পরিস্থিতিটা এমনই হয়েছিল যে রক্ত নিতে হলে সঙ্গে করে রক্তদাতা নিয়ে আসা বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছিল। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের এই ‘রক্তশূন্য’ পরিস্থিতির কথা সংবাদপত্রের শিরোনামে উঠে আসার পরেই এগিয়ে এলেন বহু মানুষ। সোমবারই হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দিলেন বাঁকুড়া থিয়েটার অ্যাকাডেমি এবং কোম্পানি ১ এনসিসি-র ৫৬ বেঙ্গল ব্যাটেলিয়নের ক্যাডেটরা।
হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুন্ডু বলেন, “ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তশূন্যতার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে অনেকেই জরুরি ভিত্তিতে ক্যাম্প করতে চেয়ে ফোন করেছেন। এ দিন মোট ২৫ ইউনিট রক্ত দিয়েছেন এনসিসি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যেরা।’’ তিনি জানান, আজ মঙ্গলবারই বাঁকুড়া মেডিক্যালের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্ত দেওয়ার দিন। তার আগে এই উদ্যোগের ফলে অনেক সুবিধা হল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এনসিসি-র কোম্পানি ১-এর অ্যাসোসিয়েট অফিসার তথা বাঁকুড়া থিয়েটার অ্যাকাডেমির সম্পাদক অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আনন্দবাজার পত্রিকায় খবর দেখেই আমরা সরাসরি হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই মতোই এ দিন মোট ২৫ জন রক্ত দিয়েছেন।’’
এ দিন এনসিসি-র ক্যাডেটদের অনেকেরই প্রথমবার রক্তদানের অভিজ্ঞতা হল। প্রথম বর্ষের পড়ুয়া সুরজিৎ কুণ্ডু বলেন, “প্রথমবার রক্ত দিলাম। এর পর আরও দেব ঠিক করেছি।’’ সুরজিতের সহপাঠী তাহিদুর ইসলাম জানাচ্ছেন, অনেক বছর আগে তাঁর এক আত্মীয়ের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তখন রক্ত জোগাড় করতে প্রথমে খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ওই পরিবারকে। শেষে এক পড়শি রক্ত দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “এটা যে মহান কাজ, সেদিনই বুঝেছিলাম। আমাদের দান করা রক্ত কারও উপকারে আসবে, ভেবেই ভাল লাগছে।’’ প্রথমবর্ষের ছাত্রী নয়না দাসেরও বক্তব্য, “মনে হচ্ছে একটা ভাল কাজ করলাম। রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে একটু ভয় ছিলই। কিন্তু এ দিন সেইসব ভয় কেটে গিয়েছে।’’ সুপার জানান, শীঘ্রই অরাজনৈতিক ভাবে বেশ কয়েকটি রক্তদান শিবির হওয়ার কথা রয়েছে। সেগুলি হলে বাঁকুড়ার ব্লাডব্যাঙ্কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। হাসপাতালের সঙ্কট কাটাতে রক্তদান শিবির করার কথা জানিয়েছেন গঙ্গাজলঘাটির তৃণমূল নেতা নিমাই দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy