E-Paper

ভোটার তালিকা: সর্ষের মধ্যে কি আরও ভূত

দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী আধিকারিকের ‘ইউজ়ার নেম’ এবং ‘পাসওয়ার্ড’ ব‍্যবহার করে ভোটার তালিকায় অবৈধ ভাবে নাম তোলার অভিযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কর্মরত একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজারকে (এএসএম) ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে কমিশন।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ০৮:০১

—প্রতীকী চিত্র।

অবৈধ ভাবে ভোটার নথিভুক্তি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগে এক আধিকারিক ইতিমধ‍্যেই নিলম্বিত (সাসপেন্ড) হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত মোট তিন জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে এ বার এফআইআর দায়ের হল। অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমন পদক্ষেপের নজির সাম্প্রতিক অতীতে বিরল। কমিশন সূত্রের দাবি, অভিযুক্তেরা টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা বাদ দেওয়ার কাজ করছিলেন। এটা ঘিরে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের যোগসাজশে কোনও অসাধু চক্রের অস্তিত্ব উড়িয়ে দিচ্ছেন না কমিশন-কর্তাদের অনেকেই।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী আধিকারিকের ‘ইউজ়ার নেম’ এবং ‘পাসওয়ার্ড’ ব‍্যবহার করে ভোটার তালিকায় অবৈধ ভাবে নাম তোলার অভিযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কর্মরত একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজারকে (এএসএম) ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে কমিশন। তদন্তে পরে আরও তথ‍্য পাওয়া গিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। জানা যাচ্ছে, ওই এএসএম যাঁর ফোন নম্বর ব্যবহার করেছিলেন, তিনি একজন নির্বাচনী কর্মী (ইলেকশন ক্লার্ক)। এ ছাড়াও ইলেকশন সেলের এক জন অফিসার-ইনচার্জও অবৈধ ভাবে কিছু আবেদন নিষ্পত্তি করেছিলেন বলে জানতে পেরেছেন কমিশন-কর্তারা। এই তিন জনের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। রিপ্রেজ়েন্টেশন অব পিপ্‌ল আইনের অধীনে নির্দিষ্ট ধারায় শুরু হয়েছে মামলা। অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দ্রুত জমা পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট ধারায় তিন মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত জেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এখন ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা বাদ দেওয়ার যাবতীয় কাজ হয়ে থাকে অনলাইনে। তাতে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং এইআরও-রাই নিজেদের ‘ইউজ়ার নেম’, ‘পাসওয়ার্ড’ ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট কোনও আবেদনের ব‍্যপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার একাই ভোটার তালিকায় কারচুপি করেছেন। কিন্তু পরে আরও কয়েক জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বিষয়টি আরও গুরুতর বলে মনে করা হচ্ছে। কমিশন-কর্তাদের একাংশের সন্দেহ, এর নেপথ্যে কোনও চক্রও থাকতে পারে। কারণ সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অভিযুক্তেরা অর্থের বিনিময়ে ভোটার-আবেদন নিষ্পত্তি করেছিলেন।

কমিশন সূত্রের খবর, ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ‘ইউজ়ার নেম’ ও পাসওয়ার্ড’ ব্যবহার করে যত কাজ হয়েছে, তার সব তথ্য চাওয়া হয়েছে। অন‍্য কোথাও এমন চক্র বা অসাধু ব্যক্তিদের উপস্থিতি রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। এক কর্তার কথায়, “লগ হিস্ট্রি দেখলেই বোঝা যাবে দায়িত্বপ্রাপ্তরাই কাজ করেছেন, না কি অন‍্য কেউ তাতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন।” কমিশন কর্তাদের একাংশের মতে, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ হলে নির্বাচনী কাজের সঙ্গে যুক্ত সর্বস্তরের আধিকারিকদের উদ্দেশে বার্তা যাবে। নির্ভুল, স্বচ্ছ ভোটার কার্ড তৈরির প্রশ্নে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Voter Lists Fake Voter Card EPIC Number Suspension Order

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy