Advertisement
E-Paper

সদ্যোজাতের আঙুল কাটায় অভিযুক্ত সেই নার্স গ্রেফতার

সদ্যোজাতের আঙুল কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত সেই নার্স রাখি সরকার প্রায় দু’মাস পরে গ্রেফতার হলেন। মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকার বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গত ১২ জুলাই রাত ১১টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতালে স্যালাইনের চ্যানেল কাটতে গিয়ে রাখিদেবী আট দিনের শিশুকন্যার বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ২১:১২
ছবিতে শাড়ি পরা মহিলাই সেই নার্স রাখি সরকার।— নিজস্ব চিত্র।

ছবিতে শাড়ি পরা মহিলাই সেই নার্স রাখি সরকার।— নিজস্ব চিত্র।

সদ্যোজাতের আঙুল কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত সেই নার্স রাখি সরকার প্রায় দু’মাস পরে গ্রেফতার হলেন। মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকার বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গত ১২ জুলাই রাত ১১টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতালে স্যালাইনের চ্যানেল কাটতে গিয়ে রাখিদেবী আট দিনের শিশুকন্যার বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিশুকন্যার পরিবারের তরফে ওই নার্সের বিরুদ্ধে পর দিন বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপর থেকে অভিযুক্ত নার্স রাখিদেবী গা ঢাকা দিয়েছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছিল।

যত দিন কেটেছে প্রশাসনের তরফে শিশুর পরিবারকে আর্থিক সাহায্য থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কলকাতার এসএসকেএমে শিশুটির চিকিত্সা, সর্বোপরি ওই শিশুর বাবা বাবলা মণ্ডল স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি পাওয়ার পর অভিযুক্ত নার্সের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই বলে জানিয়ে দেন। রাখিদেবীর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগও বাবলাবাবু তুলে নিতে আইনি পদক্ষেপ শুরু করেন। কিন্তু তত দিন পুলিশ বাবলা মণ্ডলদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাখিদেবীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে নথি পাঠিয়ে দেয়। এ দিন বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখন চাইলেও রাখিদেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা যাবে না। বিষয়টি এখন আদালতের আওতাধীন।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ থানা থেকে ধৃত রাখিদেবীকে বালুরঘাট আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করিয়ে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়। এজলাসে রাখিদেবীকে কাঠগড়ার বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। তাঁকে পাঁচ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযুক্ত নার্সের পক্ষের আইনজীবী বাদশা গুহ বিশ্বাস শুনানিতে পুলিশি হেফাজতের বিরোধিতা করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, পুলিশ মামলার নথিতে ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে, অভিযুক্ত নার্স স্যালাইন কাটতে গিয়ে শিশুটির বুড়ো আঙুলের একটি অংশ কেটে ফেলেন। যে কাঁচি দিয়ে কাটা হয়েছিল তার শনাক্তকরণের জন্য নার্সকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়েছে। তার জন্য যে কোনও সময়, যে কোনও দিন রাখিদেবীকে পুলিশ থানায় ডেকে নিতে পারে। সে জন্য পুলিশি হেফাজতের কোনও প্রয়োজন হয় না।

পাশাপাশি, মামলাটির ৩২৬ ধারা নিয়েও বাদশাবাবু বিচারকের কাছে আপত্তি জানান। তিনি সওয়ালে বলেন, কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে রাখিদেবী ওই শিশুটিকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত (৩২৬ ধারা) করেননি। অসাবধানতাবশত ওই ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে রাখিদেবীর অনিচ্ছাকৃত গাফিলতিতে ৩৩৮-এর মতো জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়া উচিত ছিল। তা ছাড়া মামলাটির মূল অভিযোগকারী ওই নার্সের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছেন। ফলে রাখিদেবীকে জামিন দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবী তাপসকুমার চট্টোপাধ্যায় বিরোধিতা করে বলেন, জামিন দেওয়ার জায়গায় মামলাটি নেই। তদন্তের স্বার্থে পুলিশি হেফাজতের পক্ষে সওয়াল করে সরকারি আইনজীবী বিচারককে বলেন, ধৃতের ক’দিনের পুলিশ হেফাজত দেবেন সেটা আপনার উপর নির্ভর করছে। উভয় পক্ষের সওয়াল শোনার পর বিচারক সঞ্জয় চৌধুরী নার্স রাখিদেবীকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।

পরিবার সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে রাখিদেবী জেলা জজকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। আবেদন খারিজ হয়ে গেলে এ দিনই তাঁর আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল। তার আগেই রাতে চকভৃগুর বাড়িতে ফেরার খবর পেয়ে পুলিশ হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে।

Rakhi Sarkar nurse balurghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy