Advertisement
E-Paper

চুরির কিনারা হয়নি, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ

চিত্র ১: ঘরে তালা দিয়ে নবমীর দিন বাড়ির পাশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন কেকা গঙ্গোপাধ্যায়রা। ঘণ্টা খানেক অনুষ্ঠান দেখে ফিরে দেখেন বাড়ির উঠোনের দরজা ভেতর থেকে লাগানো। হাঁকডাক করলে পড়শিরা ছুটে আসেন। দেখা যায়, তালা ভেঙে গয়না, টাকা, মোবাইল, ট্যাবলেট সবই নিয়ে গিয়েছে চোর। দুবরাজপুরের হেতমপুরের ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৭

চিত্র ১: ঘরে তালা দিয়ে নবমীর দিন বাড়ির পাশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন কেকা গঙ্গোপাধ্যায়রা। ঘণ্টা খানেক অনুষ্ঠান দেখে ফিরে দেখেন বাড়ির উঠোনের দরজা ভেতর থেকে লাগানো। হাঁকডাক করলে পড়শিরা ছুটে আসেন। দেখা যায়, তালা ভেঙে গয়না, টাকা, মোবাইল, ট্যাবলেট সবই নিয়ে গিয়েছে চোর। দুবরাজপুরের হেতমপুরের ঘটনা। পুজো উপলক্ষে বারাসত থেকে প্রতিবারের মতো এ বারও বিশ্বজিত্‌ গঙ্গোপাধ্যায় সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে পুজো দেখতে হাজির হয়েছিলেন।

চিত্র দুই: দুবরাজপুর পুরসভায় বাড়ি বানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী প্রবোধকালী মুখোপাধ্যায়। এক পরিচিতকে বাড়িতে রাতে ঘুমোতে বলে দশমীর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি দুবরাজপুরের বালিজুড়িতে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন সপরিবারে। রাতেই ওই পরিচিতের কাছ থেকে খবর পান তালা ভেঙে চুরি হয়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি বাড়িতে ফিরে দেখেন গয়না, নগদ টাকা এমনকী ব্যাঙ্ক লকারের চাবি, এটিএম কার্ড পর্যন্ত যত্নকরে নিয়ে গিয়েছে চোর।

উভয় পরিবারই দুবরাজপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ তদন্তে এসেছিল। ডায়েরির পাতায় লেখালেখি চলছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কোনও চুরিরই কিনারা হয়নি। শুধু ওই দু’টি ঘটনারই নয়, গত কয়কমাস ধরে চলতে থাকা একটার পর একটা চুরির ঘটনা ঘটলেও একটি ঘটনারও কোনও কিনারা করতে পারেনি দুবরাজপুর থানার পুলিশ। উদ্ধারও হয়নি চুরি হওয়া জিনিসপত্র। স্বাভাবিক ভাবে এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পুজোর মধ্যেই দুবরাজপুরে আরও চুরির ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এ ভাবে বাড়ির বাইরে না গিয়ে উপায় আছে? আর বাড়ির বাইরে বেরোলেই যদি চুরির ঘটনা ঘটে তা হলে পুলিশ আছে কিসের জন্য? দুবরাজপুর শহর ও হেতমপুরের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞাতা বলছে, ঘণ্টা দু’য়েকের জন্যও যদি বাড়ি ফাঁকা থাকে, অর্থাত্‌ গৃহস্থ যদি বাড়ির বাইরে থাকেন তার মধ্যেই কাজ হাসিল। বাড়িতে ঢুকে কাপালে চোখ উঠবে গৃহস্থের। কারণ, ততক্ষণে দরজার তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে টাকা-পয়সা, গয়না নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরের দল।

মাস দু’য়েক সময়ের মধ্যে হেতমপুর ও দুবরাজপুর শহরে অন্তত ১০-১২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় উদ্বিগ্ন দুবরাজপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে কিংবা হেতমপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের নিলোত্‌পল মুখাপাধ্যায়। তাঁরা বলছেন, “পুলিশের ভূমিকা আরও সদর্থক হতে হবে। চুরির কিনারা না হলে সমস্যা তো হবেই।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড়িতে বাড়িতে চুরির পাশাপাশি সাইকেল, মোটরবাইক, ক্লাব ঘরে থাকা টেলিভিশন প্রায়ই চুরি হচ্ছে। তবে সেই সব ঘটনারও কিনারা করতে পুলিশ ব্যার্থ। কী করছে পুলিশ? দুবরাজপুর থানার পুলিশ কর্মীদের দাবি, চুরির কিনারা হয়তো করা যেত, কিন্তু বাধ সেধেছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। পুলিশ কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সন্দেহভাজন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা। আর এতেই বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে তদন্ত প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে শাসকদল তৃণমূল।

অন্য দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অরুণ মিত্র বলেন, “গোটা রাজ্যেই একই ছবি। সেখানে দুবরাজপুর থানা আলাদা হয় কী করে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশের তো কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেটা পালনে ব্যর্থ দুবরাজপুর থানা। আমাদের লোকেরা অপরাধীদের ছাড়াতে থানায় যাচ্ছে এটা এই সময়ে আর বাস্তবোচিত নয়।” ঘটনার নিন্দা করেছেন দুবরাজপুর নাগরিক সমিতিক এক সদস্য কিশোর অগ্রবাল। তিনি বলছেন, “মনে হচ্ছে আমরা প্রশাসনহীন এক রাজ্যের বাসিন্দা।” এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

dubrajpur theft agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy