E-Paper

নির্যাতনে কেন শোনা গেল না শব্দ, প্রশ্ন রিপোর্টে

শহরের চিকিৎসকদের বড় অংশের প্রশ্ন, “তরুণীকে নৃশংস ভাবে আঘাত করা হল, তিনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেন। অথচ কোনও আওয়াজ কেউ শুনতে পেলেন না? এটা খুবই অস্বাভাবিক।”

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৩

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আর জি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার শরীরের বাইরে বিভিন্ন অংশে ১৬টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছিল। সেগুলি সবই ঘটেছিল তিনি জীবিত থাকাকালীন, এবং ওই সমস্ত চিহ্ন প্রমাণ করছে নির্যাতিতা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর সিবিআইকে পাঠানো রিপোর্টে এমনই মতামত জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ‘মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড’ (এমআইএমবি)।

সেখানে আরও বলা হয়, ধস্তাধস্তিও হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এই তরুণী চিকিৎসকের গাল, ঠোঁট, নাক, চোয়াল, থুতনি, ঘাড়, কাঁধ, হাঁটু-সহ আরও বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গুরুতর আঘাত করা হল, অথচ কেউ তাঁর চিৎকার বা কোনও আওয়াজ কেন শুনতে পেলেন না, সেই প্রশ্নটি আগেও উঠেছে। কিন্তু ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে নির্যাতিতা বেঁচে থাকা অবস্থায় ওই আঘাত করা হয়েছিল বলে ‘এমআইএমবি’ চূড়ান্ত মতামত প্রকাশ করার পরে প্রশ্নটি আরও জোরালো হয়েছে।

শহরের চিকিৎসকদের বড় অংশের প্রশ্ন, “তরুণীকে নৃশংস ভাবে আঘাত করা হল, তিনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেন। অথচ কোনও আওয়াজ কেউ শুনতে পেলেন না? এটা খুবই অস্বাভাবিক। রহস্যটা কী, সেটাই তদন্তে এখনও স্পষ্ট নয়।”

সূত্রের খবর, খুন ও ধর্ষণের ঘটনাটি এক জনের পক্ষে ঘটানো সম্ভব কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতামত চেয়েছিল সিবিআই। তার ব্যাখ্যায় ‘এমআইএমবি’ জানিয়েছে, নির্যাতিতার মুখ, ঘাড় এবং গোপনাঙ্গে যে ধরনের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তা এক জনের পক্ষেও ঘটানো সম্ভব। তবে সেটি একজনই ঘটিয়েছিল কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও মতামত প্রকাশ করেননি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বরং জানানো হয়েছে, ফরেন্সিক ডিএনএ বিশেষজ্ঞের করা আরও কিছু রিপোর্টের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন। তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেই বিষয়টিতে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কথায়, “তরুণী চিকিৎসকের শরীরে যে ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তা দেখে প্রথম থেকেই আমরা অভিযোগ করেছি, ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে একাধিক জন জড়িত। কিন্তু সেই ধোঁয়াশা সিবিআইও কাটাচ্ছে না। প্রয়োজনে অন্য সন্দেহভাজনদের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হোক।”

নির্যাতিতার শরীরে কামড়ের চিহ্নের সঙ্গে অভিযুক্তের দাঁতের প্যাটার্নের মিল রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে ফরেন্সিক ওডন্টোলজিস্টের ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষার যে সমস্ত রিপোর্ট মিলেছে, তার আরও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের জন্য এক ফরেন্সিক ডিএনএ বিশেষজ্ঞকে ‘এমআইএমবি’-তে যুক্ত করে ময়না তদন্তের রিপোর্টের পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশও করেছে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল। শহরের ডাক্তারদের বড় অংশের কথায়, “প্রায় তিন মাস আগে সুপারিশ করলেও, এখনও পর্যন্ত সিবিআই তার কতটা পালন করেছে, কিছুই জানা যায়নি। যদি করে থাকত, তা হলে হয়তো এত দিনে আরও কারা জড়িত, সেটা স্পষ্ট হত।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RG Kar Medical College and Hospital Incident CBI Investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy