Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হস্টেল সুপার আটক, উদ্ধার করল পুলিশ

র্যাগিংয়ের অভিযোগকারিণীকে কেন হস্টেলে ফেরানোর উদ্যোগ চলছে, সেই প্রশ্ন তুলে হস্টেল সুপারকে নিজের আটকে রাখলেন আবাসিক ছাত্রীদের একাংশ। পরে ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে সুপারকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার মানবাজারের কেন্দ্রীয় মহিলা হস্টেলের ঘটনা। মানবাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ওই হস্টেল। ২০০১ থেকে চালু হওয়া ভবনটি অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর দেখাশোনা করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০০:১৫
Share: Save:

র্যাগিংয়ের অভিযোগকারিণীকে কেন হস্টেলে ফেরানোর উদ্যোগ চলছে, সেই প্রশ্ন তুলে হস্টেল সুপারকে নিজের আটকে রাখলেন আবাসিক ছাত্রীদের একাংশ। পরে ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে সুপারকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার মানবাজারের কেন্দ্রীয় মহিলা হস্টেলের ঘটনা।

মানবাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ওই হস্টেল। ২০০১ থেকে চালু হওয়া ভবনটি অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর দেখাশোনা করে। ওই আবাসিক হস্টেলের ৮০ জন পড়ুয়া স্থানীয় মানভূম কলেজের ছাত্রী। মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব এর আগে জানিয়েছিলেন, কয়েক মাস আগে কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ওই হস্টেলের আবাসিক, কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে র্যাগিং করার অভিযোগ ওঠে অন্য আবাসিক ছাত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনার কথা কাউকে জানালে প্রথম বর্ষের ছাত্রীটিকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

এর পরেও ওই ছাত্রী হস্টেলে ছিলেন। মাসখানেক আগে বলরামপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রীটি বাড়ি ফিরে যান। প্রায় এক মাস তিনি কলেজেও আসেননি। এর মধ্যে তিনি বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেও ঘটনার কথা জানান। হস্টেল সুপার আলপনা মাহাতো অভিযোগকারিণী ছাত্রীটিকে হস্টেলে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তার জেরেই এ দিন তাঁকে ঘেরাও করা হয়। আলপনাদেবী বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে আবাসিক ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগকারিণী ছাত্রীটিকে ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। হস্টেলের কোন ছাত্রীদের সঙ্গে মেয়েটির খারাপ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, এ দিন তা জেনে সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টা করি। অন্য ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করি, ঠিক কী ঘটেছিল। কথা বলার ফাঁকে হঠাৎই ছাত্রীরা বেরিয়ে গিয়ে আমাকে ঘরে তালা বন্ধ করে আটকে দেয়।” আলপনাদেবী ফোনে দফতরের প্রকল্প আধিকারিককে সব জানান। উনি পুলিশে খবর দেন। ঘণ্টা দেড়েক আটকে থাকার পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে মুক্ত করে।

এ দিন দুপুরে আবাসিক ভবনে গেলে বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা র্যাগিং বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, “ও (অভিযোগকারিণী ছাত্রী) কেন হস্টেলে বা কলেজে যাচ্ছে না, তা ও-ই ভাল বলতে পারবে! সত্যিই যদি কিছু ঘটে থাকে, তা হলে ও কেন হস্টেলে এসে সবার সামনে তা বলছে না? তার পরেও হস্টেল সুপার আমাদের চাপ দেওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে ওঁকে ঘেরাও করেছি। কিন্তু, তালাবন্ধ করার অভিযোগ ঠিক নয়।” মানভূম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, “ওই হস্টেলে কী হয়েছে, আমার জানা নেই। ভবনটি কলেজের নিয়ন্ত্রণে নয়।” অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পুরুলিয়া জেলা প্রকল্প আধিকারিক নির্মাল্য ঘড়ামি বলেন, “ওই আবাসিক ভবনের ঘটনা জানি। সুপারকে ঘটনার রিপোর্ট জমা করতে বলেছি। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মানবাজারের বিডিও বলেন, “হস্টেল সুপারকে ছাত্রীদের একাংশ আটক করে রেখেছিল বলে শুনেছি। ঘটনার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” কেন এখনও প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির অভিযোগের সুরাহা হল না, সে প্রশ্নের জবাবে বিডিও বলেন, “আমরা এখনও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে উঠতে পারিনি। এক দিন ওই মেয়েটি ও তার মায়ের সঙ্গে হস্টেলে গিয়ে আমি কথা বলেছিলাম। তখনই ওর মা ওকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। ফলে, বিশদে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পারিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

manbazar hostel super ragging
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE