দুবরাজপুরে লোবা-কাণ্ডের দু’বছর পূর্তিতে ফের আন্দোলেন জিইয়ে রাখার অঙ্গীকার করল কৃষিজমি রক্ষা কমিটি। দু’বছর আগের সেই ৬ নভেম্বরের কথা স্মরণে রেখে বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্না মঞ্চে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল কমিটি। সেখানে আহ্বান জানানো হলেও সিপিএম বা শাসকদলের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বিজেপি, কংগ্রেস, পিডিএস, আদিবাসী গাঁওতার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। তাঁরা কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
লোবা-কাণ্ডের দু’বছর পূর্তিতে ফের আন্দোলেন জিইয়ে রাখার অঙ্গীকার করল কৃষিজমি রক্ষা কমিটি। দু’বছর আগের সেই ৬ নভেম্বরের কথা স্মরণে রেখে বৃহস্পতিবার বিকেলে লোবা ধর্না মঞ্চে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল কমিটি। সেখানে আহ্বান জানানো হলেও সিপিএম বা শাসকদলের কোনও প্রতিনিধি এ দিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সমাবেশে যোগ দিয়ে কংগ্রেস, পিডিএস আদিবাসী গাঁওতা এবং বিজেপির মতো রাজনৈতিক দল জমি আন্দোলনে কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পাশে থাকার আশ্বাস দিল।
মাস কয়েক আগে শমীক ভট্টাচার্যের পরে এ দিন বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি সুভাষ সরকারের উপস্থিতি যথেষ্ট অর্থবহ। প্রসঙ্গত ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর লোবায় প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লা খনি গড়ার বদলে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসনের দাবিতে খনি গড়তে আসা সংস্থার মাটিকাটার যন্ত্র আটকে আন্দোলন করছিলেন কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী। ওই যন্ত্র উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশি অভিযানে আহত হয়েছিলেন ছয় জন গ্রামবাসী। সেদিনের ওই ঘটনাকে ঘিরে কয়েক মাস উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। যে ঘটনা বিরোধীদের হাতে সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রও তুলে দিয়েছিল।
কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সেই আন্দোলনের অভিঘাত এখন অনেক স্থিমিত। শুধু লোবার ধর্না মঞ্চের পাশে পড়ে রয়েছে মাটি কাটার যন্ত্রটি। সবচেয়ে বড় কথা, যে সংস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন সেই সংস্থা ওই ঘটনার পর শুধু জমিকেনা বেচা বন্ধই করেনি গত অগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের অবৈধ কয়লা ব্লক বন্টন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরে ওই সংস্থার হাত থেকে লোবার জয়দেব-খাগড়া নামে প্রস্তাবিত কয়লাখনির বরাতও বাতিল হয়ে গিয়েছে। তা হলে কীসের আন্দোলন? তা হলে সেই মৃতপ্রায় উদ্দেশ্যহীন লোবা অন্দোলনকে ঘিরে বিজেপির কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পাশে দাঁড়ানোর যুক্তি কী? প্রকাশ্যে কিছু না বললেও দু’পক্ষই একে অপরের ফায়দা দেখছে বলে অনেকে মনে করছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদল লোবা পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করলেও কোথাও শাসকদলের প্রতি একটা অসন্তোষ রয়ে গিয়েছে। সেটা কাজে লাগিয়ে জেলায় ক্রমবর্ধমান সংগঠনকে আরও মজবুত করার লক্ষ্য নিয়েই বিজেপি এগোচ্ছে মনে অভিমত। পাশাপাশি কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে ভবিষ্যতে কয়লা ব্লক বন্টনের পর নিজের ন্যায্য দাবি আদায়ে বড় ভূমিকা নিতে পারে বিজেপি সেই ভাবনা থেকেই বিজেপির উপস্থিতিতে রীতিমতো উৎফুল্ল কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। এ দিন সভা থেকে তেমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, “আন্দোলনে আপনাদের পাশে থাকব এবং আইনগতভাবে সাহায্য করব।” কেমন সাহায্য? সুভাষবাবু বলেন, “ওই ঘটনায় এখনও এখানকার বহুজনের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামালা ঝুলছে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য সরকার। অভিযুক্তদের জামিন পর্যন্ত হয়নি। অথচ ওঁরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছিলেন।”
কী বলছেন কৃষিজমি রক্ষা কমিটির নেতারা? সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার, সভাপতি ফেলারাম মণ্ডলেরা বলছেন, “এটা সম্পূর্ন অরাজনৈতিক মঞ্চ। তবে মূল স্রোতে থাকা বিজেপির মতো বড় দল পাশে থাকলে নিশ্চই সুবিধা পাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy