Advertisement
২১ মে ২০২৪
Durga Puja 2023

দেখতে দেখতে গড়িয়ে এল উৎসবের শেষ রাত, মানুষ আর মানুষ কলকাতা জুড়ে, বৃষ্টির আশঙ্কায় সঙ্গী ছাতা

আবহাওয়া দফতরের আগাম সতর্কবার্তা ছিল নবমী এবং দশমীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতো সকালে আকাশ মেঘলা। দুপুরবেলা শুরু হয় বৃষ্টি। কিন্তু বিকেলে বৃষ্টি না হওয়ায় জনপ্লাবন নামে সন্ধ্যায়।

Rain are not effected in Durga puja Crowed at Navami

নবমীর সন্ধ্যায় জনপ্লাবন ভবানীপুরের হরিশ পার্কের পুজোয়। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৫৮
Share: Save:

বেলা বাড়তেই শারদোৎসবের নবমীতে কালো মেঘের ঘনঘটনায় মাটি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বর্ষণাসুরকে হারিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল আম জনতার ভিড়। শহর কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সর্বত্রই জনতার নেমেছে ঢল। এ বারের কলকাতার পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে অযোধ্যায় দ্বারোদ্ঘাটন হবে রামমন্দিরের। তার আগে কলকাতাতেই সেই মন্দির তৈরি করে শারদোৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে লেবুতলা পার্কের এই পুজো। নবমীর দুপুরের বৃষ্টি তাদের ভাবনায় ফেললেও, সন্ধ্যা গড়াতেই জনতার ঢল তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

আবার উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয় এ বার পুজো নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে জনতার প্রশংসা পেয়েছে। বৃষ্টির ভ্রুকুটি এই পুজো কমিটির কর্তাদের কপালেও চিন্তার বলিরেখা ফেলেছিল। কিন্তু বিকেল গড়াতেই গত কয়েক দিনের চেনা চিত্র ধরা পড়েছে টালার এই পুজোয়। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা শুভাশিস সোম বলেন, ‘‘দুপুরের বৃষ্টি আমাদের কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলেছিল। তখন থেকেই বাড়তি সতর্কতা নিয়ে আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। কিন্তু বিকেল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় আবারও মানুষ ঠাকুর দেখতে আসছেন। এই পরিচিত চিত্র আমাদের স্বস্তি দিয়েছে।’’

দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের হরিশ পার্ক ব্যায়ম সমিতির ৮৪তম বছরের শারদোৎসবের সঙ্গেই মাঠে মেলার আয়োজন হয়। কিন্তু আচমকা দুর্যোগের কারণে পুজো কমিটি ঘোরতর চিন্তায় পড়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় হাসি মুখে পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তাপস দাস বলেন, ‘‘এ বার কুটির শিল্পের মণ্ডপ গড়ে আমরা এ বার ভাল জনসমাগম পেয়েছিলাম। নবমীর সকালের বৃষ্টিতে খানিকটা ভিড় কমলেও, সন্ধ্যা নামতেই হরিশ পার্কে জনপ্লাবন নেমে গিয়েছে। কোনও কিছুই আমাদের উৎসবকে হারাতে পারবে না। তা কলকাতা আবারও প্রমাণ করে দেবে।’’

উল্লেখ্য, আবহাওয়া দফতরের আগাম সতর্কবার্তা ছিল নবমী এবং দশমীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকে আকাশ মেঘলা থাকলেও দুপুরবেলা শুরু হয় বৃষ্টি। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হতেই মাথায় হাত পড়ে পুজো উদ্যোক্তাদের। সেই সময় ভিড় খানিকটা কমলেও, বিকেল থেকেই কলকাতার পুজোর স্বাভাবিক চিত্রই চোখে পড়েছে। উৎসব শেষের আগের বিকেলে কি জয়ী হবে বৃষ্টিরূপী অসুর? এমন প্রশ্নই কুরে কুরে খাচ্ছিল দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় পুজো বেহালা নূতন দলের কর্মকর্তাদের। তবে দিনের শেষে তাদের অন্যতম কর্মকর্তা দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে সত্যিই ভিড় অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখছি মানুষ ছাতা নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছে। তাই যতই বৃষ্টি আসুক, সন্ধ্যা বাড়তেই যে ভাবে মণ্ডপে ভিড় বাড়ছে, তাতে মানুষই বৃষ্টিকে জবাব দিয়ে দেবে বলে আমরা বিশ্বাস রাখছি।’’

তবে কলকাতা শহর লাগোয়া হাওড়ার বিভিন্ন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো প্যান্ডেল বৃষ্টির কারণে ক্ষতি হয়েছে বলেই খবর। প্যান্ডেলের বাইরের অংশের থার্মোকলের কাজ বৃষ্টির কারণে খসে পড়েছে। প্যান্ডেলের ভেতরেও বৃষ্টি জল ঢুকেছে কোথাও। আন্দুলে একটি পুজোর বিশাল আলোকসজ্জা ভেঙে পড়েছে বলে খবর। যদিও হাওড়া শহরে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই নবমীর পুজো উপভোগ করতে বাইরে বেরিয়ে পড়েছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE