Advertisement
E-Paper

ঘর-পালিয়ে আদ্রায় উদ্ধার 

বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া কিশোর এবং ভুল ট্রেনে চেপে আদ্রায় চলে আসা এক বালিকাকে একই দিনে উদ্ধার করল জিআরপি এবং ও আরপিএফ। সোমবার সন্ধ্যায় পর পর দু’জন উদ্ধার হয়। পরে তাদের তুলে দেওয়া হয় আদ্রার চাইল্ডলাইনের হাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৬
উদ্ধার হওয়া কিশোর ও বালিকা। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া কিশোর ও বালিকা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া কিশোর এবং ভুল ট্রেনে চেপে আদ্রায় চলে আসা এক বালিকাকে একই দিনে উদ্ধার করল জিআরপি এবং ও আরপিএফ। সোমবার সন্ধ্যায় পর পর দু’জন উদ্ধার হয়। পরে তাদের তুলে দেওয়া হয় আদ্রার চাইল্ডলাইনের হাতে। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে তাদের পেশ করে চাইল্ডলাইন। নির্দেশ মতো বালিকাকে পাঠানো হয় পুরুলিয়া শহরের আনন্দমঠ হোমে। আর কিশোরের ঠাঁই হয়েছে আদ্রার মণিপুরের হোমে।

চাইল্ডলাইনের আদ্রার সাব-সেন্টারের কর্মকর্তা মন্টু মাহাতো জানান, দুই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু হয়েছে। কিশোরের নাম অমিত মাহাতো। তার বাড়ি ঝালদা থানার তুলিনের বেঙ্গু গ্রামে। স্থানীয় মাড়ু মসিনা গ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে অষ্টম শ্রেণিতে সে পড়ে। তার বাবা পঙ্কজ মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে। তবে, তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আগে পরিবারের সঙ্গে বিশদে কথা বলা হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় আদ্রা স্টেশনে উদ্দেশ্যহীন ভাবে বছর বারো-তেরোর অমিতকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় রেলপুলিশের। তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে জানা যায়, রাগ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। জেরায় সে পুলিশকে জানিয়েছে, পড়াশোনা করা নিয়ে তার বাবা বকাঝকা করায় সোমবার সকালেই বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। ট্রেনে চেপে প্রথমে পুরুলিয়া স্টেশনে পৌঁছয়। সেখান থেকে বরাভূম-আসানসোল প্যাসেঞ্জার ট্রেনে সে আদ্রায় আসে।

মন্টুবাবু বলেন, ‘‘সোমবার রাতেই অমিতের বাবা পঙ্কজবাবুর সঙ্গে কথা হয়। মঙ্গলবার সকালে আদ্রায় আসেন পঙ্কজবাবু। কিন্তু ততক্ষণে অমিতকে নিয়ে চাইল্ডলাইনের কর্মীরা বিষ্ণুপুর রওনা হয়ে যান।’’

বস্তুত, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় শিশুকল্যাণ সমিতি না থাকায় আপাতত বীরভূমের শিশু কল্যাণ সমিতিকে এই দুই জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে এক দিন বীরভূমের শিশুকল্যাণ সমিতির কর্মকর্তারা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সুমঙ্গলম হোমে আসছেন। সারা সপ্তাহে উদ্ধার হওয়া শিশু, কিশোরদের সেখানেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ দিন অমিতের সঙ্গেই উদ্ধার করা শালু কুমারী নামের বছর এগারোর ওই বালিকাকে বিষ্ণুপুরে নিয়ে যান চাইল্ডলাইনের কর্মীরা।

শালুর পরিবারের ঠিকানা জোগাড় করতে যথেষ্ট মেহনত করতে হয়েছে চাইল্ডলাইনের কর্মীদের। তার কাছ থেকে চাইল্ডলাইনের কর্মীরা জানতে পেরেছেন, বিহারের ভাগলপুরের মুণ্ডিচক এলাকায় তাদের বাড়ি। তবে, শালুর বাবা মারা যাওয়ায় মা জ্যোতিদেবী তাকে ঝাড়খণ্ডের বোকারোর এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসেন। সেখানে বাড়ির কাজকর্ম করত ওই বালিকা।

মন্টুবাবু জানান, উদ্ধারের পর মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য তুমুল কান্নাকাটি জুড়েছিল শালু। বহু কষ্টে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে সে খবর পায়, ভাগলপুরে বাড়িতে রান্না করার সময়ে প্রেসার কুকার ফেটে তার মা জখম হয়েছেন। তারপর থেকেই বাড়ি ফেরার জেদ ধরেছিল সে। সোমবার সকালে সেই আত্মীয় তাকে বোকারোর স্টেশনে ট্রেন তুলে দেন। কিন্তু, আসানসোলে নেমে কোন ট্রেন ধরবে বুঝতে না পেরে সে আদ্রার একটি ট্রেনে চেপে পড়ে।’’

ওই ট্রেনেরই কয়েকজন যাত্রী একা একটি কিশোরীকে অঝোরে কাঁদতে দেখে আরপিএফ ও চাইল্ডলাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে আদ্রার আরপিএফ ট্রেন থেকে উদ্ধার করে শালুকে।

ভাগলপুরের চাইল্ডলাইনের মাধ্যমে শালুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্টুবাবু।

Missing Adra Child Line
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy