সংগঠনের অবস্থা এমনটাই ছিল যে, গত পুরভোটে অর্ধেক ওয়ার্ডে প্রার্থীই দিতে পারেনি দল। সেই দলই আবার ১৬টির মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে গিয়েছে গত লোকসভা ভোটের ফলের হিসেবে। এই পরিস্থিতিতে সাঁইথিয়া শহরে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের কাছে ওয়ার্ড পিছু একাধিক আবেদন জমা পড়ছে, এমনটাই দাবি করছেন বিজেপি নেতৃত্ব!
দলীয় সূত্রের খবর, আসন্ন পুরভোটকে ঘিরে প্রায় প্রতি দিনই বৈঠকে বসতে হচ্ছে শহরের বিজেপি নেতৃত্বকে। প্রার্থীর অনুমোদন নিয়ে কথাবার্তা চলছে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। সাঁইথিয়া পুরভোটে দলের দায়িত্বে থাকা জয়দেব পাল শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, “স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, বিগত পুরনির্বাচনগুলিতে আমরা সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারতাম না। আর এ বার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকেই ইতিমধ্যে একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। দিন সাতেকের মধ্যেই আমরা শহরের ১৬টি ওয়ার্ডের চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করব।” ক্ষমতাসীন তৃণমূলকে হঠিয়ে সাঁইথিয়া পুরসভা বিজেপি-র দখলে আসতে চলেছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
ঘটনা হল, প্রার্থী হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই সাঁইথিয়ায় শাসকদলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল শুরু হয়েছে। এমনকী, আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হওয়ার আগেই কিছু তৃণমূল নেতার নামে শহরে দেওয়াল লিখনও শুরু হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে আগেই এ গিয়ে থাকা বিজেপি শাসকদলের এই ‘দ্বন্দ্ব’কে মাথায় রেখে পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে চায়ছে। বিজেপি-র একটি সূত্রের খবর, দল ইতিমধ্যেই তৃণমূলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে যোগাযোগও রাখতে শুরু করেছে। প্রকাশ্যে তা স্বীকার না করলেও শহরের এক বিজেপি নেতার যুক্তি, “আমরা একটা সাধারণ ঐক্যে আসতে চাইছি। যাতে আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের বদলে এক, লড়াইয়ে যেতে পারি।”
এ দিকে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে বিঁধেছেন জয়দেববাবু। তিনি বলছেন, “মানুষ দেখছেন শাসকদলের সংস্কৃতি কী। এইটুকু শহরেই তাদের তিনটি গোষ্ঠী আসন নিয়ে দলাদলি শুরু করেছে। ওদের নিজেদের মধ্যে বিবাদ লেগেই আছে। সেটাই মেটাতে পারছে না। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন কখন করবে!” সাঁইথিয়া পুরসভায় এই প্রথম বোর্ড গড়ার ব্যাপারে তাঁর মতোই আশাবাদী শহরের আর এক বিজেপি নেতা দেবজিং রাম। তাঁর যুক্তি, “গত লোকসভা ভোটে আমরা ১৪টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিলাম। এই পুর নির্বাচনে তার চেয়েও ভাল ফল হবে। কারণ রাজ্যজুড়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সারদা-সহ নানা দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। দিন যত এগোবে এ সব আরও সামনে আসবে। তাই সাঁইথিয়ায় বোর্ড গড়ার বিষয়ে আমরা একশো শতাংশ আশাবাদী।”
যদিও বিজেপি-র এই আস্ফালনকে পাত্তা দিতে নারাজ শাসকদল। তৃণমূলের সাঁইথিয়া শহর সভাপতি পিনাকী দত্ত বলেন, “সাঁইথিয়া পুরসভায় আমরা ১৬-০ জিতব। এতে কোনও সন্দেহই নেই। বিজেপি দিবাস্বপ্ন দেখছে। কোনও দিনই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy