এবিভিপির তরফে এ দিন সিউড়ির বিভিন্ন স্কুলের গেট বন্ধ করা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিসস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
ছাত্র ধর্মঘট, না কি বনধ! ঠিক কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে তা জানতেন না দলের জেলা নেতৃত্ব। অথচ টিএমসিপি’র সন্ত্রাসে রাজ্য জুড়ে কলেজে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তাদের ছাত্র সংগঠন মনোনয়ন তুলতে পারেনি, এই অজুহাতে সোমবার সিউড়িতে ঘণ্টা দু’য়েকের কার্যত বন্ধ কর্মসূচি পালন করল বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি।
এবিভিপির জেলা সভাপতি রূপক মণ্ডল বলছেন, “সিউড়ি এবং রামপুরহাটে ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তবে ছাত্রধর্মঘট নয়, বন্ধই ডাকা হয়েছিল।” অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল অবশ্য বলেন, “এমন কোনও কর্মসূচির কথা আমার জানা নেই।”
সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ শহরের দু’টি স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মসজিদ মোড় সংলগ্ন এলাকায় দু’টি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্ক এবং বেশ কিছু দোকানপাট জোর করে বন্ধ করিয়ে বিভিন্ন জায়াগায় তাদের পতাকা ঝুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও কোন ছাত্র নেতাকে ওই কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বরং জনা কুড়ি কর্মী সমর্থককে নিয়ে একাজে নেতৃত্বে দেন বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে বিপক্ষ রাজনৈতিক দলের সমালোচনা রয়েইছে, সঙ্গে এ ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্ক বন্ধের কাজে মোটেও খুশি নন এলাকাবাসীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী, অভিভাবক, ব্যাঙ্কের গ্রাহকের বলছেন, “ছাত্র-ছাত্রী ও মানুষের অসুবিধা করে এটা কেমন প্রতিবাদ।” স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “এটা ছাত্রধর্মঘটই। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এবিভিপি-র পতাকা আমাদের ছেলেরা লাগিয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, এবিভিপি’র সদস্যরা সিউড়ি আরটি গার্লসস্কুলে প্রথমে যান। সেখানে দরজার বাইরে পতাকা লাগিয়ে স্কুলের প্রাথমিক সেকশন বন্ধ করতে বলেন। একই ভাবে সিউড়ি জেলা স্কুলের প্রাথমিক স্কুলের পঠনপাঠনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। জেলা স্কুলের সামনে থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং মসজিদ মোড় সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছু দোকনপাট ও আরও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক জোর করে বন্ধ করে দেওয়া অভিযোগ উঠে এবিভিপি’র বিরুদ্ধে। তবে স্বাগতাদেবীর দাবি, “রাজ্য জুড়ে মানুষ দেখেছেন কলেজগুলির ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ঠিক কী হয়েছে। তার প্রতিবাদে কেউ কেউ স্বতঃফূর্ত ভাবে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কাউকেই জোর করা হয়নি।” কেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি বন্ধ করে গ্রাহকদের সমস্যায় ফেলা হল? তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি বিজেপির মহিলা নেত্রীর কাছে।
ঘটনা যখন চলছে ঠিক তখনই আসরে নেমে পড়ে তৃণমূল। সিউড়ির তৃণমূল উপপুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ও দলের শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার-সহ দলের কর্মী-সমর্থকেরা স্কুল ও দোকানপাট খোলার জন্য এগিয়ে আসেন। দুই রাজনৈতিক দল মুখোমুখী সংঘাত হয়নি পুলিশ হাজির থাকায়। তবে পুলিশ ও তৃণমূল এলেও বন্ধ থাকা দোকানপাট খুলতে রাজি হননি অনেক ব্যবসায়ী। তাঁদের কথায়, “ঝুঁকি নিয়ে লাভ কী!” সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অচলাবস্থা চলতে থাকার পর ফের স্বাভাবিক হয়। তবে কিছুক্ষণের জন্য পঠনপাঠন বিঘ্ন ঘটেছে বলে দু’টি স্কুল সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy