিনে উভয় রাজ্যের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।’’
ইতিমধ্যেই সেই প্যানেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে রবীন্দ্রভবন সূত্রের খবর। রবীন্দ্রভবনের ডিরেক্টর অমল পাল বলেন, ‘‘ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে ত্রিপুরার যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। তাই পর্যটকদের জন্য ত্রিপুরার কিছু তথ্যাবলি এ বার থেকে আমরা রবীন্দ্রভবনের গ্যালারিতে রাখতে চলেছি। এতে পর্যটকেরা বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন বলে আমি আশা রাখি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy