Advertisement
০১ ডিসেম্বর ২০২৩
Self Reliant Lesson

স্বনির্ভর হয়ে স্বনির্ভরতার পাঠ দিচ্ছেন পাপিয়ারা

পাপিয়ার মতো মল্লারপুর থানার মহুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা আলপনা বাগদিও ২০২১ সালে মল্লারপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।

চলছে প্রশিক্ষণ। মল্লারপুরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়।

চলছে প্রশিক্ষণ। মল্লারপুরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়। —নিজস্ব চিত্র।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 
মল্লারপুর শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৩
Share: Save:

নিজেরা পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বনির্ভর হয়েছেন। এ বার অন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দুর্গাপুজোর সময়ে স্বনির্ভরতার সুযোগ করে দিচ্ছেন তাঁরা। রামপুরহাট মহকুমার ময়ূরেশ্বর ১ ও ২, রামপুরহাট ১ ও ২-সহ মহম্মদবাজার— এই পাঁচটি ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরলেই এমন মহিলাদের খোঁজ মিলবে।

এই মহিলারা সালোয়ার-কামিজ, ব্লাউজ, লাহেঙ্গা, চুড়িদার থেকে বাচ্চাদের পোশাক—নানা ধরনের পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পুজোর সময়ে মল্লারপুর, সাঁইথিয়ার নানা দোকানে অর্ডার মতো পোশাক তৈরি করেন। পাশাপাশি, স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাকও তৈরি করেন। সারা বছর নিজেদের কাজের পাশাপাশি সেলাই শিখতে ইচ্ছুক গ্রামের অন্য মহিলাদের প্রশিক্ষণও দেন। সংসার সামলিয়ে এ সব কাজ করে সাড়ে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মতো আয় হয় বলে জানালেন তাঁরা।

মল্লারপুর থানার ঝিকড্ডা গ্রামের পাপিয়া রাহা বলেন, ‘‘২০২১ সালে মল্লারপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীন ১৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। পরে ওই সংস্থা আমাদের একটি সেলাইয়ে যন্ত্র দিয়েছিল। সেই সেলাই যন্ত্রের মাধ্যমে কাজ করে মাসে অন্তত চার হাজার টাকা আয় হয়। দুর্গাপুজো, ইদের সময়ে আয় বাড়ে।’’ পাপিয়ার কাছে ময়ূরেশ্বর থানার ষাটপলশা, ব্রাহ্মণবহড়া, মল্লারপুর থানার হাজিপুর, গোড়লা, মহুরাপুর এলাকার প্রায় ৪০ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের সেলাই যন্ত্রের ব্যবস্থা করেছেন এবং মহিলারাও যাতে কাজ পায় তারও ব্যবস্থা করেছেন পাপিয়া। পুজোর সময়ে কাজের চাপ সামাল দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের কাজ দিয়েছেন।

পাপিয়ার মতো মল্লারপুর থানার মহুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা আলপনা বাগদিও ২০২১ সালে মল্লারপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সেলাইয়ের যন্ত্রও পেয়েছিলেন আলপনা। সেলাইয়ের কাজ করে এখন আলপনার মাসে তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় হয়। আলপনাও গ্রাম ও আশপাশের আট জন মহিলাকে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

পাপিয়া, আলপনার মতো মল্লারপুরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে ২০২১ সালে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে মল্লারপুর থানার কোট গ্রামের শিউলি বিবি, সোঁজ গ্রামের মৃণ্ময়ী সূত্রধর, মালঞ্চি গ্রামের পূর্ণিমা সূত্রধরের মতো ৫০ জনকে ১৫ দিন করে মোট ৩০ দিন দু’ধাপে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

মল্লারপুরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক সাধন সিংহ বলেন, ‘‘২০২১ সালে ৫০ জন মহিলাকে আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ওই সমস্ত মহিলাদের একটি করে সেলাইয়ের যন্ত্র দেওয়া হয়। ওই মহিলারা যেমন নিজেরা স্বনির্ভর হয়েছেন তেমনি অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE