Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুর-চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডেও তৃণমূলকে টেক্কা বিজেপি-র

বিধানসভার নিরিখে লোকসভা নির্বাচনে আশঙ্কাজনক ভাবে শুধু ভোট কমাই নয়, লোকসভার ফল বিচারে দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা রঘুনাথপুর পুরসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাচ্ছে তৃণমূল। শুধু তাই নয়, খোদ পুরপ্রধান-সহ পুরসভার দলনেতা ও প্রাক্তন উপ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডগুলিতেও তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। ১৩টি ওয়ার্ডের এই পুরসভায় তৃণমূলের রয়েছেন ৮ জন, ৩ বামফ্রন্টের এবং কংগ্রেসের ও এসইউসি-র ১ জন করে কাউন্সিলর।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০০:৩৮
Share: Save:

বিধানসভার নিরিখে লোকসভা নির্বাচনে আশঙ্কাজনক ভাবে শুধু ভোট কমাই নয়, লোকসভার ফল বিচারে দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা রঘুনাথপুর পুরসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাচ্ছে তৃণমূল। শুধু তাই নয়, খোদ পুরপ্রধান-সহ পুরসভার দলনেতা ও প্রাক্তন উপ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডগুলিতেও তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি।

১৩টি ওয়ার্ডের এই পুরসভায় তৃণমূলের রয়েছেন ৮ জন, ৩ বামফ্রন্টের এবং কংগ্রেসের ও এসইউসি-র ১ জন করে কাউন্সিলর। চার বছর আগে পুরভোটে বিজেপি এখানে খাতাই খুলতে পারেনি। কিন্তু এ বার লোকসভা ভোটের নিরিখে দেখা যাচ্ছে, পাঁচটি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ছ’টিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল, দু’টিতে এগিয়ে বামেরা। কংগ্রেস, এসইউসি শূন্য। রঘুনাথপুর পুরএলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ে মাত্র ৪৬০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। এক বছরের মাথায় পুর-নির্বাচন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি-র এই উত্থানে রক্তচাপ বাড়েছে তৃণমূল নেতাদের। পুরপ্রধান মদন বরাটের মন্তব্য, “পুরসভায় এই ফল কাঙ্খিত ছিল না। কেন এমন হল খতিয়ে দেখছি।”

টানা এক দশক ধরে রঘুনাথপুর পুরসভা পরিচালনা করছে তৃণমূল। এই পুরসভায় বিরোধী বামেরা কার্যত কোণঠাসা গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই। কিন্তু হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি। এমনকী রঘুনাথপুরে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম নয়, আসল লড়াই যে বিজেপি-র সঙ্গে হতে চলেছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে সে ব্যাপারে আগাম আঁচই পায়নি তৃণমূল। বরং তৃণমূল শিবিরের দাবি ছিল, পুরএলাকায় বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় লোকসভা নির্বাচনে তারা ব্যবধান বাড়াবে।

বাস্তবে কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত তথ্য উঠে এসেছে। পুরপ্রধানের নিজের ওয়ার্ড ৪ নম্বরে ৮০-র বেশি ভোটে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। রঘুনাথপুর পুরসভায় তৃণমূলের দলনেতা বিষ্ণুচরণ মেহেতার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও পিছিয়ে রয়েছে শাসক দল। প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান বাসুদেব তিওয়ারি-র ২ নম্বর ওয়ার্ডেও এগিয়ে বিজেপি। এ ভাবেই রঘুনাথপুর পুরএলাকায় বামফ্রন্টকে পিছনে ফেলে জনসমর্থনের হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি।

বিজেপি-র পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রঘুনাথপুরে আমরা আশাতীত ভালো ফল করেছি। মানুষকে ধন্যবাদ।” তাঁর দাবি, পুরসভায় বামেরা আগেই বিরোধিতা করার শক্তি ও মানসিকতা হারিয়ে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছিল। পাঁচটি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে এসেছে। আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে সামান্য কয়েকটি ভোটে তাঁরা পিছিয়ে থাকলেও বিকাশবাবুর দাবি, সামনের পুরনির্বাচনে ওই ওয়ার্ডগুলিতেও তাঁরা শক্তি বৃদ্ধি করবেন।

তৃণমূলের পুরপ্রধানের ব্যাখ্যা, “রঘুনাথপুরে আমরা যথেষ্ট উন্নয়নের কাজ করেছি। কিন্তু এই ফলের পেছনে রয়েছে দেশ জুড়ে বিজেপি-র হাওয়া। তবে লোকসভা আর পুরসভার নির্বাচন এক নয়। এ ছাড়া এই শহরে বিজেপি-র সাংগঠিনক শক্তিও নেই। ফলে পুরনির্বাচনে অন্য রকম ফলের আশঙ্কা-র কারণ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE