সকালে জলখাবার বলতে সামান্য ছোলা-মুড়ি। আর বেলায় খিচুড়ি, মানে হলুদ জলের ভাত। সয়াবিন বা ডিমের বালাই নেই। একাধিকবার তাগাদা দিলে পাতে ডিমের দেখা মেলে। শুধু তাই নয়, বিনা কারণে রান্নাও বন্ধ হয়ে যায় কখনও সখনও। পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নিয়ে এমনই অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবিতে এ বার সরাসরি জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন এলাকার বাসিন্দারা।
জয়পুর ব্লকের সিধি-জামড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ডামরু গ্রামের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেটি যে কর্মীর দায়িত্ব রয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগে সরব এলাকার বাসিন্দারা। লিখিত অভিযোগে তাঁরা জানিয়েছেন, এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আওতাধীন এলাকায় অপুষ্ট শিশু চিহ্নিতকরণ নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই। রক্তাল্পতায় আক্রান্ত কোনও শিশু বা তার মাকে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে তাও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী জানান না বলে অভিযোগ। সবচেয়ে বড়কথা শিশুদের জন্য সরকার কী কী বরাদ্দ রয়েছে তার কোনও তালিকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে টাঙানো নেই। কোনও অভিভাবক এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই কর্মী তা জানাতে চান না বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সকালের জলখাবার বলতে একমুঠো মুড়ি ও সামান্য ছোলা দেওয়া হয়। পরে খিচুড়ির নামে হলুদ জলের ভাত দেওয়া হয়। অপুষ্ট শিশুদের সয়াবিন দেওয়ার কথা থাকলেও তা থাকে না বলে অভিযোগ।
এমনই নানাবিধ অভিযোগে সরব হয়ে এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, একই অভিযোগ এর আগে এই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজরকে জানানো হয়েছে। তবু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। স্থানীয় সিধি-জামড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সৃষ্টিধর রাজোয়াড় অভিযোগ করেছেন, “ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীর নিজের ইচ্ছা মতো তাঁর কেন্দ্র চালান। খাবারের পরিমাণ ও মান নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। অপুষ্ঠ শিশুদের জন্যই এই কেন্দ্রগুলি কাজ করছে। কিন্তু সেই কাজের মান নিয়েই যদি প্রশ্ন ওঠে তা হলে প্রশাসনের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।” তিনি নিজেও গ্রামবাসীদের সঙ্গে অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।
ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজর প্রতিমা মণ্ডল বলেন, “আমিও অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখতে ওই কেন্দ্রে যাব।” একই কথা শুনিয়েছেন জয়পুরের ভারপ্রাপ্ত সিডিপিও বিনোদবিহারী মুর্মুও। তাঁর কথায়, “ওই কেন্দ্রে আমি নিজে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যাব।” আর যে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই প্রমিলা গোপের দাবি, “আমি অসুস্থ। যা বলার সিডিপিওকে জানিয়েছি। উনি এ ব্যাপারে যা বলার বলবেন।” এই প্রকল্পের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নীলিমা দাস চৌধুরী বলেন, “ওই কেন্দ্র সম্পর্কে এরকম অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। আমি এই কেন্দ্রটি নিয়ে সিডিপিওর কাছ থেকে রিপোর্ট চাইব। বিডিও-র সঙ্গেও কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy