Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা বন্ধের নির্দেশ

নানা বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে দলীয় দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। জেলায় বহু পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে তৃণমূল। বাদ যায়নি পঞ্চায়েত সমিতিও। তাই প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা না করার জন্য বললেন তৃণমূলের পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক তথা সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুরুলিয়ায় কর্মিসভায় বক্তব্য রাখছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুরুলিয়ায় কর্মিসভায় বক্তব্য রাখছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪৬
Share: Save:

নানা বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে দলীয় দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। জেলায় বহু পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে তৃণমূল। বাদ যায়নি পঞ্চায়েত সমিতিও। তাই প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা না করার জন্য বললেন তৃণমূলের পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক তথা সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রবিবার পুরুলিয়া শহরের বেলগুমা বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে একটি কর্মিসভায় যোগ দিয়ে বলেন, “দয়া করে আমাদের দলের সমালোচনা চায়ের দোকানে করবেন না। রাস্তার ধারে করবেন না। কোনও সমস্যা থাকলে আমাকে বলবেন। বলার নির্দিষ্ট জায়গা আছে।”

অথচ মঞ্চে বলতে ওঠার সামান্য পরেই মঞ্চের ডান দিকে কর্মীদের মধ্যেই দলের কোনও বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। বিষয়টি নজর এড়ায়নি রাজীববাবুর। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই সব কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “পিছনে কেউ গল্প করবেন না। দলের শৃঙ্খলা নষ্ট করবেন না। আমার সঙ্গে কথা বলুন।” এরপরই ইশারায় দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোকে বিষয়টি দেখতে বলেন।

প্রসঙ্গত, এ দিনের এই সভা ছিল আগামী ২৮ নভেম্বর দুর্গাপুরে দলনেত্রীর কর্মিসভার প্রস্তুতি সভা। গত মে মাসে জেলা বা ব্লক স্তরের কমিটিগুলি ভাঙার পরে সাড়ে পাঁচ মাসেও জেলা বা ব্লক কোন কমিটিই এখনও ঘোষিত হয়নি। এই নিয়ে জেলার বিভিন্ন ব্লকে নানা জল্পনা চলছে। বিভিন্ন ব্লকে দলের মধ্যে চোরা স্রোতের বিষয়টি জেলা সভাপতিরও অজানা নয়। দিন কয়েক আগেই দলের তফশিলি জাতি, উপজাতি ও ওবিসির জেলা সম্মেলনে মঞ্চেই সরব হয়েছিলেন রঘুনাথপুরের নেতা অঙ্কুর বাউরি। এ কথা মাথায় রেখেই জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “মতপার্থক্য থাকতে পারে। মতপার্থক্য থাকলে নিশ্চয়ই সামাধান করব। কারও প্রতি আনুগত্য দেখাতে গিয়ে কোনও বিষয়ের সঙ্গে আপোষ করা যাবে না।” উন্নয়নের কাজে দলের একাংশ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন শান্তিরামবাবু। আমাদের কাজের জন্য উন্নয়ন যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়।”

তবে নতুন কমিটিতে যেন যোগ্য কর্মীরা মর্যাদা পান সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন দলের বর্ষীয়ান নেতা কে পি সিংহ দেও। তিনি বলেন, “যাঁরা দলটা এনেছে তাঁদের সম্মানের সঙ্গে দলে রাখা যায় তা দেখতে হবে।” রাজীববাবুকে উদ্দেশ্য করেই তিনি বলেন, “এ বিষয়ে নিশ্চয়ই নেতৃত্বের সঙ্গে বসবেন, আলোচনা করবেন।” উল্লেখ্য, কমিটি ভাঙার পরে নতুন কমিটিতে অনেকেই বাদ পড়তে পারেন এরকম একটি খবর ছড়িয়ে পড়ায় কে পি সিংহ দেও, সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়রা একটি পৃথক বৈঠকও করেন। সে বৈঠকে জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো গরহাজির ছিলেন। জেলায় দলের পরিস্থিতি এবং এ দিন বিভিন্ন জনের বিভিন্ন বক্তব্য শোনার পরে রাজীববাবু বলেন, “কোথাও কোথাও দুর্বল জায়গা তৈরি হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে হবে।”

এত কিছুর পরেও এ দিনের সভা ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া এড়ানো যায়নি। সভায় দলের আরেক শীর্ষনেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় (কমিটি ভাঙার আগে কাযর্করী সভাপতি) মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হল না? এ নিয়ে কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে। যদিও সুজয়বাবু বলেন, “আমি তো সভা পরিচালনা করিনি। দলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে এ দিন হাজির ছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

do not criticize the party purulia tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE