ইউটিউবে ভিডিয়ো তৈরির জন্য ডেকে বছর পনেরোর পড়শি কিশোরীকে বার বার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক যুবক ও তার সতেরো বছরের ছেলের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকার এই ঘটনায় রবিবার ধৃতদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।” জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত যুবককে এ দিনই আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তার ছেলের বয়স ১৭ বছর। সে জন্য ছেলেটিকে জুভেনাইল আদালতে পেশ করা হয়। সেখান থেকে তাকে হোমে পাঠানো হয়েছে। ধৃত যুবকের দাবি, পরিকল্পনা করে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃত বাবা-ছেলে দীর্ঘদিন ধরেই ইউটিউবে ভিডিয়ো বানায়। সমাজমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় তারা। ভিডিয়োর প্রয়োজনে বিভিন্ন মেয়েদের দলে নেয় তারা। নির্যাতিতা কিশোরী নাচ শেখে। অভিযোগ, মাস কয়েক আগে নিজেদের চ্যানেলের ভিডিয়োয় কিশোরীকে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত বাবা-ছেলে। প্রথম দিকে বেশ কিছু হাস্যরসাত্মক ভিডিয়োয় কিশোরী যোগ দেয়। অভিযোগ, তার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত বাবা-ছেলে কিশোরীকে দিয়ে অশ্লীল ভিডিয়ো বানানো শুরু করে। সেই ভিডিয়ো বানানোর অছিলায় তারা কিশোরীকে ধর্ষণ করত। কিশোরী যাতে কাউকে কিছু না বলে, সে জন্য অশ্লীল ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ‘ব্ল্যাকমেল’ও করা হত। এমনকি, পরিবারের লোকজনকে বলে দেওয়ার কথা বললে অভিযুক্ত নাবালক বিয়ে করার আশ্বাসও দেয় বলে জানিয়েছে কিশোরী।
তবে, বেশ কিছু দিন ধরে এই ঘটনা চলার পরে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায় কিশোরী। গত শুক্রবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর মা। এ দিন তিনি বলেন, “প্রথম দিকে ওরা কমেডি-ভিডিয়ো বানাত। তাই কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু পরে জানতে পারি, ভয় দেখিয়ে অশ্লীল ভিডিয়ো বানানোর অছিলায় লাগাতার ধর্ষণ করছে। ওদের বলতে যাওয়ায় আমাদের গালিগালাজ করে। প্রথমে ভয়ে পুলিশকে কিছু বলিনি। কিন্তু আর পারলাম না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)