E-Paper

বিদ্যুৎ চুরি রুখে লক্ষ্মীলাভ দফতরের

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিদ্যুৎ চুরি রুখতে কড়া হতেই মিলতে শুরু করেছে ফল। চলতি অর্থবর্ষ শেষের আগেই প্রায় ৪ কোটি টাকা জরিমানা বাবদ আয় হয়েছে বলে দাবি বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের। এতে সামগ্রিক ভাবে লোকসানের অঙ্ক কমাতে পারা গিয়েছে বলে মত দফতরের আধিকারিকদের একাংশের।

দফতরের রিজিয়োন্যাল ম্যানেজার রজত টিকাদার জানান, জেলায় নানা ভাবে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছিল। তার ফলে দফতরের আয়ে প্রভাব পড়ছিল। ঘটনাটি নজরে আসতে তৎপরতা বাড়িয়ে জেলা জুড়ে নিয়মিত অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ছ’টি বিশেষ দল এ কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, গত দশ মাসে জেলার পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর ডিভিশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ৫৬৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে। মোট প্রায় ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা বাবদ দফতর আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। অতীতেও বিদ্যুৎ চুরি রুখতে অভিযান হয়েছে। তবে এ বারে জরিমানা আদায় নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট থানায় বিদ্যুৎ চুরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযোগ করা করেছিল।

দফতর সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ চুরির সব চেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে পুরুলিয়া ডিভিশনের ঝালদা এলাকায়। মিটারে কারচুপি করে, অসাধু উপায়ে যন্ত্র বসিয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কম বিল দিয়েছেন বহু গ্রাহক। রিজিয়োন্যাল ম্যানেজার জানান, পুরুলিয়া ডিভিশনে দায়ের হওয়া মোট ৩৮৪টি বিদ্যুৎ চুরির মামলার মধ্যে একশোর বেশি শুধু ঝালদাতেই। এর পরে রয়েছে বাঘমুণ্ডি। সেখানে বিদ্যুৎ চুরির ৭২টি মামলা দায়ের হয়েছিল। এ ছাড়া, ঝালদায় মোট জরিমানার অঙ্ক ৮৪ লক্ষ। বাঘমুণ্ডির ক্ষেত্রে তা ৬১ লক্ষ টাকা। এ দিকে, রঘুনাথপুর ডিভিশনে বেশি বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ উঠেছে নিতুড়িয়ার শালতোড়া এলাকায়। ৩৭টি মামলা রুজু হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক ৩৭ লক্ষ টাকা। পরেই আছে কাশীপুর। সেখানে ৩০টি মামলা করা হয়েছিল। জরিমানার মোট পরিমাণ ১৮ লক্ষ টাকা।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট থানাগুলি। দেখা গিয়েছে, দফতরের অভিযোগের সারবত্তা আছে। তার পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, আদালতে চার্জশিট জমা পড়লে জামিন নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী বকেয়া বিল ও জরিমানা বিদ্যুৎ দফতরে জমা দেওয়ার পরেই জামিন মিলবে। না হলে জেল হাজত অনিবার্য। বাধ্য হয়ে প্রায় সমস্ত অভিযুক্তই জরিমানা দিয়েই জামিন নিয়েছেন। আর তাতেই কোষাগার ভরেছে দফতরের।

রিজিয়োন্যাল ম্যানেজার বলেন, “অভিযানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মূলত সচ্ছল পরিবারগুলি বিদ্যুৎ চুরিতে জড়িত। তারাই বড় অঙ্কের বিদ্যুৎ চুরি করেছে। তুলনায় গরিব পরিবারগুলি সে ভাবে জড়িত নয়।” চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে এখনও দু’মাস বাকি। তার মধ্যে আরও বিদ্যুৎ চুরি সামনে এনে জরিমানা আদায় সম্ভব হবে বলেই মনে করেছে দফতর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy