Advertisement
E-Paper

নির্দেশই সার, প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা তৃণমূলের

গ্রাম পঞ্চায়েত চালাতে গিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। সে কথা কানে তুললে তো! বাঁকুড়া জেলার একের পর এক পঞ্চায়েতে তৃণমূলেরই অন্য গোষ্ঠীর সদস্যেরা দলেরই প্রধানকে সরাতে আনাস্থা আনছেন। কোথাও আবার প্রয়োজনে বিরোধীদের সঙ্গে হাতও মেলাচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪৩

গ্রাম পঞ্চায়েত চালাতে গিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। সে কথা কানে তুললে তো! বাঁকুড়া জেলার একের পর এক পঞ্চায়েতে তৃণমূলেরই অন্য গোষ্ঠীর সদস্যেরা দলেরই প্রধানকে সরাতে আনাস্থা আনছেন। কোথাও আবার প্রয়োজনে বিরোধীদের সঙ্গে হাতও মেলাচ্ছেন।

এ বার রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দর পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন উপপ্রধান সহ দলেরই কয়েকজন সদস্য। এই পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার পিছনে দলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর বিবাদকেই দায়ী করছেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। সম্প্রতি দলেরই এক গোষ্ঠীর আনা অনাস্থায় হেরে গিয়ে সিমলাপাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অপসারিত হয়েছেন। এই ঘটনায় ফের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়ল।

শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে ৮ জন প্রার্থী জিতেছেন। ৩ টি আসনে জয়ী হন সিপিএমের প্রার্থীরা, বাকি একটি আসনে নির্দল হিসাবে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হন। প্রধান নির্বাচনের আগের দিনই সিপিএমের ৩ জন প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেন। প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের রাইপুর ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্লকের আর এক নেতা অনিল মাহাতোর গোষ্ঠীর বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। প্রধান ও উপপ্রধান পদে দুই গোষ্ঠীর দু’জন করে প্রার্থীই ৬টি করে ভোট পান। শেষে অনিলবাবুর গোষ্ঠীর দিলীপ টুডু প্রধান এবং নির্দল বুদ্ধদেব মাহাতো উপপ্রধান নির্বাচিত হন। এলাকার রাজনীতিতে বুদ্ধদেববাবু ব্লক সভাপতির অনুগামী বলেই পরিচিত। প্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে উপপ্রধান-সহ ৭ জন সদস্য মঙ্গলবার বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন। রাইপুরের বিডিও দীপঙ্কর দাস বলেন, “শ্যামসুন্দরপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ ৭ জন সদস্যের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি পেয়েছি। সদস্যদের তলবি সভায় ডাকা হবে। এখনও দিন ঠিক হয়নি।”

রাইপুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর সঙ্গে দলের জেলা কমিটির সদস্য অনিল মাহাতোর বিরোধ সর্বজনবিদিত। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে কলেজ ভোট, এমনকী সম্প্রতি প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কেন্দ্রীয় ছাত্রী আবাসের ঘটনাতেও এই বিরোধ প্রকাশ্যেই দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, অনিলবাবুর ঘনিষ্ঠ দিলীপ টুডু প্রধান থাকলেও উপপ্রধান রয়েছেন বুদ্ধদেব মাহাতো। যিনি এলাকার রাজনীতিতে অনিলবাবুর বিরোধী ভাস্কর মাহাতোর স্নেহধন্য বলেই পরিচিত। এর ফলে এই পঞ্চায়েতে প্রধানের সঙ্গে উপপ্রধানের ‘ঠান্ডা লড়াই’ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। উপপ্রধান কয়েকজন সদস্যকে নিজের পক্ষে নিয়ে এসে প্রধানকে পদচ্যুত করতে চাইছেন।

এই অনাস্থাকে ঘিরে শাসকদলের মধ্যে ‘ঘোড়া কেনা বেচার’ অভিযোগ তুলেছেন দলেরই নেতারাই। অনিলবাবুর অভিযোগ, “প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য এক পঞ্চায়েত সদস্যকে মোটা টাকার টোপ দেওয়া হয়েছে। সেই প্রলোভনে ওই সদস্য অনাস্থায় সই করেছেন বলে খবর পেয়েছি। এ সব করে এলাকায় সিপিএমকে অক্সিজেন জোগাচ্ছেন জগবন্ধুবাবুর লোকেরা।” স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি পঞ্চায়েত প্রধান। তবে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন। মন্তব্য করতে নারাজ উপপ্রধান বুদ্ধদেববাবুও। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জগবন্ধুবাবু অবশ্য দাবি করেন, “ঘটনাটি আমি জানতাম না। কেউ এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনও আলোচনাও করেনি। সমস্যা থাকলে তা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার পক্ষপাতী আমরা।”

নেতারা যাই বলুন, বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এই খেয়োখেয়িতে আখেরে এলাকার উন্নয়নের কাজই ব্যাহত হবে। তাঁদের মতে, ব্যক্তি স্বার্থ না দেখে, নেতারা এক হয়ে কাজ করলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোলা বঞ্চনার অভিযোগের তো জবাব দিতে পারতেন।

টাকা উধাও। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে সাইকেলের ঝোলানো থলিতে রেখেছিলেন এক ব্যক্তি। ব্যাঙ্কের সামনেই ভাইপোর গ্যারাজ। সেখানে গল্প করতে গিয়ে খোয়া গেল তাঁর টাকা-ভর্তি থলি। মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ মানবাজারের ঘটনা। স্থানীয় শালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলোক পাত্র ব্যাঙ্ক থেকে বেশ কয়েক হাজার টাকা থলিতে ভরে কাছেই ছিলেন। পরে খেয়াল করেন থলি উধাও। তাঁর ভাইপো গ্যারাজের মালিক সাগর পাত্রের আক্ষেপ, “আমি দোকানে ছিলাম না। কাকু যদি সাইকেলটা দোকানেও ঢুকিয়ে রাখতেন, তাহলে হয়তো টাকা খোয়া যেত না।”

raipur tmc no-confidence motion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy