Advertisement
E-Paper

দেবশ্রীতে আপত্তি রায়দিঘির, হাবরার দাবি রূপাকে চাই

টানাপড়েন দুই অভিনেত্রীকে নিয়ে। একজনকে বিধানসভায় প্রার্থী হিসাবে চেয়ে নেতাদের কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছেন কর্মী-সমর্থকেরা। অন্যজনকে ফের প্রার্থী হিসাবে চান না বলে, দলের উপর মহলে লিখিত জানিয়ে দিয়েছেন নিচুতলার নেতা-কর্মীরা।

সীমান্ত মৈত্র ও দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৩

টানাপড়েন দুই অভিনেত্রীকে নিয়ে।

একজনকে বিধানসভায় প্রার্থী হিসাবে চেয়ে নেতাদের কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছেন কর্মী-সমর্থকেরা। অন্যজনকে ফের প্রার্থী হিসাবে চান না বলে, দলের উপর মহলে লিখিত জানিয়ে দিয়েছেন নিচুতলার নেতা-কর্মীরা।

প্রথমজন, বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। দ্বিতীয়জন, রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়।

রাজ্যে সাম্প্রতিক নানা ঘটনায় শাসক দলের বিরুদ্ধে বিজেপির ‘লড়াকু মুখ’ হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে রূপার। দেবশ্রীকে অবশ্য গত পাঁচ বছরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই কেউ তেমন দেখেননি বলে অভিযোগ তুলছেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। আরও অভিযোগ, বিধায়ককে কোনও দরকারে পাশে পাওয়া যায় না, এলাকায় সভা-সমিতি-অনুষ্ঠানেও আসেন না তিনি। ফোন করলে ধরেন দাদা। বিধায়কের ঘনিষ্ঠ লোকজন তোলাবাজি করছে, অভিযোগ উঠছে এমনটাও।

এই পরিস্থিতিতেই শনিবার রায়দিঘির কৌতলা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে প্রায় সাড়ে তিনশো তৃণমূলের নেতা-কর্মী বসে ঘণ্টা চারেকের আলোচনায় ঠিক করেছেন, দেবশ্রীকে ফের এই কেন্দ্রে দল প্রার্থী করলে, মেনে নেবেন না তাঁরা। ঠিক যেমন সাতগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহর বিরুদ্ধে দলের নিচুতলার একাংশের ক্ষোভ তীব্র আকার নিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের নির্দেশে যুব তৃণমূল

সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসতে হয়েছে।

কী বলছেন রায়দিঘির বিক্ষুব্ধরা?

এ দিন বৈঠকে ছিলেন রায়দিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবদুর রউফ মোল্লা, বিরোধী দলনেতা পুতুল গায়েন, ছাত্রনেতা উদয় হালদাররা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছি। আবারও দেওয়া হবে। দেবশ্রীকে আমরা এই কেন্দ্রে আর প্রার্থী হিসাবে চাইছি না। উনি ফের প্রার্থী হলে আমাদের জয়ের সম্ভাবনা কম।’’

যা শুনে দেবশ্রী পরে বলেন, ‘‘দলে কিছু নিন্দুক আছে। যাঁরা নিজেদের বিধায়ক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে না পেরে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আখের গোছাতে সমস্যা হচ্ছে ওঁদের। তৃণমূলে শেষ কথা বলবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ বিধায়কের দাবি, ‘‘এলাকায় উন্নয়ন করেছি। সেটাই বড় কথা। মুখ দেখানো নয়।’’

গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকে চৌধুরীমোহন জাটুয়াকে দেবশ্রীর ‘পরামর্শদাতা’র ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘ক্ষোভের বিষয়ে কিছু জানি না।’’

অন্য দিকে, হাবরায় প্রার্থী হিসাবে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে কেন চাইছেন কর্মী-সমর্থকেরা?

হাবরা-অশোকনগরে বরাবরই বিজেপির জনভিত্তি ভাল। ১৯৯৮ সালের উপনির্বাচনে অশোকনগরে জয়ী হন বাদল ভট্টাচার্য। সেটাই ছিল এ রাজ্যে বিজেপির প্রথম বিধানসভা আসন। হাবরা পুরসভাও ১৯৯৩ সালে বিজেপির দখলে ছিল। রূপা গত কয়েক মাসে একাধিকবার হাবরায় এসেছেন। জুলাই মাসে ঝ়ড়ের পরে ত্রাণ নিয়ে এসে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে।

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু শনিবার কর্মিসভা উপলক্ষে এসেছিলেন হাবরায়। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কর্মীরা তাঁকে জানান, হাবরা বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে কড়া টক্কর দিতে রূপাকেই চাইছেন তাঁরা। লিখিত দাবি পেশ হয়।

দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রূপাকে প্রার্থী করতে চেয়ে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে দাবি আসছে। দলের নির্বাচন কমিটি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’

জ্যোতিপ্রিয়বাবু অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশ। যে কেউ যে কোনও আসনে দাঁড়াতে পারে। আমার ও নিয়ে ভাবার সময় নেই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy