মেট্রোর স্টেশন নির্মাণ নিয়ে খিদিরপুরে জমি-জট অব্যাহত থাকার মধ্যেই ওই মেট্রোপথ
সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে জোড়া সুখবর মিলল। জানা গিয়েছে, এসপ্লানেড থেকে ইডেন গার্ডেন্স পর্যন্ত ওই মেট্রোপথ সম্প্রসারণে রেল বোর্ড ১০০০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছে। এর পাশাপাশি, ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে জোকা থেকে আইআইএম পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও দিয়েছে রেল বোর্ড।
ওই মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের পক্ষ থেকে এসপ্লানেডের পরিবর্তে
মেট্রোপথকে ময়দানে মোহনবাগান মাঠ এবং ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়াম পর্যন্ত কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বছরখানেক আগে দেওয়া সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে রেল বোর্ড সম্প্রতি সেই কাজের জন্য বরাদ্দ করেছে
১০০০ কোটি টাকা। এর ফলে, ওই ভূগর্ভে ওই মেট্রোপথের দৈর্ঘ্য আরও কিছুটা বাড়বে। ইডেন গার্ডেন্স পর্যন্ত ওই মেট্রোপথ সম্প্রসারিত হলে ময়দানের একাংশ,
চক্ররেল, বাবুঘাট, হাই কোর্ট এবং স্ট্র্যান্ড রোডের উপরে থাকা একাধিক সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পথ সুগম হবে। বর্তমান নকশা অনুযায়ী, পার্ক স্ট্রিট স্টেশন থেকে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর সমান্তরাল ভাবে এসপ্লানেডে পৌঁছনোর কথা। সেখান থেকে কিছুটা বাঁক নিয়ে ইডেন গার্ডেন্স এবং মোহনবাগান মাঠের প্রবেশপথের কাছাকাছি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে সেটি।
এর পাশাপাশি,পুরনো সমীক্ষার ফলকে গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান জোকা স্টেশনের পরে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে ওই মেট্রোপথকে ১.৭ কিলোমিটার দূরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (আইআইএম) জোকা ক্যাম্পাস পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনাকেও ছাড়পত্র দিয়েছে রেল। এর ফলে ওই মেট্রোপথ নির্মাণের দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
ওই মেট্রোপথ উত্তরে ইডেন এবং দক্ষিণে আইআইএম জোকা পর্যন্ত সম্প্রসারণ হলে ওই পথে মোট স্টেশনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হবে ১৪টি। যার মধ্যে জোকার আইআইএম থেকে মোমিনপুর পর্যন্ত ৯টি স্টেশন থাকবে মাটির উপরে এবং খিদিরপুর থেকে ইডেন গার্ডেন্স পর্যন্ত বাকি ৫টি স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ। পাশাপাশি, সম্প্রসারিত মেট্রোপথের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৪ কিলোমিটার থেকে বেড়ে হবে প্রায় ১৮ কিলোমিটার। জোকা আইআইএম পর্যন্ত এই সম্প্রসারণ হলে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেট্রোর মাধ্যমে হাওড়া-শিয়ালদহ ছাড়াও বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রও তৈরি হবে। যদিও, সব ক্ষেত্রেই যাত্রীদের নির্দিষ্ট স্টেশনে এসে ট্রেন বদল করতে হবে।
তবে মেট্রো সম্প্রসারণের এই বার্তার মধ্যেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের জমির উপরে প্রস্তাবিত খিদিরপুর মেট্রো স্টেশনের ক্ষেত্রে জমি সংক্রান্ত সমস্যা। রাজ্য প্রশাসন বডিগার্ড লাইন্সের জমি না ছাড়লে ওই স্টেশনটি নির্মাণ করা মুশকিল। তাই শেষ পর্যন্ত ওই স্টেশন নির্মাণ করা না গেলে খিদিরপুর, একবালপুর এলাকার একটি বড় অংশের বাসিন্দারা মেট্রো পরিষেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মেট্রো কর্তারা অবশ্য জট কাটাতে এ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)