Advertisement
E-Paper

বিডিওকে সামনে পেয়ে রেশন নিয়ে অভিযোগ হুড়ায়

গ্রাহকদের একাংশ নিজেদের প্রাপ্য পণ্য পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার হুড়া ব্লকের চাকলতা গ্রামের রেশন দোকানে একটি রেশন দোকানে হানা দিলেন বিডিও। এ দিন দুপুরে আচমকা স্থানীয় রেশন ডিলার প্রভাসচন্দ্র মল্লিকের দোকানে হাজির হন হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত। এবং বিডিও-কে সামনে পেয়ে রেশন দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুললেন এলাকার গ্রাহকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৬
 রেশনের নথিপত্র পরীক্ষা করছেন বিডিও। —নিজস্ব চিত্র

রেশনের নথিপত্র পরীক্ষা করছেন বিডিও। —নিজস্ব চিত্র

গ্রাহকদের একাংশ নিজেদের প্রাপ্য পণ্য পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার হুড়া ব্লকের চাকলতা গ্রামের রেশন দোকানে একটি রেশন দোকানে হানা দিলেন বিডিও। এ দিন দুপুরে আচমকা স্থানীয় রেশন ডিলার প্রভাসচন্দ্র মল্লিকের দোকানে হাজির হন হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত। এবং বিডিও-কে সামনে পেয়ে রেশন দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুললেন এলাকার গ্রাহকেরা।

এ দিন বিডিও দোকানে পৌঁছেই চলতি সপ্তাহে গ্রাহকদের বণ্টনের জন্য রেশন ডিলার কতটা পরিমাণ মাল তুলেছেন তা দেখতে চান। মালের মজুত-খাতা পরীক্ষা করার সময় দোকানে কয়েকজন গ্রাহক আসেন। গ্রাহকেরা যখন মাল নিচ্ছেন, তখন বিডিও তাঁদের কাছ থেকে জানতে চান, তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য খাদ্যপণ্য ঠিকঠাক পান কি না। গ্রাহকদের সামনেই বিডিও রেশন ডিলারের কাছে জানতে চান, বিপিএল গ্রাহকেরা ইউনিট পিছু কতটা করে চাল বা আটা পান। প্রভাসবাবু তাঁকে জানান, বিপিএল গ্রাহকদের ইউনিট পিছু প্রাপ্য সপ্তাহে ১ কেজি ২৫০ গ্রাম চাল (মাসে পাঁচ কেজি) এবং ৭৫০ গ্রাম করে আটা (মাসে ৩ কেজি)। এই তথ্য জেনে বিপিএল তালিকাভুক্ত এক গ্রাহক নীলকমল পৈতন্ডি বিডিওকে জানান, তাঁরা রেশন থেকে চাল ও আটা কম পান। মাসে চাল চার কেজি দেওয়া হয় এবং আটা ৭৫০ গ্রাম দেওয়া হয়। অথচ রেশন কার্ড মোতাবেক তাঁদের প্রাপ্য এর চেয়ে বেশি।

রেশন ডিলার গ্রাহকের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁকে বলেন, “তোমাদের বাড়ির অন্য সদস্যেরা মাল তুলে নিয়ে যায়।” নীলকমলবাবু তাঁকে থামিয়ে বলেন, “মাল তুলি আমি আর আমার ভাই। আর কেউ আসেন না।” ডলি চন্দ্র, মোহন চন্দ্র, জগন্নাথ চন্দ্রদের মতো এপিএলের গ্রাহকেরা বিডিও-র কাছে অভিযোগ করেন, “আমরা কোন মালই পাই না। ডিলারকে প্রশ্ন করলে উনি বলেন, আমাদের কার্ড নাকি তালিকাতে নথিভুক্তই হয়নি।” সুজিতা বাউরি নামে এক গ্রাহকের অভিযোগ, “আমার দুই সন্তান ও আমার নিজের জন্য কোনও খাদ্যপণ্য পাই না।” গ্রাহকেরা বিডিও-কে আরও জানান, রেশনে তাঁদের ঠিক কতটা পরিমাণ মাল প্রাপ্য, সে সম্পর্কে তাঁরা অন্ধকারে।

গ্রাহকদের অভিযোগ শুনে বিডিও সুব্রতবাবু রেশন ডিলারের কাছে জানতে চান, দোকানে মজুত পণ্যের তালিকা কোথায়। রেশন ডিলার দোকানের ভিতরে কোণের দিকে একটি বিবর্ণ তালিকা দেখান। বিডিও তাঁর কাছে পণ্য বিলির জন্য গ্রাহকদের দেওয়া রসিদের কপি দেখতে চাইলে দোকানদার তা-ও দেখাতে পারেননি। পরে বিডিও বলেন, “এই এলাকায় গ্রাহকদের একাংশ তাঁদের প্রাপ্য মাল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ছিল। তাই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েক জন গ্রাহক আমার কাছে প্রাপ্য মাল না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।” তিনি জানান, বিধি মোতাবেক মজুত পণ্যের তালিকা প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখা দরকার, যাতে গ্রাহকেরা তা দেখতে পান। কিন্তু ওই দোকানে তালিকা প্রকাশ্যে টাঙানো নেই। তা ছাড়া কোন গ্রাহক কতটা মাল পাবেন, তা তাঁদের জানা দরকার। সেটাও লিখে রাখতে হবে।

বিডিও-র কথায়, “দেখতে হবে, সব কিছুতে যেন একটা স্বচ্ছতা থাকে। আমি ওই রেশন দোকানদারকে নির্দেশ দিয়েছি, সাত দিনের মধ্যে ওই তালিকা দোকানের এমন জায়গায় টাঙাতে হবে, যাতে গ্রাহকেরা দোকানে এসে তা পড়ে মজুত সম্পর্কে জানতে পারেন। তাঁদের কতটা মাল প্রাপ্য, সেটাও জানতে পারেন।” তিনি জানান, আর কিছু অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সেগুলি খাদ্য দফতরের পরিদর্শককে দেখতে বলবেন। তবে, চলতি সপ্তাহের বরাদ্দ খাদ্যপণ্যের মজুত-নথিতে কোনও গরমিল পাওয়া যায়নি বলেও বিডিও জানিয়েছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে রেশন ডিলার প্রভাসচন্দ্র মল্লিক বলেন, “তালিকা দোকানে ছিল। তবে ভিতরে রাখতে হয়। বাইরে রাখলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।” মাল কম দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ওই কার্ডগুলিতে বরাদ্দই কম রয়েছে। কিন্তু, গ্রাহকেরা তা মানতে চান না। আবার কম মাল নিতেও চান না। আমি কী করতে পারি? তবে, এ বার থেকে গ্রাহকদের সামনে সব তালিকায় টাঙিয়ে রাখব।”

ration allegation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy