চাষিদের জন্য আসা সরকারি গমের বীজ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কৃষি কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে অভিযোগকারী খোদ তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্য। রামপুরহাটের ঘটনা।
অভিযুক্ত কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বামাচরণ মজুমদারের বাড়ি রামপুরহাট থানার সাদীনপুর গ্রামে। তিনি রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ। আর অভিযোগকারী আয়াষ পঞ্চায়েতের সদস্য আকবর আলি। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে খোদ এলাকার বিধায়ক তথা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এ ব্যাপারে জানিয়েছেন। আশিসবাবুর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, “ঘটনা সত্যি নয়।” পরে অবশ্য বলেন, “এ রকম ঘটনা হয়ে থাকলে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আশিসবাবু দলেরই এক সদ্যসের করা অভিযোগের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও দলীয় পঞ্চায়েতের আর এক সদস্য তথা আয়াষ অঞ্চলের প্রাক্তন প্রধান দাপুটে নেতার দাবি, “চাষিদের চাষ করার জন্য বিলি করা গম বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপুরহাট থানার আখিড়া গ্রামের একটি আড়তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। খবর পেয়ে আমি কৃষি কর্মাধ্যক্ষের মদতপুষ্ট লোকজনকে তাড়া করে সেই গম নিয়ে আসি। এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার কথা দলীয় বিধায়ককে জানিয়েছিলাম।” আকবর আলির অভিযোগ, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত দলের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বামাচরণ মজুমদার-সহ আরও অনেকে আছেন।” অন্য দিকে, উদ্ধার হওয়া ১২৫ বস্তা গম আকবর আলি নিজে শুক্রবার সকালে চাষিদের বিলি করেছেন বলে নিজেই জানিয়েছেন।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সরব হয়েছে বিজেপি। দলের আয়াষ অঞ্চলের সভাপতি হরেকৃষ্ণ মণ্ডলের কটাক্ষ, “কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে বিধি মেনে একটি এলাকা ভিত্তিক উপভোক্তাদের তালিকা দেখে গম বিলি করার কথা। এক্ষেত্রে একজন তৃণমূল নেতা চুরি করল আর একজন তৃণমূল নেতা তার উপর বাটপাড়ি করে বসে থাকল!” অভিযুক্ত রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বামাচরণ মজুমদার অবশ্য দাবি করেছেন, “আমি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম না। আর আমার গম নয়। এলাকার চাষিদের গম আমি কেন বিক্রি করতে যাব।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “তাঁর (আকবর আলি) এলাকা বাছাই করা হয়নি বলে উনি জোর করে গম নিজের এলাকার চাষিদের বিলি করার জন্য নিয়ে গিয়েছেন।” রামপুরহাট ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক নীলাদ্রিশেখর বসাক বলেন, “১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষ প্রদর্শণীর জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ব্লকের আয়াষ পঞ্চায়েতের কাবিলপুর মৌজাকে বাছাই করা হয়। সে জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত মাস্টাররোল অনুযায়ী তাঁর উপস্থিতিতে নিয়ম মেনে ১২৫ বস্তা গমের বীজ বৃহস্পতিবার দেওয়া হয়েছে। এর পর কী হয়েছে আমাদের পক্ষে তা মনিটারিং করা সম্ভব নয়।”
অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ যাই থাক। তৃণমূল সূত্রের খবর, গমের বীজ বিক্রির সঙ্গে রামপুরহাট ১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি আনারুল হোসেন-সহ বামাচরণ মজুমদারের সাগরেদ সাদীনপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বপন ভট্টাচার্য, চন্দনকুন্ঠা গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী নজরুল শেখ জড়িত আছেন। রামপুরহাট ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “আমি দাদাকে নিয়ে কলকাতায় আছি। ঘটনার কথা আমাকে আশিসদা জানিয়েছেন। অথচ আমার নাম কী করে উঠছে বুঝতে পারছি না। তবে যতটুকু জানি কাবিলপুর এলাকার চাষিদের পাশাপাশি দাদপুর, মল্লিকপুর এলাকার চাষিদের জন্যও গম নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।” এ দিকে, ঘটনার নিন্দা করে রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের পম্পা মুখোপাধ্যায় (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাতো ভাইয়ের স্ত্রী) বলেন, “পারিবারিক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় আমি দিন সাতেক ধরে পঞ্চায়েত সমিতিতে যাচ্ছি না। যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তা নিন্দনীয়। কী ঘটেছে তা খোঁজ খবর নেব।” রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও নীতিশ বালা সরকারি প্রকল্পে গমের বীজ বিলির কমিটিতে আছেন। বিডিও বলেন, “আমি ছুটিতে আছি। তবে আমার কাছে এ ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।”
দুর্ঘটনায় জখম। পথ দুর্ঘটনায় জখম হলেন বোলপুরের বিজেপি ব্লক সভাপতি বলাই চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী। শুক্রবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে সিউড়ি থানা এলাকার সলখানা মোড়ে, সিউড়ি-বোলপুর রাস্তায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেই একটি চার চাকা নিয়ে সিউড়ি যাচ্ছিলেন বলাইবাবু। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়িটি একটি গাছে ধাক্কা মারে। আঘাত খুব একটা গুরুতর না হলেও বর্তমনে সিউড়ির একটি বেসরকরি নার্সিং হোমে তাঁরা ভর্তি রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy