Advertisement
E-Paper

পণ্য করিডরের মানচিত্রে রঘুনাথপুর তালুক

শিল্পে মন্দা রাজ্যের জন্য সুখবর। প্রস্তাবিত অমৃতসর-ডানকুনি পণ্য করিডরের মানচিত্রে জায়গা করে নিল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শিল্পাঞ্চল। বুধবার পুরুলিয়ায় এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীঘ্রই এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের চুক্তি হবে।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০৪:২৪

শিল্পে মন্দা রাজ্যের জন্য সুখবর। প্রস্তাবিত অমৃতসর-ডানকুনি পণ্য করিডরের মানচিত্রে জায়গা করে নিল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শিল্পাঞ্চল। বুধবার পুরুলিয়ায় এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীঘ্রই এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের চুক্তি হবে।

২০১৪-র জানুয়ারিতে প্রস্তাবিত এই পণ্য করিডরের পরিকল্পনা অনুমোদন করে ইউপিএ সরকার। তদানীন্তন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে ৫৭৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অমৃতসর-দিল্লি-কলকাতা পণ্য করিডরকে কেন্দ্র করে সমান্তরাল একটি শিল্প করিডরও তৈরি হবে। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের মতো সাতটি রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যাবে এই শিল্প করিডর। যা অমৃতসর, দিল্লি, মুজফ্ফরনগর, কানপুর, বারাণসী, পটনা, ধানবাদ, দুর্গাপুর এবং কলকাতার মতো ২০টি শহরকে যুক্ত করবে। সম্প্রতি কলকাতায় বণিকসভা সিআইআই-এর এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন শিল্প উন্নয়ন ও নীতি দফতরের সচিব রমেশ অভিষেক জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির কাজ ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘোষণা ছিল, এই প্রকল্পকে ঘিরে ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত ১৫ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হবে। এমনই একটি শিল্প-করিডর তৈরি হচ্ছে দিল্লি থেকে মুম্বই পর্যন্ত।

এই প্রকল্পে রঘুনাথপুরের যুক্ত হওয়ার কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্যের এই যৌথ প্রকল্পে আমরা জমি দেব। এবং সেটাই হবে রাজ্যের ইক্যুইটি।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড হয়ে রঘুনাথপুর দিয়ে বাঁকুড়ার বড়জোড়া, পানাগড় হয়ে ডানকুনি পর্যন্ত যাবে
করিডর। তাই প্রচুর টাকা বিনিয়োগ হবে এখানে।’’

এই প্রকল্পে পাহাড় থেকে সমুদ্র পর্যন্ত রেল রাস্তা ও বন্দরের পরিসর বাড়িয়ে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। প্রকল্পের ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে তৈরি হবে শিল্প-করিডর। সরকারি সূত্রের খবর, রেল এবং কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক প্রথম পর্যায়ে দু’টি শিল্পাঞ্চলকে ছাড়পত্র দিয়েছে। এর একটি রঘুনাথপুর, অন্যটি উত্তরাখণ্ডের একটি শিল্পাঞ্চল। রঘুনাথপুরকে বেছে নেওয়ার কারণ, এখানকার দু’টি শিল্প পার্কে তিন হাজার একর জমি সরকারের হাতে রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর শিল্পাঞ্চলে মোট জমির পরিমাণ ৪ হাজার একর। এর মধ্যে ডিভিসি, জয় বালাজি, আধুনিক, রিলায়্যান্স সিমেন্ট, শ্যাম স্টিল, ইমামি সিমেন্টের মতো সংস্থাগুলিকে সব মিলিয়ে প্রায় ৩২০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল। বছরখানেক আগে শ্যাম স্টিল ৫০০ একর জমি সরকারকে ফেরত দিয়েছে। শিল্প না গড়ে ফেলে রাখার জন্য রিলায়্যান্স, জয় বালাজি, আধুনিক এবং প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের সংস্থাকে দেওয়া জমি ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ইমামি তাদের প্রকল্প পানাগড়ে করবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, শিল্প পার্কে উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা এবং ইস্পাত শিল্পে মন্দা চলার কারণেই এখানে জমি নিয়েও কেউ কারখানা তৈরি করতে রাজি হয়নি। একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিভিসি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। এই প্রেক্ষিতে শিল্প করিডরে রঘুনাথপুরের স্থান পাওয়া পুরুলিয়া জেলা তো বটেই, গোটা রাজ্যের কাছেই এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

এ দিন পুরুলিয়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে শিল্পে জুলুমবাজির প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে জিজ্ঞাসা করেন, রঘুনাথপুর শিল্পপার্কে কোনও জুলুমবাজির ঘটনা ঘটছে না তো? বিধায়ক না বলায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শিল্পকে সহযোগিতা করতে হবে।’’ পরে জেলাশাসক তন্ময় ভট্টাচার্যের কাছে ডিভিসির কাজকর্ম নিয়ে জানতে চান।

freight corridor Raghunathpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy