—প্রতীকী ছবি।
সকাল ৯টার ক্যানিং লোকাল। শিয়ালদহ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকা মাত্রই হুড়মুড় করে আসন দখল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যাত্রীরা। অন্য দল যাত্রীর অবশ্য পছন্দ কামরার দরজা সংলগ্ন সুবিধেজনক অবস্থান। যাতে গন্তব্য এলে দ্রুত নেমে পড়া যায়। ট্রেনে ওঠানামার পথ আটকে যাওয়ায় শুরু হয় বাদানুবাদ। প্রতিদিনের এটাই চেনা ছবি।
এ বার এমন ছবি পাল্টাতে উদ্যোগী হচ্ছেন রেল কর্তৃপক্ষ। লোকাল ট্রেনের কামরায় থাকা যাত্রী যাতে পরবর্তী স্টেশন আসার আগেই জায়গার নাম জানতে পারেন, সে জন্য ঘোষণার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বেশ কিছু লোকালে ইতিমধ্যেই তা শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে সব লোকাল ট্রেনেই ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে।
রেল সূত্রের খবর, মেট্রো রেলের মতোই এ ক্ষেত্রে লোকাল ট্রেনের কামরায় বসে পরবর্তী স্টেশন সম্পর্কে আগাম ঘোষণা শুনতে পাচ্ছেন যাত্রীরা। ট্রেনে ওঠার পরে প্রথমে মূল গন্তব্য সম্পর্কে ঘোষণা করা হচ্ছে। পরবর্তী স্টেশনের নাম জানানো হচ্ছে তার পরে। ওই স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে তা আবার যাত্রীদের জানানো হচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, তবে মেট্রোয় ব্যবহৃত প্রযুক্তির থেকে লোকাল ট্রেনের এই প্রযুক্তির পার্থক্য রয়েছে। মেট্রো রেলে স্টেশনের নামের ঘোষণা রেকর্ডিং করে বাজানো হয়। কিন্তু লোকাল ট্রেনে জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) নিয়ন্ত্রিত বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এ দেশের কিছু আধুনিক প্রযুক্তির ই এম ইউ ট্রেনেও সম্প্রতি ওই প্রযুক্তি চালু হয়েছে। শিয়ালদহ ডিভিশনে নতুন ট্রেনের পাশাপাশি পুরনো ট্রেনেও ওই ব্যবস্থা বসানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।
রেলযাত্রীদের মতে, শহরতলির ট্রেনে প্রায় ঠাসাঠাসি ভিড় থাকে। ওই অবস্থায় ট্রেন কোন স্টেশনে পৌঁছল বেশির ভাগ সময়ে তা ভিড় কামরায় থাকা যাত্রীরা বুঝতে পারেন না। ক্যানিং লোকালের যাত্রীদের দাবি, ভিড় ট্রেন থাকলেও আগেই জানা যাচ্ছে কোন স্টেশন সামনে। ফলে হুড়োহুড়ি এড়ানো যাচ্ছে। যাঁরা নিত্যযাত্রী নন, নতুন ব্যবস্থায় তাঁদের সুবিধে বেশি।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মোট ১০২টি রেকের মধ্যে আপাতত ৩০টি রেকে ওই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তার মধ্যে ৬-৭ টি শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় চলছে। ধাপে ধাপে সব ট্রেনে তা চালুর চেষ্টা হচ্ছে। রেলের সোনারপুর, রানাঘাট, বারাসাত ওয়ার্ক শপে আরও লোকাল ট্রেনে ওই প্রযুক্তি বসানো হচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, ওই প্রযুক্তিতে প্রত্যেকটি ট্রেন জিপিএস নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় বিশেষ সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ব্যবস্থা চালু থাকলে ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যের কাছে এলে স্বয়ংক্রিয় উপায়ে স্টেশনের ঘোষণা শুরু হয়। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত ঘোষণা চালু হলেও ভবিষ্যতে কামরায় মেট্রোর মতো এলইডি ডিসপ্লে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy