সৌম্যেন্দু অধিকারী।
ভেঙে গিয়েছে পুর বোর্ড। তার পরে নির্বাচনও হয়নি। তার পরে কাঁথি পুরসভায় প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত সৌম্যেন্দু অধিকারীকে সরানো হল কী ভাবে? তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুরসভায় কী ভাবেই বা চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হল? সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে এই প্রশ্ন তুললেন একদা তৃণমূল এবং অধুনা বিজেপি নেতা সৌম্যেন্দুর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। এই প্রেক্ষিতে বিচারপতি অরিন্দম সিংহ রাজ্যের বক্তব্য জানতে চান। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত জানান, সরকার চাইলে এটা করতেই পারে। আইনই তাদের সেই অধিকার দিয়েছে।
বিকাশবাবু এ দিন শুনানির শুরুতেই জানান, বোর্ড ভেঙে যাওয়ার পরে তাঁর মক্কেলকে প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছিল। এ ভাবে তাঁকে সরানো যায় না। রাজ্যের এজি-র বক্তব্য শুনে বিকাশবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলেই তার অপব্যবহার করা যায় না।’’ কাঁথি পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মামলাকারীর এই মামলা দায়ের করার আইনি অধিকারই নেই।
বিচারপতি এ দিন সরকার পক্ষের কাছে জানতে চান, ওই পদে কে বসতে পারেন? তার আইনি সংজ্ঞাই বা কী? রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এই মামলায় নির্বাচন মূল বিষয় নয়। নির্বাচন যত দিন না হচ্ছে, তত দিন সরকার যাঁকে ইচ্ছে ওই পদে বসাতে পারে। যদিও বিকাশবাবু আদালতে জানান, নির্বাচিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে ওই পদে বসানো যায় না। মামলাটি আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আজ ফের এই মামলার শুনানি হবে এবং বিকাশবাবু তাঁর বক্তব্যের সবিস্তার ব্যাখ্যা দেবেন।
এই মামলা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চলছে। একদা তৃণমূলের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কাঁথির অধিকারী পরিবারের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের দূরত্ব কত বেড়েছে, জল্পনা চলছে সেই বিষয়েও। প্রথমে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেন। এই মামলা দায়ের হওয়ার পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁর ভাই সৌম্যেন্দুও। তবে পরিবারের কর্তা, শুভেন্দু-সৌম্যেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী এবং তাঁর অন্য ছেলে দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূলের সাংসদ আছেন। তাই অনেকেই মনে করছেন, কাঁথি পুরসভার মামলাটি আইনি বিবাদের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে বৃহত্তর রাজনীতির আঙিনাতেও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy