Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

টাকা উধাও, ব্যাঙ্কে তালা

মাস তিনেক আগে জীবন বিমার চেক জমা দিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে। কিন্তু টাকা তুলতে এসে শোনেন, সিংহ ভাগ টাকাই লোপাট হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও সদুত্তর না পেয়ে ব্যাঙ্কেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন গ্রাহকের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে, ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার লোকপাড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায়। ব্যাঙ্ক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসে ওই শাখায় প্রায় ৬৮ হাজার টাকা জীবন বিমার একটি চেক জমা দেন স্থানীয় বাঁধগ্রামের মিঠু দাস।

ময়ূরেশ্বরের এই ব্যাঙ্ক ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র

ময়ূরেশ্বরের এই ব্যাঙ্ক ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫৪
Share: Save:

মাস তিনেক আগে জীবন বিমার চেক জমা দিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে। কিন্তু টাকা তুলতে এসে শোনেন, সিংহ ভাগ টাকাই লোপাট হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও সদুত্তর না পেয়ে ব্যাঙ্কেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন গ্রাহকের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে, ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার লোকপাড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায়। ব্যাঙ্ক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসে ওই শাখায় প্রায় ৬৮ হাজার টাকা জীবন বিমার একটি চেক জমা দেন স্থানীয় বাঁধগ্রামের মিঠু দাস। এদিন ব্যাঙ্কে তিনি টাকা তুলতে যান। আগেই না কি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে, এ কথা শুনেই আকশ ভেঙে পড়ে মিঠু দেবীর মাথায়। তাঁর দাবি, “ওই চেক জমা দেওয়ার পর, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে এক পয়সাও তোলা হয়নি। অথচ কী করে ৪৫ হাজার টাকা উধাও হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।” তাঁর অভিযোগ, “টাকা তোলার সময়ে নথিতে যে স্বাক্ষর রয়েছে তার সঙ্গে সই মিলিয়ে দেখা হোক। সে দাবিও খারিজ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।” ঘটনার কথা জানাজানি হতেই মিঠুদেবীর বাড়ির লোকজন এবং স্থানীয়রা ব্যাঙ্কে জড়ো হন। তাঁরা অবিলম্বে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করায় বেলা ১১টা নাগাদ তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। ঘণ্টা দু’য়েক পর অবশ্য পুলিশের হস্তক্ষেপে তালা খোলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা ওই ব্যাঙ্কে নতুন নয়। এর আগেও অন্যের সই নকল করে টাকা তোলার ঘটনা ঘটেছে। ব্যাঙ্কের কিছু অসাধু কর্মী এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলেও অভিযোগ।

বছর খানেক আগে এই ব্যাঙ্কে ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন সৌম্য মুখোপাধ্যায়। তার পর থেকেই ব্যাঙ্কে পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। লোকপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষক খোকন পটুয়া বলেন, “সম্প্রতি বাড়ি তৈরি করার জন্য ওই ব্যাঙ্কে একটি ঋণের আবেদন করি। প্রতি মাসে আমার ওই ব্যাঙ্ক থেকেই বেতন ওঠে। অথচ ম্যানেজার নিজের মর্জি মাফিক নিয়ম খাড়া করে আমাকে অনর্থক দিনের পর দিন হয়রানি করেছেন। অথচ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরই শেষে আমাকে ঋণ দিতে বাধ্য হয়েছেন।” একই অভিযোগ স্থানীয় নবগ্রামের লক্ষ্মণ টুডুরও। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনায় তাঁর একটি ঋণ অনুমোদন করে জেলার ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতর। কিন্তু ব্যাঙ্ক তাঁকে ঋণ দেয়নি। অথচ আর্থিক লেনদেনের ভিত্তিতে এমন অনেককে ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন, যাঁরা ব্যবসাই করেননি। এ দিন অবশ্য ম্যানেজার সৌম্য মুখোপাধ্যায় ছুটিতে ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার তথা ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসার দেবজ্যোতি পাল বলেন, “কী করে ওই গ্রাহকের টাকা উঠে গেল তা খতিয়ে দেখার জন্য সাত দিন সময় নেওয়া হয়েছে। সব কিছু খতিয়ে না দেখে, এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।” যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার সৌম্যবাবু বলেন, “আমি ছুটি তে রয়েছি। তাই সব কিছু খোঁজ না নিয়ে, কোনও অভিযোগ প্রসঙ্গেই কিছু বলতে পারব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE